আগুনে পুড়ে স্কুল ছাত্র নাজমুলের অকাল মৃত্যু আর স্কুলে যাওয়া হলো না পরিবারে শোকের মাতম
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
আগুনে পুড়ে স্কুল ছাত্র নাজমুলের অকাল মৃত্যু আর স্কুলে যাওয়া হলো না পরিবারে শোকের মাতম
রুপগঞ্জের হাসেম ফুডস লিমিটেডের অগ্নিকাণ্ডে হতাহতদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠছে কিশোরগঞ্জের বাতাস। জীবন-জীবিকার তাগিদে কিশোরগঞ্জের সাত শ্রমিক রূপগঞ্জে কাজ করতে গিয়ে নির্মম মৃত্যুর শিকার হয়েছেন। তাদের বাড়িতে চলছে এখন শোকের মাতম।
কিশোরগঞ্জের দানাপাটুলি ইউনিয়নের পুর্বকালিয়াকান্দা গ্রামের ছেলে নাজমুল ইসলাম। দিনমজুর পরিবারের সন্তান নাজমুল পড়াশোনা করছিলো দশম শ্রেণিতে। করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় কিছু বাড়তি রুজির আশায় দুই মাস আগে বাড়ি থেকে রুপগঞ্জের কারখানায় শ্রমিকের চাকরি নেয়।
শিশু নাজমুলের ইচ্ছা ছিল করোনাকালে কিছু টাকা আয় করতে পারলে তার পরিবার ভালোভাবে খেয়ে পড়ে চলতে পারবে, চলবে পড়াশোনাও। কিন্তু নিয়তি তাকে সে সুযোগ দেয়নি। বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে তার। নাজমুলের স্বজনদের কয়েকজন এখন তার মরদেহ আনতে নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জের গিয়েছেন। বাকিরা যারা বাড়িতে রয়েছেন, তাদের কান্নায় এলাকার বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।
শোকের মাতম চলছে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার আরও চার শ্রমিকের বাড়িতে। করিমগঞ্জের তিন শ্রমিকের বাড়িতেও থামেনি কান্না। কেউ কেউ পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে একেবারে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
আগুনের লেলিহান শিখা থেকে প্রাণে বাঁচতে কিশোরগঞ্জের আরও ১৫ জন শ্রমিক তিনতলা থেকে লাফ দিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের অনেকেই জীবন নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসার লোমহর্ষক কাহিনীর বর্নণা দিয়েছেন।
নিহতের স্বজনরা বলছেন, আগুন লাগার পর কারখানার গেট তালাবদ্ধ না থাকলে হয়তো তারা বেঁচে যেতো। তারা নিহতদের মরদেহ ফিরে পেতে সরকারের সহায়তা চেয়েছেন।
এলাকার জনপ্রতিনিধিরা জানান, কারখানা মালিকের গাফিলতি ও গেট বন্ধ থাকার কারণে শ্রমিকদের করুণ মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের কঠোর বিচার ও নিহতের পরিবারদেরকে উপযুক্ত ক্ষতিপুরণের জোর দাবি জানিয়েছেন।