বাঁশখালীতে করোনা সংক্রমন প্রতিরোধ কমিটির সভায় উপেক্ষিত গ্রাম পর্যায়ের পরিস্থিতি পর্যালোচনা
এনামুল হক রাশেদী, বাঁশখালী উপজেলা প্রতিনিধি-(চট্টগ্রাম)
বাঁশখালীতে করোনা সংক্রমন প্রতিরোধ কমিটির সভায়
উপেক্ষিত গ্রাম পর্যায়ের পরিস্থিতি পর্যালোচনা
সারাদেশ ব্যাপী চলমান কঠোর লকডাউন ও কোভিড-১৯ ঊর্ধ্বগতির পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলায় ” করোনা সংক্রমন প্রতিরোধ” কমিটির এক সমন্বয় সভা অনুষ্টিত হয়েছে।
সভায় করোনার ২য় ঢেউ ভারতীয় ডেল্টা ভার্সন সংক্রমন দ্রুত সম্প্রসারনের মাধ্যমে করোনার এই উর্দ্ধগতিতে উপজেলা পর্যায়ে করোনার সার্বিক পরিস্থিতি ও প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা করা হলেও দুঃখজনকভাবে আলোচনা-পর্যালোচনায় উপেক্ষিত রয়ে গেছে উপজেলার গ্রাম পর্যায়ের ঢিলে-ঢালা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা।
০৪ জুলাই’২১ ইং সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টার সময় বাঁশখালী উপজেলা কমপ্লেক্সের উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে অনুষ্টিত সভায় সভাপতিত্ব করেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইদুজ্জামান চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) মাজহারুল ইসলাম, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শফিউর রহমান মজুমদার, উপজেলা পশু সম্পদ কর্মকর্তা সমরঞ্জন বড়ুয়া, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবুল কালাম মিয়াঁজী, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফয়সল ও বাঁশখালী থানার তদন্ত অফিসার আজিজুল ইসলাম প্রমুখঃ।
সভায় সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা পূর্বক উপজেলার সর্বসাধারনের অবগতির জন্য জানানো হয় যে, কোভিড- ১৯ সংক্রমণের শুরু হতে এ পর্যন্ত টেস্ট হয়েছে ১০,৫৬৬, পজিটিভ হয়েছেন ৪৮৭ জন, সুস্থ হয়েছেন ৪৭৬ জন। এ পর্যন্ত মৃত্যু বরণ করেছেন ১ জন। সংক্রমণের হার ৪.৬%। বর্তমানে আক্রান্ত আছেন ১১ জন, যারা হোম আইসোলেশনে থেকে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সংক্রমণের হার পৌরসভা, গন্ডামারা ও বৈলছড়ীতে তূলনামূলক বেশি।
কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগিদের চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৫ টি বিশেষায়ীত বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে যার ১১টি পুরুষ ও ৪টি মহিলা রোগির জন্য সংরক্ষিত। অক্সিজেন সিলিন্ডার ৩০ টি ও অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৬টি মজুদ আছে। কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য আরটি পিসিআর টেস্টের পাশাপাশি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এন্টিজেন টেস্টের সুবিধা আছে যার মাধ্যমে ১০ মিনিটের মধ্যে পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া যাবে বলে জানানো হয়।
সভা থেকে উপজেলার সর্বস্তরের জনসাধারনকে আইনের প্রতি অানুগত্য ও সম্মান প্রদর্শন পুর্বক সরকারের বিধি-নিষেধ মেনে চলার মাধ্যমে মহামারী কোভিড-১৯ সম্প্রসারন রোধ করে ” সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি- নিজে সুরক্ষিত থাকি অন্যকেও সুস্থ এবং সুরক্ষিত রাখি” শ্লোগানে সকলের সতর্কতাসহ আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করা হলেও কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে উপজেলার প্রধান সড়ক কেন্দ্রিক নিয়মিত প্রশাসনিক কঠোর তদারকি লক্ষ্য করা গেলেও প্রধান সড়কের দুপাশে ইউনিয়ন পর্যায়ে কোন ধরনের প্রশাসনিক তৎপরতা নেই বললেই চলে।
এমতাবস্থায় বাঁশখালী উপজেলার প্রধান সড়ক ছাড়া ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে একেবারেই স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজমান। নিয়মিত স্বাভাবিকভাবেই চলছে সিএনজি, ট্রাক, বাইক সহ সবধরনের মোটর গাড়ি। হাঁট-বাজারে নেই কোন স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দুরত্ব মেনে চলার প্রবনতা। এ ব্যাপারে প্রশাসনিক কোন তৎপরতা কঠোর লকডাউনের ৪র্থ দিনেও পরিলক্ষিত হয়নি। আজকের করোনা সংক্রমন প্রতিরোধে উপজেলা পর্যায়ের সমন্বয় সভায়ও এ নিয়ে কোন আলোচনা না হওয়ায় এলাকার সুশীল সমাজ কোভিড-১৯ সংক্রমন প্রতিরোধে শংকায় আছে।