মহামারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ১৮ মার্চ দেশে প্রথম রোগীর মৃত্যুর পর থেকে সেই তালিকা দীর্ঘই হচ্ছে দিন দিন। দেশে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৫৮২ জন মারা গেছেন।
তবে প্রতিদিন এত রোগীর মৃত্যু হলেও দেশের ৪ জেলায় এখনও কেউ এ ভাইরাসে মারা যাননি। বলতে গেলে ওই চার জেলায় করোনায় মৃত্যু শূন্যের কোঠায়।
জেলা চারটি হল- জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুড়িগ্রাম ও সাতক্ষীরা। এ জেলাগুলোতে সুস্থতার হারও অন্যান্য জেলার তুলনায় ভালো।
মৃত্যু এড়ানোর কারণ বিষয়ে জেলাগুলোর সিভিল সার্জনরা জানান, স্বাস্থ্যবিধি মানা, কঠোরভাবে লকডাউন কার্যকর করা, বাইরের জেলা থেকে আসা মানুষকে দ্রুত শনাক্ত করে কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা ও আক্রান্ত রোগীদের ভালোভাবে যত্ন নেয়া।
স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় এ সব সম্ভব হয়েছে বলেও জানান জেলাগুলোর সিভিল সার্জনরা।
জয়পুরহাট: জেলাটিতে মঙ্গলবার পর্যন্ত ২৫৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, এদের মধ্যে ১৬২ জন সুস্থ হয়েছেন। জেলাটিতে ৬৫ শতাংশ রোগী দ্রুত সুস্থ হয়েছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: জেলাটিতে মঙ্গলবার পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮৮ জন। এদের মধ্যে ৫৭ জনই সুস্থ হয়েছেন। জেলাটিতে শুরু থেকেই শতভাগ কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশন নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার সিভিল সার্জন।
কুড়িগ্রাম: এই জেলায় কঠোর লকডাউন মানা হয়েছে। তাই ফলও মিলেছে ভালো। জেলাটিতে এখন পর্যন্ত ১২৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৭৭ জন সুস্থ হয়েছেন।
সাতক্ষীরা: এই জেলায় করোনায় আক্রান্ত ১০৪ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৬ জন। তবে সুস্থতার হার কম হলেও কেউ আশঙ্কাজনক নয়। জেলাটির সিভিল সার্জন জানান, ঈদের ছুটিতে আক্রান্ত বেড়ে গেছে। কারণ হিসেবে তিনি জানান, ঈদের ছুটিতে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে মানুষ আসায় আক্রান্তের হার বেড়েছে।
প্রসঙ্গত গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। দেশে প্রথম কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হন ৮ মার্চ এবং এ রোগে আক্রান্ত প্রথম রোগীর মৃত্যু হয় ১৮ মার্চ।
এরপর থেকেই আক্রান্ত আর মৃত্যুর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। বুধবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট ১ হাজার ৫৮২ জন কোভিড রোগী মারা গেলেন।
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৪৬২ জন নতুন শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত হলেন ১ লাখ ২২ হাজার ৬৬০ জন। শনাক্তের হার ২১ দশমিক ০৭ শতাংশ। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৩১ জন এবং মোট সুস্থ ৪৯ হাজার ৬৬৬ জন।