জেলার খবর

ধামরাই শ্রীশ্রী যশোমাধব মন্দির কমিটির উদ্যোগে জাতির জনকের জম্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা ও প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত

রনজিত কুমার পাল ( বাবু) স্টাফ রিপোর্টারঃ

ধামরাই শ্রীশ্রী যশোমাধব মন্দির কমিটির উদ্যোগে জাতির জনকের জম্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা ও প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত

বাঙালির বহু বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন জাতির পিতার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর সুদূরপ্রসারী বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বিশ্বের বুকে জন্ম নিয়েছিল বাংলাদেশ নামের নতুন একটি জাতিরাষ্ট্র। সেই মহানায়কের আজ বুধবার ১০১তম জন্মদিন।

১৯২০ সালের ১৭ মার্চ তদানীন্তন ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম। তাঁর বাবা শেখ লুত্ফর রহমান এবং মাতা সায়েরা খাতুন। চার বোন, দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। তাঁর ডাক নাম ছিল খোকা।

শেখ মুজিবুর রহমান টুঙ্গিপাড়ার চিরায়ত গ্রামীণসমাজের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, আবেগ-অনুভূতি শিশুকাল থেকে গভীরভাবে প্রত্যক্ষ করেছেন। গ্রামের মাটি আর মানুষ তাঁকে প্রবলভাবে আকর্ষণ করত। শৈশব থেকে তৎকালীন সমাজজীবনে তিনি জমিদার, তালুকদার ও মহাজনদের অত্যাচার, শোষণ ও প্রজাপীড়ন দেখে চরমভাবে ব্যথিত হতেন।

গ্রামের হিন্দু, মুসলমানদের সম্মিলিত সম্প্রীতির সামাজিক আবহে তিনি দীক্ষা পান অসাম্প্রদায়িক চেতনার। কিশোর বয়সেই তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন। গোপালগঞ্জের মিশন স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে তৎকালীন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগদানের কারণে শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমবারের মতো গ্রেপ্তার হয়ে কারাবরণ করেন। এরপর থেকে শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর আজীবন সংগ্রামী জীবনের অভিযাত্রা।

তিনি সারাজীবন এ দেশের মাটি ও মানুষের অধিকার আদায় এবং কল্যাণের জন্য সংগ্রাম করেছেন। বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য জীবনের ১৪টি বছর পাকিস্তানি কারাগারের অন্ধপ্রকোষ্ঠে বন্দি থেকেছেন, দুইবার ফাঁসির মঞ্চে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন। কিন্তু আত্মমর্যাদা ও বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের প্রশ্নে কখনো মাথানত করেননি, পরাভব মানেননি।

১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয়দফা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান পেরিয়ে ’৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন। বঙ্গবন্ধুর সাহসী, দৃঢ়চেতা, আপসহীন নেতৃত্ব ও বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে অনুপ্রাণিত হয়ে জেগে ওঠে শত বছরের নির্যাতিত-নিপীড়িত পরাধীন বাঙালি জাতি। মুক্তির অদম্য স্পৃহায় উদ্বুদ্ধ করে তিনি বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার চূড়ান্ত সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ করে তোলেন।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের পর দেশজুড়ে শুরু হয় সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে ৯ মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ শহীদের আত্মদান ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বিশ্ব মানচিত্রে অভ্যুদ্বয় ঘটে স্বাধীন বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের।

ঢাকার ধামরাই ঐতিহ্যবাহী শ্রীশ্রী যশোমাধব মন্দির পরিচালনা কমিটির উদ্যোগে ১৭ই মার্চ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি স্বাধীনতার মহান স্হপতি বাঙালির অবিসংবাদিত মহান নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ১০১তম জম্ম বার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে ধামরাই কায়েতপাড়াস্হ ঐতিহাসিক শ্রীশ্রী যশোমাধব দেবের মন্দির অঙ্গনে সন্ধ্যা ৭ ঘটিকার সময় ধামরাই শ্রীশ্রী যশোমাধব মন্দির কমিটির সহ-সভাপতি শ্রী দেবেশ রায় মৌলিক মহোদয় এর সভাপতিত্ব ও যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক শ্রী নন্দ গোপাল সেন এর সঞ্চালনায় আলোচনা সভা ও প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

উক্ত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন শ্রীশ্রী যশোমাধব মন্দির কমিটির সহ-সভাপতিত্বয় শ্রী দেবেশ রায় মৌলিক, ডাঃ অজিত কুমার বসাক, শ্রী জগদীশ চন্দ্র সরকার, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বিমল চন্দ্র ঘোষ, দপ্তর সম্পাদক সাংবাদিক রনজিত কুমার পাল (বাবু), প্রচার সম্পাদক সাংবাদিক শ্রী দীপক চন্দ্র পাল সহ অন্যান্য।

আলোচনা সভায় বক্তারা জাতির জনকের বর্ণিল কর্মময় জীবন, রাজনৈতিক জীবন, ত্যাগ সহ সার্বিক বিষয়ে বিষদ বিস্তারিত আলোচনা করে শ্রদ্ধা ভালোবাসায় বিভিন্ন স্মৃতিচারণ করেন সেই সাথে তার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মানে বঙ্গবন্ধু কন্যা মানণীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন ও অগ্রগতি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে দেশ অনন্য উচ্চতায় এগিয়ে যাচ্ছে, খুব কম সময়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা মানণীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গড়ে উঠবে সেই প্রত্যাশা বক্তাদের বক্তব্যে তুলে ধরেন।
আলোচনা শেষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সকল শহীদদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনায় উপস্থিত সকলে সম্মিলিত ভাবে প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button