জেলার খবর

ধামরাইয়ে বন্যার পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে সোহাগের পদ্মাসেতুর আদলে তৈরি সেতু

রনজিত কুমার পাল (বাবু) স্টাফ রিপোর্টারঃ

ধামরাইয়ে বন্যার পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে সোহাগের পদ্মাসেতুর আদলে তৈরি সেতু

মানণীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার উদ্যোগে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে কোটি মানুষের স্বপ্নের ‘পদ্মা সেতু’ দেশবাসীর জন্য ভীষণ গর্বের এবং আনন্দের। এমন আনন্দ থেকেই ঢাকার ধামরাইয়ে এক স্কুল শিক্ষার্থী পদ্মা সেতুর নকশার আদলে বাড়ির পাশের খালি জমিতে নিজ হাতে মাটি দিয়ে গড়ে তোলে নিজের পদ্মা সেতু। যা অনেকেই দেখতে আসেন। প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন।

ধামরাইয়ে পদ্মা সেতু আদলে স্কুল ছাত্র সোহাগ বাঁশ ও মাটির তৈরি পদ্মাসেতু তৈরি করার গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে এ’পদ্মা সেতু দেখতে আসে এমনকি ধামরাইয়ের জনপ্রতিনিধিগন, সাংবাদিকবৃন্দ,বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানবৃন্দ সহ সুধী সমাজ।

সেসময় স্কুল ছাত্র তার স্বপ্নের কথা বলেন সে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে বড় ইঞ্জিনিয়ার হয়ে দেশের জন্য কাজ করতে স্বপ্ন দেখেন।কিন্তু আমার আর্থিক অবস্হার কারণে লেখা পড়া চালিয়ে যাওয়া সম্ভব না হতে পারে।তিনি আরো বলেন আমাদের দেশের মেধাবীরা এক সময় নিজেরাই বড় বড় ইঞ্জিনিয়ার হয়ে নিজেদের দেশের বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ নিজেরাই করতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সোহাগ কর্তৃক পদ্মা সেতু নির্মান ও সোহাগের স্বপ্নের কথা জানতে পেরে ঢাকা-২০ ধামরাই এর স্হানীয় সাংসদ ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেতা আলহাজ্ব বেনজীর আহমদ এমপি তার প্রতিনিধি উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য মোঃ বিল্লাল হোসেনকে সোহাগের নিকট পাঠিয়ে দিয়ে সোহাগের পরিবারের নিকট বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন যে সোহাগের লেখা পড়ার দায়িত্ব তিনি নিয়েছেন সেই সাথে সোহাগের লেখা পড়ার খরচ নির্বাহ করার দায়িত্ব নেন যা এখনো এমপি মহোদয় নিয়মিত ভাবে খরচ নির্বাহ করে চলেছেন।

কিছু দিন পূর্বে স্হানীয় সাংসদ আলহাজ্ব বেনজীর আহমদ এমপি নিজেও সোহাগের বাড়িতে গিয়ে তার পদ্মা সেতু পরিদর্শন করে সোহাগের খোঁজ খবর নিয়েছেন।

গত এক সপ্তাহের বন্যার পানি বেড়ে এই স্কুল শিক্ষার্থীর সেতুটি এখন ডুবে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। প্রায় এক বছর আগে পাঁচ মাস সময় নিয়ে গড়া সেতুটি এখন বিলীন হওয়ার পথে।

ধামরাই উপজেলার সুতিপাড়া ইউনিয়নের সুতিপাড়া গ্রামে স্কুল শিক্ষার্থী সোহাগ হোসেনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশ ও মাটির তৈরি পদ্মাসেতুটির চারপাশ পানিতে তলিয়ে গেছে। ৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতুটির মাঝখানে পানি জমে গেছে। মাটি থেকে দুই ফুট উচ্চতার সেতুটির কাছাকাছি উঠে গেছে পানি। তবে সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়ক ইতোমধ্যে তলিয়ে গেছে। সোহাগের মতে, মূল পদ্মাসেতুর এলাকা হিসেবে তার বানানো সেতুটির শরিয়তপুরের অংশ ডুবে গেছে।

শিক্ষার্থী সোহাগ হোসেন বলেন, ‘অনেক কষ্ট কইরা পাঁচ মাস ধইরা আমি সেতুটা বানাইছিলাম। সেতুটা বানাতে বাঁশ আর মাটি ব্যবহার করছি। মূলত সরকারের মুন্সীগঞ্জে বানানো পদ্মাসেতুর প্রতি ভালোবাসা থেকেই আমি এটা বানিয়েছিলাম। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে বন্যার পানি এলাকায় ঢুকছে। আমাদের বাড়ির সামনেও পানি এসে পড়েছে। আমার সেতুটার ১০ ফুটের মতো দৈর্ঘ্যের জায়গা পানিতে তলায় গেছে। পানি যদি আর একটু বাড়ে তাইলে পুরা সেতুটাই তলিয়ে যাবে। মাঝখানের স্প্যানের তিনটা পিলার যাতে খুইলা না পড়ে এই জন্য আমি ইট দিয়ে ঠেকা দিয়ে রেখেছি।’

সোহাগ আরও বলেন, ‘চোখের সামনে আমার কষ্ট কইরা বানানো পদ্মাসেতুটা ডুইবা যাইতে দেইখা খুব খারাপ লাগতেছে। পানি আটকানোর কোন উপায় নাই। এখনো প্রতিদিন মানুষজন পানি ভাইঙ্গা আমার পদ্মাসেতুটা দেখতে আইতাছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button