জেলার খবর

চিংড়ি পোনার মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি মীরে অনৈতিকতা পাইকগাছায় চাষীরা বিপাকে, প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা।

এ কে আজাদ, পাইকগাছা উপজেলা প্রতিনিধি-(খুলনা)

চিংড়ি পোনার মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি মীরে অনৈতিকতা পাইকগাছায় চাষীরা বিপাকে, প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা।

পাইকগাছায় চিংড়ি পোনার মূল্য বৃদ্ধি এবং পোনার মীর নিয়ে চলছে অনৈতিক ব্যবসা । কক্সবাজারে উৎপাদিত বাগদা চিংড়ি পোনা পাইকগাছার চিংড়ি ঘেরগুলোর চাহিদা পূরনের পাশাপাশি পাইকগাছায় আসা পোনা খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলায়ও সরবরাহ হয়ে থাকে। কক্সবাজারের হ্যাচারী গুলোতে মা বাগদার কল্যানে পোনা উৎপাদন হয়। উক্ত পোনা বিমানযোগে যশোর হয়ে পাইকগাছা আসে।পাইকগাছা বাজার এলাকায় প্রতিদিন কক্সবাজারের বাগদার পোনা বিক্রির জমজমাট ব্যবসা চলে মৌসুমের শুরু থেকে।

চলতি বছর মৌসুমের শুরুতেই কক্সবাজারের বাগদার পোনা অতিরিক্ত মূল্যের কারনে চিংড়ি ব্যবসায়ী, চাষী, ঘের ব্যাবসায়ী সহ সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য অস্বস্তির কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান চিংড়ি পোনা হাজার প্রতি আটশত হতে সাড়ে আটশত টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এখানেই শেষ কথা নয় মূল্য বৃদ্ধির সিন্ডিকেটের অসম প্রতিযোগিতার পাশাপাশি মিরে (পোনা গননা) পোনা যথাযথ সংখ্যা নির্ধারন না করে বেশি করা হচ্ছে। একাধিক পোনা ক্রেতা, চিংড়ি চাষি অভিযোগ করেছে কক্সবাজার হতে আসা পোনা ককসিট বক্সে আসে। প্রতি বক্সে দুই পলি করে পোনা থাকে। এক বা দুই পলিতে যে পরিমান পোনা গননা করে পাওয়া যাবে সেটাই মীর হিসেবে নির্ধারন করা হয়। এক্ষেত্রে কোন কোন পোনা কোম্পানি প্রতিটি পলিতে যে পরিমান পোনা আছে সে অপেক্ষা বেশি ঘোষনা দিয়ে ক্রেতা সহ চিংড়ি চাষিদের সাথে প্রতারনার পাশাপাশি আর্থিক ভাবে ক্ষতি করেছে। চিংড়ি চাষি, ঘের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ।

তথ্যানুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে মীর বৃদ্ধির অনৈতিক প্রতারনার তথ্য। কোম্পানির ঘোষনায় পলিতে ৫ হাজার পোনা থাকার কথা বলা হলেও ঘের ব্যবসায়ী এবং চিংড়ি চাষি গননা করে কোন কোন ক্ষেত্রে এবং সময়ে চার হাজার পোনা পাওয়া যায় যা কেবল আর্থিক ক্ষতি বা প্রতারনা নয় ঘেরে যথাযথ নিয়মে চাহিদা পুরণ হয় না। একদিকে আর্থিক প্রতারনা অন্যদিকে চাহিদার তুলনায় পোনার সংখ্যা কম থাকায় ক্ষতির পাশাপাশি উৎপাদনেও ঘটছে ছন্দপতন।

জানাযায়, কোন কোন কোম্পানি মীর করা কালীন সময়ে ঘর (আড়ৎ) মালিকদের উপস্থিতি থাকলেও এক্ষেত্রে উভয়ের লাভের ক্ষেত্র নিশ্চিত করতে মীরের অনৈতিকতায় একাত্মতা ঘোষনা করে আর এক্ষেত্রে কোম্পানি ও ঘর মালিক লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্থ হয় চিংড়ি চাষি ও ঘের ব্যবসায়ীরা।

অনুসন্ধানে আরও বেরিয়ে এসেছে পাইকগাছা শহরে পোনা প্রথমে ঘর মালিক তারপর এজেন্ট এভাবে একাধিক হাত বদল হয়ে মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের লাভের পর অস্বাভাবিক মুল্যদিয়ে ঘের পর্যন্ত পৌঁছায়।

বর্তমান সময়ে চিংড়ি পোনার মুল্য অতীতের যে কোন সময় অপেক্ষা অনেক বেশি। কক্সবাজারের পোনা উৎপাদনকারীরা পোনার মূল্য বৃদ্ধি করায় পাইকগাছার চিংড়ি চাষিরা রয়েছেন চরম বিপাকের মধ্যে।

বর্তমানে পোনার মূল্য হাজার প্রতি ৯শ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাজার ব্যবস্থা চিংড়ি চাষিদের নাগালের বাইরে। ৮/৯ শ হাজার পোনা ক্রয় করে চিংড়ি চাষিরা কতটুকু লাভবান হবেন তার উপর মীরের ক্ষেত্রে অনৈতিকতার ছোঁয়া। চিংড়ি পোনার মূল্য বৃদ্ধি এবং মীরের ক্ষেত্রে অস্বচ্ছতার বিষয়টি মৎস্য মন্ত্রণালয় সহ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ব্যবসায়ীরা। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমান আদালতের উপস্থিতির দাবী করেছেন চাষিরা। পাইকগাছা চিংড়ি চাষী সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া রিপন এসব বিষয় এ প্রতিনিধিকে জানান। চিংড়ির পোনা উৎপাদনকারী হ্যাচারীর মালিকরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মহামারী করোনা ভাইরাসের মধ্যেই পোনার অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি করেছে। এদিকে বড় বাগদা বিশ্ব বাজারে রপ্তানিমুখী না হওয়ায় অনেক কম মূল্যে বিক্রি করার কারনে চিংড়ি চাষীরা কোটি কোটি টাকার লোকসানের সম্মুখিন হচ্ছে। এ ব্যাপারে মৎস্য মন্ত্রনালয় সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ব্যাবসায়ীরা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button