জেলার খবর

দিন দিন বেড়েই চলছে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা

আব্দুছ ছালাম শাকিল, জেলা প্রতিনিধি-(সুনামগঞ্জ)

দিন দিন বেড়েই চলছে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা

লকডাউন বা সাটডাউন কোনো কিছুইতে দমানো যাচ্ছে না করোনা পরিস্থিতি। পরিস্থিতি যতই খারাপ হোক মাস্ক পড়ে স্বাস্থ্য বিধি মানতে রাজি নন দেশের ৪০% লোক। তারা নিজের খেয়াল খুশী কে প্রাধান্য দিয়ে স্বাস্থ্য বিধি তোয়াক্কা করছে না। অকারণে বা সামান্য কারণে বাহিরে যাচ্ছে।

কেউবা কৌতুহলবশত লকডাউন কেমন হচ্ছে সেটা নিজের মত করে পরিদর্শক করতে বাহিরে বের হচ্ছে। কিছু লোক মনে করছে লগডাউন চলছে, এই সময় তেমন কেউ বের হচ্ছে না, অতএব আমি বের হলে কোনো সমস্যা নেই। সব থেকে বড় বিপদজনক বিষয় হলো অসচেতনতার বসে যারা বাহিরে বের হচ্ছেন তাদের বেশিরভাগ মাস্ক পড়েন না।

কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কিংবা করোনা প্রতিরোধ কমিটিসহ সকলের পরামর্শ হলো মাস্ক পরলেই শুধুমাত্র করোনা থেকে প্রতিকার পেতে পারি।

আমরা অল্প কিছু দিন এই বিধি কঠোরভাবে পালন করলে করোনা নামক অভিশাপ থেকে দ্রুতই মুক্তি লাভ করতে পারতাম । করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যত দ্রুতই কমে আসবে আমরা তত দ্রুতই স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারব। কিন্তু হেয়ালি করে মাস্ক বাসায় রেখে, কিংবা মাস্ক পড়লে দম বন্ধ হয়ে আসে এই অজুহাতে অথবা সঠিকভাবে মাস্ক পরিধান না করে কানের পাসে ঝুলিয়ে রাখার ফলে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বাড়েই চলছে। প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ছাপিয়ে নতুন রেকর্ড গড়ছে। অতএব করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে লগডাউন বাড়বে।

অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো লকডাউন আমাদের স্বাভাবিক জীবন যাপন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। যে যার অবস্থান থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। চায়ের দোকান থেকে শিল্পপতি সবার কম বেশি ক্ষতি হচ্ছে। প্রসাধনী সামগ্রী, বস্ত্র ব‍্যবসায়ী ও পরিবহন সেক্টরে যারা মধ্যম আয়ের লোক তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার কোনো উপায় থাকছে না। তাদের কষ্ট সেয়ার করার মত না। তাদের কষ্টের কথা কাউকে বলতেও পারে না।

কিন্তু এই সমস্যা কারো একার নয়। বৈশ্বিক সমস্যা। এর সমাধান যেমন একা সম্ভব না, তেমনি ভুক্তভোগী কেউ একা নয়। এই অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি না মানলে বা প্রোপারলি মাস্ক না পড়লে আলটিমেটলি লগডাউন বাড়বে।

ফলে আমাদের নিজেদের যেমন ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি দেশ তথা সমগ্র মানব জাতির ক্ষতি হচ্ছে। প্রতিদিন দুইশর উপরে লোক মারা যাচ্ছে। আক্রান্ত হচ্ছে প্রায় ১২০০০ লোক। আজ হয়ত আপনার নিজের কেউ আক্রান্ত হচ্ছে না বা মারা যাচ্ছে না। কাল যে আপনি বা আপনার নিজের কেউ আক্রান্ত হবে না বা মারা যাবে না এমন নিশ্চয়তা কি আপনি দিতে পারবেন? কার কখন ডাক আসে কেউ বলতে পারে না। এই করোনা কালীণ দুর্যোগের সময় জীবন মৃত্যুর মাঝে পার্থক্য খুবই সীমিত।

আজ ভালো আছেন কাল হয়ত থমকে যেতে পারে আপনার জীবন চাকা। পাশে থাকা সব থেকে প্রিয় আপনজন নিজেদের নিরাপত্তার জন‍্য কাছে ও আসবেনা। সেবা যত্ন করে সুস্থ করে তুলার জন্য কেউ আপনার পাশে থাকবে না। জীবনের শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে মানুষ করেছেন যে প্রাণপ্রিয় সন্তানকে, তাকে শেষ যাত্রায় একবার দেখতেও পারে না।

শেষ যাত্রা কালে শেষ বারের মত দেখতে স্বজনেরা কেউ আসবে না। আপনার লাস টা হয়ত সঠিকভাবে গোসল পাবে না। কবরে আলত করে ধরে উত্তর দিকে শুইয়ে লাসের মুখ খানা পশ্চিম দিকে করে দেওয়ার মত কেও কবরে নামবে না। শেষ বিদায় বেলায় নিজের আত্মীয়স্বজনের দেয়া এক মুঠো মাটি পাওয়া যাবে না। অনেক অভিমান অনেক অভিযোগ নিয়ে চির বিদায় নিতে হবে এই সবুজ শ‍্যামল সুন্দর ধরনীর বুক থেকে।

তাই আসুন দল, মত, প্রশাসন, রাজনীতিবিদ, বিত্তবান কিংবা নিন্মবিত্ত সবাই সচেতন হই। মাস্ক পড়ি। টিকা গ্রহণ করি। জরুরি প্রয়োজন ব‍‍্যাতিত ঘরের বাহিরে না যাই। লকডাউন কে সফল করি

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button