জেলার খবর

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব:বাঁশখালীর উপকূলীয় এলাকার বেড়িবাঁধ উপছে প্লাবিত বিস্তির্ন অঞ্চল

এনামুল হক রাশেদী, বাঁশখালী উপজেলা প্রতিনিধি-(চট্টগ্রাম)

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব:বাঁশখালীর উপকূলীয় এলাকার বেড়িবাঁধ উপছে প্লাবিত বিস্তির্ন অঞ্চল

ঘূর্ণিঝড় “ইয়াস”র প্রভাবে চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার উপকূলীয় এলাকার অরক্ষিত ও ক্ষত বিক্ষত বেড়িবাঁধ উপছে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে সাগরের লোনা পানি।

এতে উপকূলীয় এলাকার অনেক ঘর বাড়ি ইতিমধ্যে প্লাবিত হয়ে পড়েছে এবং মারাত্বক শংকা দিয়েছে আঁউশ আবাদে। ২৬ মে’২১ ইং বুধবার দুপুর ২ টার সময় এ প্রতিবেদন তৈরী করাকালীন বাঁশখালীর গন্ডামারা, খানখানাবাদ, বাহারছডা, সরল, শীলকূপ, শেখেরখীল, ছনুয়াসহ বঙ্গোপসাগর উপকূলীয় প্রায় এলাকায় স্বাভাবিক জোয়ারের ছেয়ে ৪/৫ ফুট অতিরিক্ত পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জোয়ারের সময় গন্ডামারা ইউনিয়নের খাটখালী, পশ্চিম বড়ঘোনা, পুর্ব বড়ঘোনা ৯ নং ওয়ার্ড অংশে, খানখানাবাদ, বাহারছডা, সরল, শীলকূপ, শেখেরখীল, ছনুয়া এলাকা বেড়িবাঁধ উপছে সাগরের নোনা জল বেড়িবাঁধের ভিতরে গড়িয়ে পড়ে চাষাবাদের বিস্তির্ন এলাকা প্লাবিত হতে দেখা যায়।

শেখেরখীলের সরকার বাজার এলাকা এবং বাংলাবাজারের ডেপুটিঘোনা এলাকায় বেড়িবাঁধ উপছে সাগরের লোনাজল এলাকার মানুষের বসতঘরে ঢুকে পড়ে। আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাষ অনুযায়ী “ঘূর্নিঝড় “ইয়াস” বর্মানে বাংলাদেশ সীমানা থেকে ৩৫০ কি:মি: দূরে অবস্থান করাকালীন সাগরের এ রূদ্রমূর্তি ধারন করলে রাতের জোয়ারে সাগরের পানির উচ্ছতা আরো বৃদ্ধি পেয়ে আরো নতুন নতুন অঞ্চল প্লাবিত হওয়ার শংকা রয়েছে। ঘুর্নিঝড় ইয়াস বাংলাদেশের স্থলভুমি অতিক্রম করার সম্ভাবনা না থাকলেও ভারতের উড়িশায় প্রায় ৩/৪ ঘন্টা ধরে যে ভয়ংকর তান্ডব চালিয়ে লন্ডভন্ড করে দিচ্ছে বেশ কয়েকটি জেলা।

এর নেতিবাচক প্রভাবে সাগরে প্রায় ৫/৬ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়ে জলোচ্ছাষে পরিনত হওয়ায় বাঁশখালীর উপকূলীয় বিস্তির্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি ছনুয়া, গন্ডামারা পুর্ব বড়ঘোনা, শেখেরখীলের গুইল্লাখালী, ফাঁড়ির মুখ ও সরকার বাজার এরাকায় ও সরলে বেড়িবাঁধের কয়েকেটি অংশে ফাটল সৃষ্টিহয়েছে বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শী অনেকে।
গন্ডামারা ইউপি চেয়ারম্যান লেয়াকত আলী সকাল থেকে ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করে জানান, ইয়াসের প্রভাবে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গন্ডামারা ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের অনেকাংশ দিয়ে সাগরের লোনা পানি ঢুকে চাষাবাদের জমি প্লাবিত হয়েছে। প্লাবিত পানিতে প্রায় ২ শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে বলে ধারনা করছেন তিনি।

ঘূর্নিঝড় ইয়াসের ক্ষয়-ক্ষতি থেকে জান-মাল রক্ষার্থে বাঁশখালী প্রায় সকল সাইক্লোন শেল্টারগুলো খুলে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহি অফিসার (ইউএনও) সাইদুজ্জামান চৌধুরী। ইউএনও আরো জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রবণতা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বাঁশখালী উপজেলা প্রশাসন। অন্যদিকে উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণ করার জন্য সিপিপি ও কারিতাসের দুরযোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিরি বিশেষভাবে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। নিত। কিছু কিছু এলাকায় টেকশই বেড়িবাঁধ না হওয়াতে প্লাবিত হওয়ার আশংকাও রয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশখালীর খানখানাবাদ উপকূলে ইয়াসের প্রভাবে বেড়িবাঁধ উপছে প্রবাহিত হচ্ছে লোনা পানি। আতংকে আছে এলাকাবাসী। সেই সাথে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ও স্থানীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে স্ব স্ব স্থানে মাইকিং করা হচ্ছে। বিশেষ করে সাগর উপকূলীয় এলাকার লোকজন কে সরিয়ে নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহি অফিসার।

আবহাওয়ার পুর্বাভাষ অনুযায়ী রাতে জোয়ারের পানি আরো বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঘুর্নিঝড় ইয়াসের প্রভাব থেমে যাওয়ার পর বাঁশখালী উপজেলার ক্ষয়-ক্ষতির সঠিক পরিসংখ্যন নির্নয় করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহি অফিসার সাইদুজ্জামান চৌধুরী।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button