কৃষি

সুনামগঞ্জ জেলায় অর্থ বছরে বোরো ধান চাষ ও কর্তনের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন

আব্দুছ ছালাম শাকিল, জেলা প্রতিনিধি-(সুনামগঞ্জ)

সুনামগঞ্জ জেলায় অর্থ বছরে বোরো ধান চাষ ও কর্তনের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন

সুনামগঞ্জ জেলায় ২০২০-২১ অর্থ বছরে বোরো চাষ হয়েছে ২২৩৩৩০ হেক্টর জমিতে এর মধ্যে হাওড় এলাকায় চাষকৃত জমির পরিমান ১৬৫৬৬৫ ও নন হাওরে ৫৭৬৬৫ হেক্টর। ইতোমধ্যে (০৩/০৫/২১ পর্যন্ত) হাওরের ৯৮% সহ মোট ৮৭% জমির বোরো কর্তন সম্পন্ন হয়েছে। এ বছর বোরো আবাদের প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২১৯৩০০ হেক্টর।

অনুকূল আবহাওয়া, ধানের নায্য মূল্য নিশ্চিত হওয়া, বর্তমান সরকারের সুনির্দিষ্ট সময়োচিত পদক্ষেপ; যেমন বোরো মৌসুমের প্রারম্ভেই সুনামগঞ্জ জেলার ৭ হাজার কৃষককে বোরো প্রনোদনা প্রদান, ৩৫ হাজার কৃষককে ২ কেজি করে হাইব্রিড বীজ সহায়তা প্রদানসহ স্থানীয়ভাবে গৃহীত অন্যান্য কিছু পদক্ষেপের কারনে ৪০৩০ হেক্টর জমিতে অতিরিক্ত বোরো চাষ সম্পন্ন হয়।

সরকারি প্রনোদনা ও হাইব্রিড বীজ সহায়তা কর্মসূচীর কারনে একদিকে যেমন বোরো আবাদী জমির পরিমাণ বৃদ্ধি পায় অন্যদিকে হাইব্রিড ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। গতবছর যেখানে হাইব্রিড আবাদী জমির পরিমান ছিল ৩৬৫১০ হেক্টর সেখানে এ বছর চাষ হয়েছে ৫৭২১০ হেক্টর। ৪০৩০ হেক্টর আবাদী জমি বৃদ্ধি সহ প্রায় ২০,০০০ হেক্টর জমিতে অতিরিক্ত হাইব্রিড আবাদের কারনে গত বছর চালের উৎপাদন যেখানে ছিল ৮৬৩৯৯৩ মে. টন সেখানে এবার উৎপাদন হবে প্রায় ৯ লক্ষ মে.টন অর্থাৎ উৎপাদন বৃদ্ধি হার ৫.৪২%।

বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারনে সারা বিশ্বে খাদ্য উৎপাদন যেখানে নিম্নগামী সেখানে সুনামগঞ্জ জেলার খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির হার ঈর্ষনীয়। মার্চের শেষ দিকে করোনার প্রদুর্ভাব বদ্ধির কারনে শ্রমিক সংকটের কারণে কৃষকের আবাদকৃত বোরো ধান তাঁদের গোলায় উঠবে কিনা এ বিষয়ে সন্দেহ যথেষ্টই ছিল। কৃষকরা যাতে তাদের আবাদকৃত বোরো ধান সঠিক সময়ে ঘরে উঠাতে সক্ষম হয় তার জন্য এর করণীয় ঠিক করতে সুযোগ্য জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে কয়েক দফা সভা করা হয়। এছাড়াও উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে নিবিড় যোগাযোগ রাখা হয়।আর এর ফলশ্রুতিতে সুনামগঞ্জ জেলায় এ বছর ৭০% ভর্তুকিতে কৃষকদের মাঝে ১১৫টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার, ১৯টি রিপার বিতরণ করা হয়।

শ্রমিকের পাশাপাশি বিগত বছরগুলিতে বিদ্যমান, নতুন ও ভাড়া করা সহ প্রায় ৩০০টির অধিক কম্বাইন্ড হারভেস্টারসহ শতাধিক রিপার মেশিন ধান কর্তন কাজে অংশগ্রহণ করেছে। ধান কর্তনের সময় যাতে কোন পাকা ধান জমিতে পড়ে না থাকে তার জন্য জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে একটি টিম নিরলসভাবে কাজ করেছে। সর্বোপরি এবারের আবহাওয়া,সকলের সুচিন্তিত মতামত, সঠিক পরিকল্পনা, বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকারের সার্বিক সহোযোগিতায় পরিকল্পনামাফিক কৃষক তার ফসল বোরোধান ঘরে তুলতে সক্ষম হচ্ছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button