জেলার খবর

ধামরাই পৌরসভায় বর্ণিল আয়োজনে জাতির জনকের জম্মশত বার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত

রনজিত কুমার পাল (বাবু) স্টাফ রিপোর্টারঃ

ধামরাই পৌরসভায় বর্ণিল আয়োজনে জাতির জনকের জম্মশত বার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত

“শুভ শুভ শুভ দিন বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন আজকে মোদের খুশির দিন জাতির পিতার জন্মদিন” উপরোক্ত বিষয়কে প্রতিপাদ্য করে ঢাকার ধামরাই পৌরসভার আয়োজনে ১৭ই মার্চ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি স্বাধীনতার মহান স্হপতি বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ১০১তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে ধামরাই পৌরসভায় স্হাপিত ম্যুরাল প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করে ও জাতির জনকের ১০১তম জম্মদিন উপলক্ষে ১০১ পাউন্ড এর বর্ণিল কেক দিয়ে,কেক কেটে এবং শিশু কিশোরদের চিত্রা়ঙ্কন প্রতিযোগিতার শুভ উদ্বোধন করেন জম্মশত বার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২১২১ খ্রীস্টাব্দ এর আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ঢাকা-২০ ধামরাই আসনের মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য,ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ও বায়রা’র সভাপতি জননেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব বেনজীর আহমদ এমপি।

উক্ত অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ধামরাই পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও দ্বিতীয়বার বিপুল ভোটে নির্বাচিত সফল মেয়র জননেতা করোনা যোদ্ধা আলহাজ্ব গোলাম কবির মোল্লা।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ধামরাই পৌরসভার কাউন্সিলরবৃন্দ,ধামরাই উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মোঃ সিরাজ উদ্দিন সিরাজ, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য শফিক আনোয়ার গুলশান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোঃ মাসুম খান, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ সহ ধামরাই পৌরসভার কর্মকর্তা, কর্মচারীবৃন্দ ও সুধীজন।

এ’সময় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্হানীয় সাংসদ আলহাজ্ব বেনজীর আহমদ এমপি বলেন- ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ তদানীন্তন ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম। তাঁর বাবা শেখ লুত্ফর রহমান এবং মাতা সায়েরা খাতুন। চার বোন, দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। তাঁর ডাক নাম ছিল খোকা।

শেখ মুজিবুর রহমান টুঙ্গিপাড়ার চিরায়ত গ্রামীণসমাজের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, আবেগ-অনুভূতি শিশুকাল থেকে গভীরভাবে প্রত্যক্ষ করেছেন। গ্রামের মাটি আর মানুষ তাঁকে প্রবলভাবে আকর্ষণ করত। শৈশব থেকে তৎকালীন সমাজজীবনে তিনি জমিদার, তালুকদার ও মহাজনদের অত্যাচার, শোষণ ও প্রজাপীড়ন দেখে চরমভাবে ব্যথিত হতেন। গ্রামের হিন্দু, মুসলমানদের সম্মিলিত সম্প্রীতির সামাজিক আবহে তিনি দীক্ষা পান অসাম্প্রদায়িক চেতনার। কিশোর বয়সেই তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন।

গোপালগঞ্জের মিশন স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে তৎকালীন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগদানের কারণে শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমবারের মতো গ্রেপ্তার হয়ে কারাবরণ করেন। এরপর থেকে শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর আজীবন সংগ্রামী জীবনের অভিযাত্রা। তিনি সারাজীবন এ দেশের মাটি ও মানুষের অধিকার আদায় এবং কল্যাণের জন্য সংগ্রাম করেছেন। বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য জীবনের ১৪টি বছর পাকিস্তানি কারাগারের অন্ধপ্রকোষ্ঠে বন্দি থেকেছেন, দুইবার ফাঁসির মঞ্চে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন। কিন্তু আত্মমর্যাদা ও বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের প্রশ্নে কখনো মাথানত করেননি, পরাভব মানেননি।

১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয়দফা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান পেরিয়ে ’৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন। বঙ্গবন্ধুর সাহসী, দৃঢ়চেতা, আপসহীন নেতৃত্ব ও বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে অনুপ্রাণিত হয়ে জেগে ওঠে শত বছরের নির্যাতিত-নিপীড়িত পরাধীন বাঙালি জাতি। মুক্তির অদম্য স্পৃহায় উদ্বুদ্ধ করে তিনি বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার চূড়ান্ত সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ করে তোলেন।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের পর দেশজুড়ে শুরু হয় সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে ৯ মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ শহীদের আত্মদান ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বিশ্ব মানচিত্রে অভ্যুদ্বয় ঘটে স্বাধীন বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাত্রিতে বিশ্বাসঘাতকদের নির্মম বুলেটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন। পরবর্তী সময়ে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী বঙ্গবন্ধুর খুনি স্বৈরশাসক এ দেশে পাকিস্তানি ভাবধারার বিকৃত ইতিহাস ও মূল্য বোধের বিস্তার ঘটানোর পাঁয়তারা চালায়। কিন্তু সে চেষ্টা সফল হয়নি। বঙ্গবন্ধুর দল আওয়ামী লীগ বর্তমানে টানা তিন মেয়াদে রাষ্ট্রক্ষমতায়।জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মানে বঙ্গবন্ধু কন্যা মানণীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়ন ও অগ্রগতি পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। খুব দ্রুতই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে উঠবে।

সমগ্র বাংলাদেশের জেলা, উপজেলা, ইউনিয়নে সরকারি -বেসরকারি প্রতিষ্ঠান স্কুল,কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল, ক্লিনিক, সামাজিক সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান নানা আয়োজনে জাতির জনক বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জম্ম বার্ষিকী উদযাপন করছে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতায়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button