সাদমান সাকি ৩ বছরেও উদ্ধার হয়নি র্যাবের উদ্ধারে আশ্বাস নারা।
মোঃ আজাহার সরকার, জেলা প্রতিনিধি-(গাজীপুর)
সাদমান সাকি ৩ বছরেও উদ্ধার হয়নি র্যাবের উদ্ধারে আশ্বাস নারা।
র্যাবের দিকে তাকিয়ে সাদমান সাকির পরিবার তথা নারায়ণগঞ্জবাসী। অবুঝ শিশু সৈয়দ সাদমান সাকি পৃথিবীর কোনো কিছু তার জানাশুনা নেই।
সবে মাএ কোনো রকম মা বাবা ডাকতে শিখছিল। এরই মধ্যে নিখোজ হয়ে যায় সে প্রায় তিন বছরের বেশি সময় ধরে নিখোঁজ রয়েছে সাদমান সাকি। আজও তার খোঁজ মেলেনি। জানা নেই কবে তার খোঁজ মিলবে কবে তাকে উদ্ধার করা হবে।
সন্তানের খোঁজে মানববন্ধন,অনশন সহ একের পর এক বিভিন্ন কর্মসূচি করে যাচ্ছে সাকির পরিবার। ধর্ণা দিচ্ছেন প্রশাসনিক বিভিন্ন দপ্তরে দপ্তরে। তার পরেও তাকে উদ্ধার করা হচ্ছেনা। সাদমান সাকি’র দাদা যুদ্ধকালীন কমান্ডার ও নারায়ণগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ২৪ বছর বিরতিহীনভাবে সাবেক জেলা কমান্ডার, নারায়ণগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান কমান্ডার মহিউদ্দিন আহাম্মেদ দলাল এর নাতি।
সাদমান সাকি’র বাবা নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগে সাবেক সহসভাপতি সৈয়দ ওমর খালেদ এপন বলেন, আমাদের অনেক আদরের সন্তান সাদমান সাকি আমি মানুষের সেবার জন্য দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছি আমার জানামতে আমি কারো ক্ষতি করিনিই।
তারপরও যদি ক্ষতি করে থাকি,তাহলে সে শাস্তি আমাকে দেয়া হোক। কিন্তু আমার এই অবুঝ শিশুর কি অপরাধ? শিশু জন্য তার মা সারাক্ষণ কান্নাকাটি করে থাকে। ঠিকমতো খাবার দাবার করে না। জানি না আমার ছেলেটি কি অবস্থায় কোথায় আছে। তবে আমি বিশ্বাস করি একদিন আমার ছেলের খোঁজ অবশ্যই পাবো।
তিনি আরো বলেন পুলিশ ইচ্ছে করলে পারেনা এমন কোন কাজ নেই কিন্তু আমার ছেলে উদ্ধার ক্ষেএে সদর থানা পুলিশ ব্যরথ হয়েছে। সন্তানের নিখোঁজ হওয়ার সাথে সাথে নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় ডায়েররি করতে গেলে তারা ২৪ ঘন্টার নিচে ডায়েরি করা যাবেনা। অনেক কাকুতি মিনতি করার পরও তারা ডায়েরি নেয়নি। অনেকক্ষন পরে সদর থানার ওসি রাত ৯ টা বাজে ডায়েরি নেয়ার নির্দেশ দেন। তখন তারা সাদমান সাকিকে খুঁজছে বলে আমাদেরকে কিছুদিন বিভ্রান্ত করে। এর পর গত ১৩ ডিসেম্বর সদর থানায় মামলা নেয়। যার মামলা নং ৩২।
কিছুদিন তদন্ত করার পর সন্দেহজনকভাবে জিল্লু রহমান, আবদুর রহমান তপন ও অররা নামে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের গ্রেফতারের পরপরই পুলিশ রহস্যজনক অাচরন শুরু হয় এবং আসমীদের আদালতে প্রেরন করা হয়। অথচ গ্রেফতারের সময় পুলিশ আমাদের আশ্বাস দিয়েছিল আসামীদের কাছে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে আসামীরা জামিনে বের হয়ে আসে।
আমরা সাদমান সাকির উদ্ধারের দাবীতে এলাকাবাসী ও বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে মানববন্ধন সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছি। কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর পুলিশ সুপারের কাছে গেলে তিনি আমাদের আশ্বাস দেন। এরই মধ্যে সদর থানা পুলিশ বলে আমাদের ৭ দিন সময় দেন আমরা একটি লিঙ্ক পেয়েছি কিন্তু ৭ দিন অতিবাহিত না হতেই শুনি ওই মামলাটি পি,বি,আই য়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তারপর পি,বি,আই য়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা আশরাফ আলম কয়েকদিন আমার বাড়িতে আসেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
দায়িত্ব নেওয়ার ২০ দিন পর পি,বি,আই য়ের ওসি জহির ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আমাকে তাদের অফিসে ডেকে নেয়। আমি তাদের অফিসে যাওয়া পর বলে, এই ঘটনার সাথে শক্তিশালী ও প্রভাবশালী লোক জড়িত আছে।এসপি সাহেব এর নির্দেশনা পেলে তাদেরকে ধরে নিয়ে আসবো পরবর্তীতে ৫-৬ দিন পর পি, বি,আই য়ের অফিস গেলে তাদের আচার-আচরণ রহস্যজনক মনে হয় এবং বিভিন্ন কথা বলে আমাদেরকে বিভ্রান্ত করে এর ২ মাস পর আমাদের না জানিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে।
তাই আমরা ব্যথা হয়ে আদালতে নারাজি দিলে নারী শিশু আদালত সি,আই,ডি তদন্তে দায়িত্ব দেয় তারা দায়িত্ব নেওয়ায় পর থেকে প্রায় প্রতিদিন তাদের সাথে যোগাযোগ করতে থাকি তারা তদন্ত না করে আমাকে ঘুরাতে থাকে এবং বিভিন্ন কথা বলে সময় নষ্ট করে।
কোন তথ্যই আমলে নেয়না,আমি কোন রাস্তা না দেখে নারায়ণগঞ্জ জেলা এসপি হারুন সাহেবের কাছে সন্দেহ ভাজন ৬ জনের তালিকা সহ চিঠি দেই তদন্ত করার জন্য জোরদাবি জানাই এবং এসপি হারুন, সি,আই,ডি তদন্ত কর্মকতা এ,এসপি সারোয়ার জাহানকে ডেকে নিয়ে সাদমান সাকি কে উদ্ধার করার জন্য নির্দেশ করেন কিন্তু কিছুদিন পর এস, পি হারুন নারায়ণগঞ্জ থেকে বদলি হয়ে গেলে ১৫ দিন পর অদৃশ্য কালোছায়ার ইশারায় আমাকে না জানিয়ে আদালতে ফাইনাল রিপোর্ট দিয়ে দেয়।
আমিও আদালতে নারাজি দিলে নারী শিশু আদালত ১ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে RAB কে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলার কাগজ র্যাব হেডকোয়ার্টার থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ নারায়ণগঞ্জ র্যাব ১১ আসে আমরা আশাবাদী অদৃশ্য কালোছায়ার ইশারায় কে উপেক্ষা করে যদি তারা তদন্ত করে তাহলে সাদমান সাকিকে উদ্ধার করা সময়ের ব্যাপার। তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এ,এসপি –সুমিনুর কে।
প্রসঙ্গ, ২০১৭ সালের ১ ডিসেম্বর শুক্রবার দুপুর দেড়টায় ঘরের বাইরে খেলা করার সময় বাড়ির ভিতর থেকে দেওভোগ কাঠের দোতলা বড় জামে মসজিদ এলাকা থেকে দেড় বছর বয়সে তিন বছর পূর্বে শিশু সৈয়দ সাদমান সাকি নিখোঁজ হয়। সাদমান সাকির খোঁজে নগরীতে সর্বস্তরে জনগনের ব্যানারে একাধিকবার মানববন্ধন ও অনশন কর্মসূচি পালিত হয়।