আরো...

হিন্দু বিবাহিত রমণীগণ শাঁখা,সিঁদুর ও লোহা পরে কেন?

রনজিত কুমার পাল (বাবু) স্টাফ রিপোর্টার-ঃ

হিন্দু বিবাহিত রমণীগণ শাঁখা,সিঁদুর ও লোহা পরে কেন?

সনাতনধর্মী বিবাহিতা (হিন্দু) রমনীগণ বিয়ের থেকে শুরু করে নিয়মিত শাঁখা, সিঁদুর ও লোহার তৈরি আয়েসত্রি ব্যবহার করার কারণ সমূহ –
শাঁখা,সিঁদুর ও লোহা ব্যবহারের তিনটি কারন–আধ্যাতিক,সামাজিক ও বৈজ্ঞানিক।

আধ্যাতিক কারনঃসত্ত্ব,রজঃ,তম তিনটি গুনের প্রতিক এ তিনটি জিনিস।সত্ত্বগুন সম্পন্ন শাঁখা সাদা বর্ণের,রজঃগুন সম্পন্ন সিঁদুর লাল বর্ণের,এবং তমগুণ সম্পন্ন লোহা কালো বর্ণের প্রতীক।সংসারী লোকেরা এই তিনটি গুনের অধীন হয়েই সংসার ধর্ম পালন করে থাকেন। স্ত্রীলোক বিবাহের পর স্বামী সেবা করে পরমার্থ লাভের সাধনা করেন সত্ত্বগুণের প্রভাবে,সংসার ধর্ম পালন করে রজঃগুনের প্রভাবে,এবং তমগুণ প্রতিহত করেন সত্ত্ব ও রজের যৌথ শক্তিতে।

সামাজিক কারনঃসিঁথিতে সিঁদুর ও হাতে পরিহিত শাঁখা ও লোহা প্রথম দৃষ্টিতে জানিয়ে দেয় যে,এই রমণী একজন পুরুষের অভিভাবকত্বে আছেন। সে কারনেই অন্য পুরুষের লোভাতুর লোলুপ দৃষ্টি প্রতিহত হয়। এছাড়া শাঁখা দীর্ঘ জীবন,সিঁথির সিঁদুর স্বামীর মঙ্গল চিহ্নসরূপ বিবেচিত হয়ে থাকে। বিবাহের স্বামীই প্রথম সিঁদুর পরিয়ে দেন স্ত্রীর কপালে ওসিঁথীতে।

বৈজ্ঞানিক কারনঃহিন্দু ধর্মের প্রথম কথা হলো”শরীরমাদ্যং খলু ধর্ম সাধনম”অর্থাৎ শরীর রক্ষা করে ধর্ম সাধনা। সে কারনেই আর্য ঋষিগণ সনাতন ধর্মের প্রতিটি আচার-অনুষ্ঠানের মধ্যেই বৈজ্ঞানিক প্রয়োজনীয়তাকেই প্রাধান্য দিয়ে আচার-অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করেছেন।

মেয়েদের মাসিক রজঃস্রাব একটি স্বাভাবিক ঘটনা।প্রতিমাসে এই চক্র চলতে থাকে। এর ব্যতিক্রম হলে আমরা অসুখ বলে ধরে নেই। এ চক্র মোটামোটি ৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত চলতে থাকে। বিবাহের পর সন্তান ধারন এবং প্রসবকালীন সময়ে অতিরিক্ত রক্ত শরীর থেকে বের হয়ে আসে। এর পূরনের জন্য আমরা কোন ব্যবস্থা নেই না।

আর্য ঋষিগণ এই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ জনিত ক্ষয়কে পূরণ করার জন্য রক্তের প্রয়োজনীয় উপাদান শরীরের মধ্য যাতে সর্বদা গ্রহণ করতে পারে তার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। শাঁখায় ক্যালসিয়াম,সিঁদুরে মার্কারী বা পারদ, এবং লোহায় আয়রন আছে। অর্থাৎ আমাদের রক্তের তিনটি উপাদান –ক্যালসিয়াম,মার্কারী ও আয়রন এর অভাব অনুভুত না হয় তার জন্যই এই ব্যবস্থা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button