জেলার খবর

রাজশাহীতে আন্দোলনকারীদের উপর হাম’লা ও ছাত্রীকে ধর্ষ’ণের পর হ’ত্যার অভিযোগে, তিন ছাত্রলীগ কর্মীকে আ’টক

রাজশাহী প্রতিনিধি:

রাজশাহীতে আন্দোলনকারীদের উপর হাম’লা ও ছাত্রীকে ধর্ষ’ণের পর হ’ত্যার অভিযোগে, তিন ছাত্রলীগ কর্মীকে আ’টক

শনিবার দুপুরে ও বিকালে ওই দুই তরুণকে আটক করেন শিক্ষার্থীরা। এদের নাম মো. সনি ও মো. কটা। দুজনের বাড়িই পঞ্চবটি এলাকায়। তাদের বয়স আনুমানিক ২৫-৩০ বছর। সনি দিনমজুরের কাজ করেন। কটা ভ্যানচালক। তারা ছাত্রলীগের কর্মী দাবি করছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, এই ছাত্রলীগের কর্মীরা ৫ আগস্ট শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছিল। আটক দুজন ধর্ষ.ণ ও হ.ত্যার কথা তাদের কাছে স্বীকার করেছেন। এছাড়াও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাসুদ নামে আরেক ছাত্রলীগ কর্মীকে আটক খরা হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্বার জানান, ৫ আগস্ট থেকেই তারা শুনছিলেন যে সেদিন দুপুরে এক ছাত্রীকে মিছিল থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষ’ণ করা হয়েছে। ধর্ষণের পর বুক চিরে লা’শ পদ্মা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনভাবেই তারা নিশ্চিত হতে পারছিলেন না। দুপুরে তারা খবর পান, রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় শিক্ষার্থীদের হাতে একজন আটক হয়েছেন যিনি ৫ আগস্টের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত।

তারা রেল স্টেশনে গিয়ে সনিকে পান। তখন সনি ধর্ষ’ণ ও হ’ত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন। এরপর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কটাকে খুঁজতে থাকেন তারা। বিকাল ৫টার দিকে নগরের আলুপট্টি পদ্মার পাড় এলাকায় অভিযুক্ত কটাকে খুঁজে পাওয়া যায়। শিক্ষার্থীরা তাকে ধরতে গেলেই তিনি পালানোর চেষ্টা করেন। এরপর শিক্ষার্থীরা নদীতে সাঁতরে তাকে ধরে ফেলেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন তাকে গণপি’টুনি দিতে শুরু করেন।

সেখানে তাকে উদ্ধার করে সন্ধ্যায় বোয়ালিয়া থানায় নিয়ে আসা হয়। সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার দাবি করেন, সনি ও কটা দুজনেই তাদের কাছে ধর্ষ’ণ ও হ’ত্যার পর বুক চিরে দিয়ে লা’শ পানিতে ভাসানোর কথা স্বীকার করেছেন।

ভুক্তভোগী ছাত্রী কে তা জানেন না জানিয়ে সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, হয়তো অভিভাবক লজ্জায় এমন ঘটনা প্রকাশ করেননি। এ জন্য থানায় কোন জিডিও হয়নি। মেয়েটির পরিচয় পাওয়া যায়নি। রাত ৮টায় থানায় গিয়ে দেখা গেছে, আহত অবস্থায় সনি ও কটাকে একটি বেঞ্চে বসিয়ে রাখা হয়েছে।

এ সময় পুলিশ আহত দুজনকে হাসপাতালে নিতে চাইলে শিক্ষার্থীরা বাঁধা দেন। তারা বলেন, ধর্ষকের কোন চিকিৎসা করতে দেওয়া হবে না। একপর্যায়ে সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার শিক্ষার্থীদের বোঝালে তারা চিকিৎসা দেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হন। থানায় থাকা অনেক শিক্ষার্থীর সঙ্গেই এই প্রতিবেদক কথা বলেন। কিন্তু কেউই ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেননি।

তারা নিজেরাও ওই ছাত্রীকে চেনেন না বলে জানিয়েছেন। থানায় এসেছিলেন মহানগর যুবদলের সদস্য তানভীর আহমেদ সুইট। তিনি দাবি করেন, একজন নয়; পঞ্চবটি শশ্মানঘাটে দুই ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষ’ণের পর পেট কেটে লা’শ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তিনিও কারও পরিচয় জানেন না। নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাসুদ পারভেজ বলেন, ৫ আগস্ট এমন কোন ঘটনা এলাকায় ঘটেছে কি না তা তিনি জানেন না।

এ ব্যাপারে কোন অভিভাবকও কিছু জানাননি। ওসি জানান, আটক দুজন আহত, তাই তাদের হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসেননি। অভিযোগ না এলে কী করবেন, এমন প্রশ্নে ওসি বলেন, যারা ধরে এনেছেন, তাদের কাছ থেকে শুনব। কেউ অভিযোগ করেন কী না দেখব। তারা কোন অভিযোগ না করলে দেখব তাদের নামে অন্য কোন অভিযোগ আছে কী না। সে মোতাবেক আইনি ব্যবস্থা নেব।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button