আরো...

দশহরা গঙ্গাপূজা দশবিধ ফল দিয়ে দেবি গঙ্গার পূজা বিধি

বিজয় চন্দ্র সরকারঃ

দশহরা গঙ্গাপূজা দশবিধ ফল দিয়ে দেবি গঙ্গার পূজা বিধি

গঙ্গা কলিযুগে পরম তীর্থ। বিশেষ করে সব শাস্ত্রই এই কথা বলে। মহাভারতে ঋষি পুলস্ত্য, ভীস্মের নিকট কীর্তন করেছেন- “যেখানে গঙ্গা আছেন সেটাই দেশ, গঙ্গা তীরের সেই দেশই তপোবন ও সিদ্ধ তীর্থ।” আর্য্য দিগের প্রাচীন ধর্মগ্রন্থেও ‘গঙ্গা’ নাম উল্লেখ আছে। গঙ্গা বৈদিকী নদী। ঋক্ বেদের একটি শ্লোকে যমুনা, সরস্বতী, শতুদ্রী, পরুষ্ণী, অসিক্লী, মরুৎবৃধা, বিতস্তা, সুষোমা ও আর্জীকিয়া নদীর সাথে গঙ্গার নাম পাওয়া যায় (ঋক্- ১০/৭৫/০৫)

পুরাণ মতে স্বর্গ বাসিনী এই গঙ্গা দেবীকে মর্তে এনেছিলেন সগর রাজার বংশজ রাজা ভগীরথ। তিনি আবার ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের কূলের পূর্বপুরুষ। পৌরাণিক আখ্যান মতে সগর রাজার ষাটি হাজার পুত্র কপিল শাপে ভস্ম হলে, তাহাদিগের প্রেতাত্মার মুক্তির জন্য স্বর্গ থেকে গঙ্গা কে আনবার প্রয়োজন হয়।

তপস্যা করতে করতে একে একে রাজা সগর, অসমঞ্জ, অংশুমান, দিলীপ রাজা দেহ ত্যাগ করেন। অবশেষে দিলীপ পুত্র ভগীরথ সফল হন। গঙ্গাকে মর্তে আনতে পারেন। ভোগোলিক তথ্যে গঙ্গার উৎপত্তি গোমুখী শৃঙ্গ থেকে। আকাশ ( স্বর্গ ) থেকে পতিত মেঘের জল ও তুষার গলিত জল একত্রিত হয়ে গঙ্গা নদীর সৃষ্টি।

গঙ্গা যেখানে অলকানন্দার সহিত মিলিত হয়েছেন সে স্থানের নাম দেবপ্রয়োগ। যেখানে যমুনা ও গপ্তা সরস্বতীর সাথে মিলিত হয়েছেন সে স্থানের নাম ‘প্রয়োগ’ বা ‘ত্রিবেনীসঙ্গম’। গঙ্গার সহিত গোমতী, ঘর্ঘরা, শোন, বরুণা, অসি, গণ্ডকী, কুশী, রূপনারায়ন ইত্যাদি বহু নদ নদী মিলিত হয়েছে। উত্তর ভারতের বহু তীর্থ যেমন হরিদ্বার, প্রয়োগ, কাশী, নবদ্বীপ, দক্ষিণেশ্বর, কালীঘাট তীর্থ গঙ্গার ধারেই। গঙ্গা পাপানাশিনী, কলি কলুষ নাশিনী। হর হর গঙ্গে।

আজ দশহরা গঙ্গা পূজা। দশবিধ ফল দিয়ে দেবী গঙ্গার পূজার বিধি। দেবী যাহাতে কর্মফল হরণ করে মুক্তি বা মহাফল প্রদান করেন। আচার বশত আজকের দিনে মনসা পূজাও দেখা যায়। আজ বটুকভৈরবের আবির্ভাব তিথি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button