দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একদিনে আরও ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৯৯৬ জন।
স্টাফ রিপোর্ট-ঃ
দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একদিনে আরও ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৯৯৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা সোমবার দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য তুলে ধরেন।
মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত শনাক্ত ২ হাজার ৯৯৬ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ৬৩ হাজার ৫০৩ জন হল।
আর গত এক দিনে মারা যাওয়া ৩৩ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ৪৭১ জনে দাঁড়াল।
আইইডিসিআরের ‘অনুমিত’ হিসাবে গত একদিনে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১ হাজার ৫৩৫ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাতে সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৫১ হাজার ৯৭২ জন।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে ৮ মার্চ, তা আড়াই লাখ পেরিয়ে যায় গত ৭ অগাস্ট। এর মধ্যে ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৮ জুলাই সেই সংখ্যা তিন হাজার স্পর্শ করে। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয় বুলেটিনে, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
মঙ্গলবার বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। আক্রান্তের সংখ্যায় ইতালিকে ছাড়িয়ে বিশ্বে এখন পাকিস্তানের পরই পঞ্চদশ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
করোনাভাইরাসে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা ৭ লাখ ৩৬ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যায় বাংলাদেশের অবস্থান এখন ২৯তম।
ব্রিফিংয়ে ড. নাসিমা সুলতানা জানান, গত এক দিনে যারা মারা গেছেন তাদের ২৮ জন পুরুষ এবং ৫ জন নারী। ৩০ জন হাসপাতালে এবং ৩ জন বাড়িতে মারা গেছেন।
তাদের মধ্যে তিনজনের বয়স ছিল ৮০ বছরের বেশি। এছাড়া ৩ জনের বয়স ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে, ১৪ জনের বয়স ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে, ৫ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ২ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৫ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিল।
তাদের ১৫ জন ঢাকা বিভাগের, ৫ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৩ জন খুলনা বিভাগের, ১ জন ময়মনসিংহ বিভাগের এবং ৪ জন রংপুর বিভাগের ছিলেন।
নাসিমা সুলতানা বলেন, দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৩ হাজার ৪৭১ জনের মধ্যে ২ হাজার ৭৪৯ জন পুরুষ এবং ৭২২ জন নারী।
তাদের মধ্যে ১ হাজার ৬৪২ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ৯৮৬ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৪৭৬ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ২২৪ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ৯০ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৩৪ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ১৯ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।
এর মধ্যে ১ হাজার ৬৫৪ জন ঢাকা বিভাগের, ৮১৬ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ২৬৮ জন খুলনা বিভাগের, ২২৬ জন রাজশাহী বিভাগের, ১৫৮ জন সিলেট বিভাগের, ১৩৯ জন রংপুর বিভাগের, ১৩৪ জন বরিশাল বিভাগের এবং ৭৬ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১৪ হাজার ৮২০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত সর্বমোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১২ লাখ ৮৭ হাজার ৮৮টি।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ২২, মোট শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৪৬ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩২ শতাংশ।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে এটাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের শেষ ভিডিও বুলেটিন ছিল জানিয়ে নাসিমা সুলতানা বলেন, “আপনারা ইতোমধ্যে জেনে গেছেন, আগামীকাল থেকে এই অনলাইন বুলেটিন আর হবে না। তবে আগের মতই প্রেস রিলিজ আকারে তথ্য জানিয়ে দেওয়া হবে।”