ধামরাইয়ের শ্রী শ্রী যশোমাধব দেবের মন্দিরে“শ্রীশ্রী রাধাকৃষ্ণের ঝুলনযাত্রা” উৎসব শুরু।
রনজিত কুমার পাল (বাবু) স্টাফ রিপোর্টার-ঃ
ধামরাইয়ের শ্রী শ্রী যশোমাধব দেবের মন্দিরে“শ্রীশ্রী রাধাকৃষ্ণের ঝুলনযাত্রা” উৎসব শুরু।
রাজধানী ঢাকার অদূরে ধামরাইয়ের ঐতিহাসিক প্রায় চারশত বছরের সুপ্রাচীন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান শ্রীশ্রী
যশোমাধব দেবের মন্দিরে বাৎসরিক ধর্মীয় অনুষ্ঠান শ্রীকৃষ্ণের ঝুলনযাত্রা” উৎসব স্বাস্থ্য বিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ১৪ই শ্রাবণ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ /৩০শে জুলাই -২০২০ খ্রীস্টাব্দ রোজ বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে ।
সপ্তাহ ব্যাপী শ্রীকৃষ্ণের ঝুলনযাত্রা উৎসব অনুষ্ঠানে এতদ্ অঞ্চলের সকল শ্রীকৃষ্ণ অনুরাগী ভক্তগন এ’ঝুলনযাত্রা অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করিবে।
ঝুলনযাত্রা উৎসব অনুষ্ঠানের ঐতিহাসিক তত্ত্ব –
শ্রাবণ এলে ঝুলন ও রাখির কথা মনে পড়ে। আজ ঝুলনযাত্রা বা ঝুলন পূর্ণিমা। বছরের তিনটে পূর্ণিমা গুলোকে শ্রীকৃষ্ণের লীলা বা যাত্রা বলে আমারা অভিহিত করি। সেই মতো দোলযাত্রা দোলপূর্ণিমায়, তারপর ঝুলনযাত্রা শ্রাবণ পুর্ণিমাতে ও সব শেষে লীলা শ্রেষ্ঠ রাসলীলা রাসপূর্ণিমাতে। এই তিন লীলা তত্ত্বের প্রতীকস্বরূপ বর্ণনাঃ- প্রথম স্পন্দন, দ্বিতীয় হিন্দোল বা আন্দোলন এবং তৃতীয়ে নৃত্য বা উল্লাস। ঝুলনযাত্রা বা লীলা বর্ষার লীলা। অনুকরণে গাছের ডালে দোলা ঝুলিয়ে দোল খাওয়ার আনন্দ আমরা ছোট বেলায় যেমন উপভোগ করেছি, তেমনি দেশের বহু প্রদেশেও এর প্রচলন আছে বহুকাল যাবৎ।
সাধারণতঃ শ্রাবণ মাসে একাদশী থেকে পূর্ণিমা, এই পাঁচদিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয় বৈষ্ণব ধর্মের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎসব এই ঝুলন উৎসব। শ্রাবণী পূর্ণিমাকে একাধারে ঝুলন পূর্ণিমা বা রাখি পূর্ণিমাও বলে।
বৈষ্ণব ধর্ম সজীবতার ধর্ম, রসের ধর্ম। এই ধর্ম শুষ্কতার পক্ষপাতী নয়। তাই এই ধর্ম আমাদের জীবনের ভোগ বা কর্মকে ভোগরস, কর্মরস না বলে ভক্তিভরে তাকে ভক্তিরস বলেছে। জীবনকে শুষ্ক মরুভুমি করে পরমতত্ত্ব লাভে ভক্তিবাদীরা বিশ্বাসী নন। বৈষ্ণব ধর্ম তাই জীবনময়, প্রেমময় ও রসময়। উপনিষদে ভগবান বা পরমব্রহ্মকে রসস্বরূপ বলে উপলব্ধি করেছে। ভগবানকে তাঁর সৃষ্টি ও তা রক্ষার জন্য অবতারত্ব গ্রহণ করতে হয়। অবতার রূপে তাঁর নানারূপ কার্যকে যাত্রা বা লীলা নামে অভিহিত করা হয়। ঝুলনযাত্রা তেমনি এক লীলার নাম, যেখানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সহিত শ্রীরাধার মাধুর্যপূর্ণ প্রেমের পরিপূর্ণ প্রকাশ ঘটেছে।
পরমেশ্বর ভগবান কৃপা করে এই ধরণীতে এই লীলা করেছেন যাতে করে জীব এই জীবনে জড় জগতে তাঁর সাথে বিশুদ্ধ প্রেমের আদান প্রদানের মাধ্যমে জীবনান্তে ভগবানের সেবায় জীব ভগবদ্ধামে নিজেকে ভগবৎ সেবায় নিয়োজিত করতে পারে। শ্রীশ্রী রাধাগোবিন্দ এক সপ্তাহ ধরে ঝুলনে উপবেশন করে মন্দিরে আমরা সকলের অপেক্ষায় থাকবেন। তাই সকল ভক্তবৃন্দের কাছে অনুরোধ সবাই যশোমাধব মন্দিরে এসে এই অপার সেবার সুযোগ গ্রহণ করুন।
প্রতিবছর এর ন্যায় এবারো ঝুলোনযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে।।
শ্রীশ্রী যশোমাধব দেবের ঐতিহাসিক মন্দিরে আগত সকল ভক্তদের সামাজিক দূরত্ব অবলম্বন ও মাস্ক সহিত মন্দিরে প্রবেশ করে অনুষ্ঠান সাফল্যমন্ডীত করার জন্য শ্রীশ্রী যশোমাধব মন্দির পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে সর্বসাধারণকে যথারীতি অবহিত করে
সকল ভক্তবৃন্দের উপস্থিতি ও সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছে উক্ত মন্দির পরিচালনা পর্ষদ এর সহ-সভাপতি ডাঃ অজিত কুমার বসাক, অসিত গোস্বামী, যুগ্ন সম্পাদক নন্দ গোপাল সেন , সাংগঠনিক সম্পাদক প্রাণ গোপাল পাল, কল্লোল সেন, কোষাধ্যক্ষ রতন পাল, দপ্তর সম্পাদক সাংবাদিক রনজিত কুমার পাল (বাবু) প্রমূখ ।