জাতীয়

বৃষ্টি’র পানিতে ঢাকা অচল

স্টাফ রিপোট-ঃ

রাতভর ও সোমবার সকালের বৃষ্টিতে ডুবে গেছে রাজধানীর নানা সড়ক। এতে নাগরিক ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। বৃষ্টি হলে নগরীতে এমন দুরবস্থার চিত্র নতুন নয়।
আর জলজট নিরসনের দায়িত্বে থাকা সেবা সংস্থা ঢাকা ওয়াসা এর দায় থেকে বাঁচতে বরাবরই নানা অজুহাতের আশ্রয় নেয়। এবারও দুটি অজুহাত দেখালো ওয়াসা।
ওয়াসার মতে, দেশের নানা জেলায় বন্যার কারণে ঢাকার আশপাশের নদীগুলোর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে বৃষ্টির পানি নামতে সমস্যা হচ্ছে। জোয়ারের সময় বৃষ্টিপাত হওয়ায় স্বাভাবিক গতিতে পানি নামতে পারেনি বলে জানিয়েছে ওয়াসার প্রকৌশল বিভাগ।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ঢাকায় সোমবার সকাল ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ৬৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টিপাতের এ পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি।
টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বর গোলচক্কর এলাকা, শেওড়াপাড়া, বেগম রোকেয়া সরণির কাজীপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, কলাবাগান ও আসাদগেট, শান্তিনগর, মৌচাক ও কাকরাইল, হাজারীবাগ, কারওয়ান বাজার, পান্থপথ, ধানমন্ডি ১৫, মোহাম্মদপুর, আরামবাগ, খিলগাঁও, পুরান ঢাকার শহীদনগর, নাজিমউদ্দিন রোড, জুরাইন, ইব্রাহীমপুর, সাংবাদিক কলোনি এলাকা।
এসব স্থানে সড়কে হাঁটু পানি জমতে দেখা গেছে। কোথাও কোথাও জলজটের পরিমাণ ছিল আরও বেশি। জলাবদ্ধতা দেখা গেছে মৌচাক-মগবাজার ফ্লাইওভারেও।
ভুক্তভোগীদের মতে, নগরীর এই সমস্যা অনেক দিনের। সেবা সংস্থাগুলোর খামখেয়ালীপনা তাদের নিয়মিত ভোগাচ্ছে। এসব সমস্যা থেকে পরিত্রাণের পথ খুঁজতে চান নগরবাসী।
সেবা সংস্থাগুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার পরামর্শ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানের। মিরপুর শেওড়াপাড়া এলাকার এই বাসিন্দা সকালে হাঁটু পানি মাড়িয়ে অফিসে পৌঁছেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব পালন করছি। সেবা সংস্থাগুলোকে নিয়মিত ট্যাক্স দিচ্ছি। কিন্তু তারা তাদের দায়িত্ব পালন করছেন না। এখানে তাদের জবাবদিহিতার জায়গাটা আমি দেখি না। প্রতিটি সংস্থাকে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসতে হবে।’
একই ধরনের অভিযোগ জানিয়েছেন জলাবদ্ধতার শিকার হওয়া এলাকার বাসিন্দারা। এসব অভিযোগের ব্যাপারে সেবা সংস্থা ঢাকা ওয়াসার প্রকৌশল বিভাগের পরিচালক শহিদুল ইসলাম জানালেন, জোয়ারের সময় বৃষ্টিপাত এবং নদীর পানির উচ্চতা বেশি থাকায় পানি নামতে সমস্যা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা হয়েছে তাই ঢাকার পাশে পাশের নদীর পানির উচ্চতা বেড়েছে। এছাড়া বৃষ্টিটা হয়েছে জোয়ারের সময়। ফলে পানি যে গতিতে নেমে যাওয়ার কথা সেভাবে নামতে পারেনি।’
প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির কারণে দ্রুত সময়ের মধ্যে জলাবদ্ধতা নিরসন সম্ভব হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমরা আগে থেকে আবহাওয়ার পূর্বাভাস জেনেছি। আমরা জানি, টানা বৃষ্টি হবে। সে হিসেবে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। যেসব জায়গা থেকে আমরা নাগরীর পানি বের করি, সে সব স্থানে পাম্প বসানো হয়েছে। আমরা পাম্পের মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে পানি অপসারণ করছি। এতে দ্রুত জলাবদ্ধতা কমেছে।’
চলতি বর্ষা মৌসুমে টানা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এসময় জলাবদ্ধতা নিরসনে পর্যাপ্ত পাম্প বসানো হয়েছে বলে জানান ওয়াসার প্রকৌশল বিভাগের এই পরিচালক। পাম্প চালাতে বিদ্যুৎ বিপণন সংস্থা ডিপিডিসির মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবাও পাচ্ছেন বলে দাবি করেন তিনি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button