নন্দীগ্রামে শিশুকন্যা অন্ত:সত্ত্বার ঘটনায় মামলা, মক্তব শিক্ষক গ্রেফতার।
তানভীর ইসলাম রাজু, বগুড়া প্রতিনিধি-ঃ
নন্দীগ্রামে শিশুকন্যা অন্ত:সত্ত্বার ঘটনায় মামলা, মক্তব শিক্ষক গ্রেফতার।
বগুড়ার নন্দীগ্রামে ধর্ষণে শিশুকন্যা (১০) তিন মাসের অন্ত:সত্ত্বার ঘটনায় ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে অভিযুক্ত ধর্ষক হাফেজ রুহুল কুদ্দুসকে (৫৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে উপজেলার কড়ইহাটের পাশ্ববর্তী এলাকা দারিয়াপুর শাহপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। নন্দীগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) জনাব, শওকত কবিরের নেতৃত্বে এসআই ফারুক হোসেন পিপিএম সহ একদল পুলিশ গত শনিবার দিবাগত রাতে নওগাঁ সদর এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত মক্তব শিক্ষককে গ্রেফতার করে।
এদিকে গ্রাম্য সালিশে শিশুকন্যা অন্ত:সত্ত্বার বিষয়টি টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টার ঘটনায় আটককৃত চারজন গ্রাম্য মোড়লকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। তারা হলেন দারিয়াপুর শাহপাড়ার আবু সাঈদ (৬০), আফজাল হোসেন (৬৫), বাবু মিয়া (৩৫), শাকিবুল্লাহ (৩০)।
ধর্ষিতার পরিবার, থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দারিয়াপুর শাহপাড়ার হাফেজ রুহুল কুদ্দুস নিজ বাড়িতে মক্তব খুলে দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের শিশু বাচ্চাদের আরবি শিক্ষা দেয়। একই এলাকার নসিমন চালকের শিশুকন্যাকে মক্তবে আরবি শেখানোর জন্য ভর্তি করা হয়। মাদ্রাসা শিক্ষক হাফেজ রুহুল কুদ্দুস আরবি শিক্ষা দেয়ার আড়ালে শিশুকন্যাদের দিকে কু-নজর দেয়।
৫-৬ মাস পূর্বে নসিমন চালকের শিশুকন্যাকে হত্যার ভয় দেখিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ করে ওই মক্তব শিক্ষক। মেয়েটি ভয়ে বিষয়টি পরিবারকে জানায়নি। শিশুকন্যা তিন মাসের অন্ত:সত্ত্বা হওয়ার পর ঘটনাটি জেনে স্থানীয়দের মাঝে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
গত বৃহস্পতিবার সংবাদকর্মীদের হস্তক্ষেপে শিশুকন্যাকে উদ্ধার করা সহ চারজন গ্রাম্য মোড়লকে আটক করে পুলিশ।
উক্ত ঘটনায় ধর্ষক হাফেজ রুহুল কুদ্দুসকে আসামি করে ২০০০ সালের নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশোধনী ২০০৩ এর ৯(১) ধারায় গত শুক্রবার থানায় মামলা দায়ের হলে আসামিকে ধরার চেষ্টায় পুলিশের বিশেষ অভিযান শুরু হয়। পরে মাত্র ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে ধর্ষককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
শিশুর পরিবার জানায়, বেশ কিছুদিন ধরে শিশুকন্যা বমি করছিল। তাই তারা সন্দেহ প্রবণ হয়ে গত সোমবার নন্দীগ্রামে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে শিশুকন্যা ১২ সাপ্তাহ ৫ দিন অন্ত:সত্ত্বা হয়েছে জানায় চিকিৎসকরা। তখন শিশুকন্যা জানায়, মক্তব শিক্ষক রুহুল কুদ্দুস দিনের পর দিন মক্তবে (কুদ্দুসের বাড়িতে) শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করেছে। বিষয়টি কাউকে বললে মেরে ফেলবে, এই ভয় দেখিয়েছিল।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জনাব, এসআই ফারুক হোসেন পিপিএম জানান, শিশুকন্যাকে ধর্ষণ ও তিন মাসের অন্ত:সত্ত্বার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় অভিযুক্ত হাফেজ রুহুল কুদ্দুসকে তার টিমের কঠোর প্রচেষ্টায় গ্রেফতার করা হয়েছে। থানার ওসি মোহাম্মদ শওকত কবিরের নেতৃত্বে মামলার আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। ভিকটিম শিশুকন্যা মেডিকেল পরীক্ষা শেষে আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। এর আগে আটককৃত চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান এসআই ফারুক হোসেন পিপিএম।