জাতীয়

ভাড়ার জন্য সনদ-মালামাল ভাগাড়ে, ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক রিমান্ডে।

স্টাফ রিপোর্টঃ

ভাড়া দিতে না পারায় শতাধিক ছাত্রের সার্টিফিকেটসহ মূল্যবান মালামাল ভাগাড়ে ফেলে দেওয়ায় রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজার এলাকার আলিফ হোস্টেলের তত্ত্ববধায়ক খোরশেদ আলমের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শুক্রবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদুর রহমান শুনানি শেষে রিমান্ডের এই আদেশ দেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) শরীফ সাফায়েত বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সনদ ও মালামাল গায়েব করার ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামি খোরশেদ আলমকে তিন দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়। আদালত শুনানি শেষে তাকে একদিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।’

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে খোরশেদ আলমকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছিলেন কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পরিতোষ কুমার। পরিতোষ কুমার কর্মকর্তা বলেন, ‘হোস্টেলের শিক্ষার্থীদের বেশ কিছু মালামাল খোরশেদের বাসা থেকে উদ্ধার হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, খোরশেদসহ আরও কেউ শিক্ষার্থীদের মালামালগুলো চুরি করে নিয়ে যায় এবং কিছু মালামাল ডাস্টবিনে ফেলে দেয়।’

একই অভিযোগে আরেক ছাত্রের মামলায় মুজিবুল হক নামের আরেক ভবন মালিককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান ওসি।

মামলার বরাত দিয়ে ওসি পরিতোষ জানান, আলিফ হোস্টেলে ১৩০ জন শিক্ষার্থী ও মুজিবুলের মালিকানাধীন কলাবাগানের ওয়েস্ট অ্যান্ড স্ট্রিটের রুবি ভবনে আট শিক্ষার্থী ভাড়া থাকেন। ওই শিক্ষার্থীরা করোনা মহামারিতে বাড়িতে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে দেখেন, তাদের সার্টিফিকেটসহ মালামাল ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় হোস্টেল কর্তৃপক্ষ ও বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে সজিব মিয়া ও সোয়ান মিয়া নামে দুই ভুক্তভোগী বৃহস্পতিবার রাতে পৃথক মামলা করেন।

ভুক্তভোগী সজিব মিয়া গণমাধ্যমকে জানান, কলাবাগানের সাততলা ভবনের নিচতলায় তারা আটজন শিক্ষার্থী ২৫ হাজার টাকায় ভাড়া নেন। গত চার বছর ধরে সেখানেই তারা রয়েছেন। মার্চ মাসের ৫ তারিখে ওই মাসের ভাড়া দিয়ে তারা গ্রামের বাড়িতে চলে যান।

তিনি বলেন, ‘মাঝে ভবন মালিক মুজিবুল হকের সঙ্গে কথা হয় এবং ১৫ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠানো হয়। টাকা পাঠানোর পর মুজিবুল হক আর ফোন ধরেননি। উনি জুন পর্যন্ত তিন মাসের ভাড়া পাবেন কিন্তু উনাকে এক মাসের অগ্রিম দেওয়া আছে।’

সজিব বলেন, ‘আমাদের মালামাল ভাগাড়ে দেওয়া হয়েছে এমন খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার ছুটে এসে দেখি সত্যি সত্যি কিছুই নাই। কক্ষের সব মালামাল সিটি করপোরেশনের গাড়িতে দেওয়া হয়েছে বলে জানতে পারি।’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে ঢাকা কলেজের ইসলামের ইতিহাসের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সজিব বলেন, ‘অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট ছাড়াও আমার প্রেসিডেন্ট রোভার স্কাউট পদকের পরীক্ষার জন্য সংরক্ষিত লগ বইসহ সমস্ত ডকুমেন্ট ছিল। এখন আমি কী করব বুঝতে পারছি না।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button