জাতীয়

হাজারো পেশার মধ্যে সাংবাদিকতা একটি মহৎ ও সম্মানজনক পেশা

আওরঙ্গজেব কামালঃ

হাজারো পেশার মধ্যে সাংবাদিকতা একটি মহৎ ও সম্মানজনক পেশা

তবে এর সঙ্গে আর অন্য দশটি পেশার পার্থক্য অনেক।
সাংবাদিককে জাতির বিবেক বলা হয়। রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। ফলে সাংবাদিককে হতে হয় সৎ সাহসী ও শিক্ষিত। সাংবাদিকতা মানে কারো চাটূরীকতা নয়। কোন রাজনৈতিক দলের বা নেতার গোলামী করে নয়। সাংবাদিকতা মানে দেশ ও জাতির কল্যাণকর নিবেদিতপ্রাণ। সাংবাদিকের লেখনি হতে হবে দেশ ও জাতির কল্যাণে। দেশের ভিতরে ঘাপটি মেরে থাকা সমাজবিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী,দুর্নীতিবাজ, মাদক কারবারি, ঘুষখোর এক কথায় দেশের ক্ষতি করতে চাই যারা তাদের বিরুদ্ধে লেখনীর মাধ্যমে অপরাধমুক্ত করা।একজন ভালো ও পেশাদার সাংবাদিক হওয়ার জন্য অবশ্যই তাকে প্রথমে শিক্ষিত হতে হবে।

এছাড়া পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে নিজেকে মনোনিবেশ করতে হবে। শুধু নিজেকে রক্ষা করতে বা ধান্দা করার উদ্দেশ্যে এ পেশায় ঢুকে পেশাকে কলঙ্কিত করা ঠিক নয়। বর্তমানে অনেকে অভিজ্ঞতার আলোকে সাংবাদিকতা করে থাকেন।আজকের প্রতিষ্ঠিত ও সম্মানিত সাংবাদিকদের অনেকেই বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশুনা করে এসেছেন। ভালো সাংবাদিক হওয়ার জন্য সাংবাদিকতাই পড়তে হবে এমনটা জরুরি নয়। তবে বিষয়টি পড়া থাকলে একজনকে ভালো সাংবাদিক হতে তা অবশ্যই সাহায্য করে। তাই আমাদের উচিত সাংবাদিকতা বিষয়ে জ্ঞান রাখা।সাংবাদিকদের ‘সব কাজের কাজী’ হতে হয়। অর্থাৎ অনেক বিষয়ে মৌলিক জ্ঞান থাকা একজন সাংবাদিকের জন্য জরুরি। সেটা খেলা, অর্থনীতি ও বাণিজ্য, আইন-আদালত, সংবিধান, জ্বালানির মতো বিষয় হতে পারে। সাংবাদিকরা জ্ঞানী না হলে সমাজ ও রাষ্ট্রের ক্ষতি হতে পারে। সাংবাদিকদের ভাষাগত জ্ঞান, ভাষা শুদ্ধ বলা ও লেখা বিষয়ে জ্ঞান থাকতে হবে। শুধু পত্রিকার আইডি কার্ড কিংবা প্রেসক্লাবের আইডি কার্ড পকেটে নিয়ে ঘুরলেই সাংবাদিক হওয়া যায় না।

আমার জানামতে অদক্ষ ও অশিক্ষিত কিছু লোক সাংবাদিকতায় ঢুকে পড়ায় সাংবাদিকদের সম্মান এবং সাংবাদিকতার মান ক্ষুন্ন হচ্ছে। বর্তমান সময়ের সাংবাদিকতা অনেক ঝুঁকিপূর্ণ এবং চ্যালেঞ্জিং ফলে সাংবাদিককে হতে হবে অত্যন্ত দক্ষ ও শিক্ষিত। বর্তমানে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নানা বিধ আইন রয়েছে এছাড়া সাংবাদিকদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। যে আইনে একজন সাংবাদিক কে জেল জরিমানা হতে পারে। এই আইনের চৌদ্দটি ধারা রয়েছে, যা সাংবাদিকদের স্বাধীনতা একেবারেই মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। হলে সাংবাদিকদেরকে অবশ্যই অনেক সতর্কতার সহিত কাজ করতে হবে। বর্তমানের লক্ষ্য করা যাচ্ছে ডিজিটাল বিডিআর প্রসার ঘটেছে কিন্তু বাড়েনি সাংবাদিকতার মান।

এছাড়া ফেসবুকে যে যার মত যা ইচ্ছা লিখছে। যে কারণে সাংবাদিকের মূল্যায়ন অনেক অংশে কমে যাচ্ছে। সাংবাদিকরা গুম, হত্যা, লাঞ্ছিত ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। বর্তমান সময়ে ইলেক্ট্রনক মিডিয়ায় সাধারণত নিয়ম হলোথ যেকোনো বিভাগে আপনি কাজ করতে প্রথমেই জানতে হবে বেসিক জার্নালিজম। সাংবাদিক হলে যেসব গুণ থাকা দরকার : ১. সিদ্ধান্ত ২. সততা ৩. ব্যক্তিত্ব ৪. ব্যবহার ৫. সাহসিকতা ৬. বস্তুনিষ্ঠতা ৭. অধ্যবসায় ৮.নিয়মানুবর্তিতা ও যোগাযোগ ৯. দায়বদ্ধতা ১০. বিচক্ষণতা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একথা স্বীকার করতেই হবে, এ পেশায় আজও সিংহভাগ জনশক্তিই অনাড়ি। তারা অপেক্ষাকৃত কম মেধাবী ও প্রশিক্ষণহীন। দেশে সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণের জন্য প্রেস কাউন্সিল রয়েছে সেখানে সাংবাদিকদের নানা বিধ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। অবশ্যই প্রতিটি সাংবাদিককে প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমে নিম্নতম প্রশিক্ষণ নেওয়া উচিত।
লেখক ও গবেষক :
আওরঙ্গজেব কামাল
সভাপতি : ঢাকা প্রেসক্লাব
মহাসচিব : বাংলাদেশ ন্যাশনাল নিউজ ক্লাব

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button