জেলার খবর

দিনাজপুরে গৃহবধুকে হত্যা মামলায় স্বামী-সতিন ও সতিনের ছেলের মৃত্যুদন্ড

রশিদুল ইসলাম টিপু, দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ

দিনাজপুরে গৃহবধুকে হত্যা মামলায় স্বামী-সতিন ও সতিনের ছেলের মৃত্যুদন্ড

দিনাজপুরে স্বামী সতিন ও সতিনের ছেলে মিলে গৃহবধুকে হত্যার ঘটনায় ৩ জনকে মৃত্যুদন্ড, একজনকে আমৃত্যু কারাদন্ড ও একজনকে ১০ বছর সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ প্রদান করেছে আদালত।

বুধবার দুপুরে দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৩ আদালতের বিচারক মো: এসএম রেজাউল বারী এই আদেশ দেন।

আসামীরা হলেন- দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার দক্ষিন সুজাপুর গ্রামের মৃত: বিবেকানন্দ চৌধুরীর ছেলে সাধনা নন্দ চৌধুরী (৬৩), আকাশ চৌধুরী (২৭), সাধনানন্দ চৌধুরীর স্ত্রী শ্রীমতি প্রতিমা রানী চৌধুরী (৪৫), চকচকা গ্রামের রবীন্দ্রনাথ দাশের ছেলে জীবন চন্দ্র দাস (৩০), কাটাবাড়ী গ্রামের কার্তিক চন্দ্র মহন্তের ছেলে কাজল মহন্ত (৩১)।

এদের মধ্যে প্রতিমা রানী চৌধুরী, আকাশ চৌধুরী ও কাজল মহন্তকে মৃত্যুদন্ড, নিহতের স্বামী সাধন নন্দ চৌধুরীকে আমৃত্যু কারাদন্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা আর জীবন চন্দ্র দাসকে ১০ বছর সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেছে আদালত। একইসাথে জীবন চন্দ্র দাসকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, সাধনা নন্দ চৌধুরী তার প্রথম স্ত্রী তপতী রানী চৌধুরীর সাথে সংসার পরিচালনা করার সময় ২০১৪ সালের দিকে প্রতিমা রানী চৌধুরীকে বিবাহ করে। এরপর থেকেই তপতী রানী চৌধুরীর সাথে আলাদা থাকতো এবং ভরন-পোষন দিতো না। এই বিষয় নিয়ে প্রতিনিয়তই পারিবারিক কলহ লেগেই ছিল। গত ২০১৭ সালের ৬ এপ্রিল রাত ৯ টার পর থেকে স্বামী, সতিন ও সতিনের ছেলেসহ ৫ জন মিলে শারীরিক নির্যাতন করে।

এক পর্যায়ে ৫ জন মিলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে তার মরদেহ উত্তর কৃষ্ণপুর গামী পাকা রাস্তার দক্ষিন পাশে সুজাপুর গ্রামে সন্দীপ মাস্টারের বাঁশবাগানে নিয়ে গিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এই ঘটনায় নিহতের ছেলে শুভ নন্দ চৌধুরী বাদী হয়ে ফুলবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ তদন্ত করে অভিযোগ প্রদান করেন। মামলার ৪ জন আসামী ১৬৪ ধারায় শিকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। পরে আদালাতে মামলাটি চলাকালে ২২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেন।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী পাবলিক প্রসিউকিউটর এ্যাড. রবিউল ইসলাম, এপিপি আতাউর রহমান এবং আসামীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন এ্যাড. হামিদুল ইসলাম।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পাবলিক প্রসিউকিউটর এ্যাড. রবিউল ইসলাম বলেন, আদালতের এমন রায়ে আমরা সনতিষ্ট।
বাদী এই রায়ে সনতিষ্টি প্রকাশ করে বলেন, আদালতে ন্যায্য বিচার পেয়েছি ভবিষ্যৎতে যেন আর কাউকে এভাবে মাতৃ হারা না হতে হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button