২০২১ সালে সারা দেশে দুর্ঘটনায় ৫৬৮৯ জনের প্রাণহানি
সদ্য বিদায়ী ২০২১ সালে সারা দেশে সড়ক, নৌ ও রেল পথে সবমিলিয়ে ৪ হাজার ৯৮৩টি দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫ হাজার ৬৮৯ জন এবং আহত হয়েছেন ৫ হাজার ৮০৫ জন।
শনিবার (৮ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আয়োজিত ‘২০২১ সালের সড়ক দুর্ঘটনা পরিসংখ্যান উপস্থাপন’ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান নিসচার চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন।
এ পরিসংখ্যান ও প্রতিবেদনের কাজটি করা হয়েছে পুরোপুরি সেকেন্ডারি তথ্যের ওপর ভিত্তি করে। যেখানে ছিল ইলেকট্রনিক মিডিয়ার তথ্য, ১১টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার তথ্য, অনলাইন পোর্টালের তথ্য, অনুমেয় অনুজ্জ বা অপ্রকাশিত ঘটনা এবং শাখা সংগঠনগুলোর প্রতিবেদন। অনুষ্ঠানের শুরুতে নিহতদের প্রতি শোক জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালে বিগত দুই বছরের তুলনায় সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে। ২০২১ সালটিও ছিল করোনা মহামারির বছর। প্রায় ৬ মাস জরুরি যানবাহন ছাড়া অন্যান্য যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। যে কারণে সড়ক দুর্ঘটনা আরও কম হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু সেই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণিত হচ্ছে গেল বছর সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যানে।
সড়কে দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর হিসাব তুলে ধরে বলা হয়, ২০২১ সালে সারা দেশে সড়ক, নৌ ও রেলপথে ৪ হাজার ৯৮৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫ হাজার ৬৮৯ জন। এছাড়া আহত হয়েছেন ৫ হাজার ৮০৫ জন। নিহতদের মধ্যে পুরুষ ৪ হাজার ৫০৭ জন এবং ১ হাজার ১৮২ নারী। আহতদের মধ্যে পুরুষ ৪ হাজার ৫৩১ ও নারী ১ হাজার ২৭৪ জন।
এর মধ্যে সড়কপথে, ৩ হাজার ৭৯৩টি দুর্ঘটনায় নিহত হন ৪ হাজার ২৮৯ জন। আহত হন ৫ হাজার ৪২৪ জন। রেলপথে ২৭০টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৫৪ জন, আহত হয়েছেন ৪২ জন। নৌপথে ৯০টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৯৮ জন, নিখোঁজ হয়েছেন ১৮৬ জন ও আহত হয়েছেন ৩৩৯ জন। এছাড়াও অপ্রকাশিত তথ্য ও হাসপাতালে ভর্তির পর এবং হাসপাতাল থেকে রিলিজের পর ৯৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গত বছর সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ও কারণ হিসেবে নিশচা জানায়, সড়কে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিংয়ের অভাব, টাস্কফোর্স কর্তৃক প্রদত্ত ১১১টি সুপারিশনামা বাস্তবায়ন না হওয়া, চালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ও বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর প্রবণতা, দৈনিক চুক্তিভিত্তিক গাড়ি চালানো, লাইসেন্স ছাড়া চালক নিয়োগ, পথচারীদের মধ্যে সচেতনতার অভাব, ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করে ওভারটেকিং করা, বিরতি ছাড়াই দীর্ঘসময় ধরে গাড়ি চালানো, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধে আইনের প্রয়োগ না থাকা, সড়ক ও মহাসড়কে মোটরসাইকেল ও তিন চাকার গাড়ি বৃদ্ধি ও মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি।