জাতীয়

সাংবাদিক রাহুল দাশ নয়ন: করোনাযুদ্ধে জয়ী এ ফ্রন্টলাইনার প্লাজমা দিয়ে স্মরনীয় হয়ে থাকতে চায় এ জিবনে।

এনামুল হক রাশেদী, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি-ঃ

সাংবাদিক রাহুল দাশ নয়ন: করোনাযুদ্ধে জয়ী এ ফ্রন্টলাইনার প্লাজমা দিয়ে স্মরনীয় হয়ে থাকতে চায় এ জিবনে।

সাংবাদিক রাহুল দাশ নয়ন, চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী পৌরসভাস্থ উত্তর জলদী চুড়ামনি বাড়ির যুব সমাজের আইড্যল সাহসী-বিনয়ী এ যুবক একজন নিরলস সংবাদ কর্মি, একজন সাহসী ফ্রন্টলাইন যোদ্ধা। চট্টগ্রামের বহুল প্রচারিত জনপ্রিয় দৈনিক পূর্বদেশ-এর ডেস্কে কর্মরত নিরলস এ সাংবাদিক করোনা সংকটেও নিজেকে গুটিয়ে না রেখে দিন-রাত অবিরাম ছুঠেছেন সত্যানুসন্ধানের পিছনে। স্বাস্থ্যবিধি সতর্কতা মেনে চলা সত্বেও কখন যে কোনভাবেই নিজেই আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন করোনা ভাইরাসে। পরিবারের সদস্য, সহকর্মি, স্বজন ও শুভাকাংখীদের মধ্যে উদ্বিগ্নতা। ফ্রন্টলাইনার এ সাহসীযোদ্ধা করোনাকে জয় করে এবার নিজেই ক্ষুদ্র এ জিবনে স্মরনীয় হয়ে থাকতে চান নিজের শরীরের প্লাজমা দিয়ে সংকটময় করোনা রোগীর জিবন বাঁচাতে মানবিক ভুমিকা রাখার মাধ্যমে।

২৫ মে সোমবার গায়ে জ্বর অনুভব করলেন সাংবাদিক রাহুলদাশ নয়ন। পরিস্থিতি আঁছ করতে পেরে সাথে সাথেই নিজেকে আলাদা করে নিলেন পরিবারের সদস্যদের কাঁছ থেকে। ২৬ মে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকদের পরামর্শ ও আন্তরিক সহযোগিতায় কোভিড টেস্টের নমুনা জমা দেন। ৩০ মে প্রোপ্ত ফলাফলে কোভিড-১৯ পজেটিভ হয় রাহুল। ১ জুন মৃদু শ্বাষকষ্ট নিয়ে নিজে একাই চিকিৎসা নিতে চলে চট্টগ্রামের কোভিড বিশেষায়ীত ফিল্ড হাসপাতালে। একইদিনে নিজের বাবা-মা, স্ত্রী-কন্যা সহ পরিবারের আরো ৫ সদস্যের নমুনা দিলেন পরিক্ষার জন্য। নিজের নমুনাও দিলেন ২য় বারের মত। ৬ জুন ছোট্ট মেয়ে ছাড়া রাহুলের বাবা-মা-স্ত্রীসহ বাকি ৪ জনের রেজাল্টও পজেটিভ আসে। কিন্তু কিছুটা স্বস্থি ছিল সাংবাদিক রাহুলের রিপোর্ট এসেছিল নেগেটিভ। তারপরও পরিবারের সবাই হার্ড কোয়ারেন্টাইনে চলে যায় এবং প্রচন্ড আত্ববিশ্বাষে চিকিৎসকদের পরামর্শে কঠিনভাবে সবাই মেনে চলতে লাগল স্বাস্থ্যবিধি। ১২ জুন তৃতীয়বার নমুনা জমা দেন রাহুল, ১৪ জুন পরিবারের সদস্যদের নমুনা জমা দেন ২য়বারের মত। ২১ জুন সবার নমুনা নেগেটিভ আসলে সবাই স্বস্থির নিশ্বাষ ছেড়ে বাঁচে এবং সাংবাদিক রাহুল দাশ নয়ন সহ পরিবারের সবাই করোনামুক্ত হয়।
করোনা জয়ী ফ্রন্টলাইনার এ সাহসীযোদ্ধা জানান,- করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে থাকাকালীন উদ্বিগ্ন সময়গুলোতে যারা বিভিন্নভাবে তাঁকে সহানুভুতি জানিয়েছেন তাদের সকলের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা জানান, বিশেষ করে প্রতিবেশি এক বড়ভাই শেখর ও কয়েকজন বন্ধুর কথা কৃতজ্ঞতা ভরে স্মরন করেন। তিনি আরো জানান, “২৫মে-২১জুন পর্যন্ত আমার উপর যেন একটি বোঝা ছিল। সবার শারীরিক অবস্থা ভালো থাকলেও নেগেটিভ আসার চিন্তা মাথায় ভর করেছিল। এটা একধরনের মানসিক চাপ বলা চলে। বাসায় যখন একা থাকতাম রাতে প্রচন্ড টেনশন হতো। ঘুম হতো না। প্রচন্ড ভয় ছিল সত্তোর ছুঁই ছুঁই বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে। অবশেষে সৃষ্টিকর্তার দয়া ও স্বজন-শুভাকাংখীদের আশির্বাদে সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছি এটাই জিবনের স্মরনীয় মুহুর্ত।”
সাংবাদিক রাহুল দাশ নয়ন বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন, তাঁর নিজের কর্মস্থল দৈনিক পূর্বদেশ সম্পাদক আলহাজ্ব মুজিবুর রহমান সিআইপি’র প্রতি, যার অনুপ্রেরনায় মানষিক শক্তি অটুট রাখতে সাহস পেয়েছিলেন সবছেয়ে বেশি।
করোনা জয়ী সাংবাদিক রাহুল আরো জানান, ‘জ্বর থাকলে জ্বরের ওষুধ, কাশি ও গলাব্যাথার জন্য নির্ধারিত ওষুধেই উপসর্গ কমে যায়। তবে প্রাকৃতিক নির্যাসে তৈরি গরম পানির ভাব, নিয়মিত গরম পানি ও রঙ চা খেলে করোনা থেকে বাঁচা সম্ভব। যাদের এজমা, কিডনী সমস্যা, ডায়াবেটিস ও শ্বাসকষ্ট আছে তাদের জন্য এ রোগ বিপদের।
করোনায় আক্রান্ত হলে মানুষের মানবিক বিপর্যয়ে উষ্মা প্রকাশের পাশাপাশি মানবিক মানুষের মানবিকতায় নিজের আশার কথাও ব্যক্ত করেন দ্বিধাহীনচিত্তে। তিনি আরো জানান, একটা মানুষ, একটি পরিবার করোনায় আক্রান্ত হলে কতোটা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় থাকে সে ওই পরিবার ছাড়া কেউ ভাল জানতে এবং বুঝাতে পারবেনা। করোনা মানেই শুধু মৃত্যু নয়। করোনাকালীন সময়ে মনোবল ঠিক রাখার কোন বিকল্প নাই বলে জানান তিনি।
অবশেষে তিনি জানান,
আজ আমি করোনা জয়ী, এটাই আমার প্রতি সৃষ্টিকর্তার অপার দয়া। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি আমার প্লাজমা দিয়ে যদি করোনা আক্রান্ত রোগীর পাশে দাঁড়াতে পারি তবে, সেটা হবে আমার স্বার্থকতা এবং আমি আমার জিবনকে স্মরনীয় করে রাখতে চাই মানুষের জন্য মানবিক সহায়তায় নিজের জিবনকে উৎসর্গ করে।
অভিনন্দন! করোনা জয়ী ফ্রন্টলাইনার সাংবাদিক রাহুল দাশ নয়ন।
স্যালুট আপনাকে!! মানবিক মানুষ সাংবাদিক রাহুল দাশ নয়ন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button