চীন মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র-ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়ার নিরাপত্তা চুক্তি
চীনকে মোকাবিলা করতে নতুন একটি বিশেষ নিরাপত্তা চুক্তির কথা ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া। এর ফলে দেশ তিনটি নিজেদের উন্নত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি পরস্পরের সঙ্গে বিনিময় করতে পারবে। খবর বিবিসির।
এ ছাড়া নতুন এই অংশীদারিত্বমূলক নিরাপত্তা চুক্তির কারণে প্রথমবারের মতো পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন নির্মাণ করতে পারবে অস্ট্রেলিয়া।
বিবিসি জানিয়েছে, ত্রিদেশীয় এই চুক্তিটির নাম দেওয়া হয়েছে- এইউকেইউএস। চুক্তি অনুযায়ী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোয়ান্টাম প্রযুক্তি ও সাইবার সংক্রান্ত বিষয়গুলোর তথ্যও একে অপরের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া।
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক উপস্থিতি ও শক্তি বৃদ্ধির বিষয়ে এই তিনটি দেশই খুব উদ্বিগ্ন। নতুন নিরাপত্তা চুক্তির ঘোষণা উপলক্ষ্যে বুধবার এক যৌথ বিবৃতি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এইউকেইউএস চুক্তির অধীনে প্রথম উদ্যোগ হিসেবে, অস্ট্রেলিয়ার রাজকীয় নৌবাহিনীর পারমাণবিক সাবমেরিন সক্ষমতা অর্জনে দেশটিকে সহায়তা দিতে আমরা কাজ করব।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অস্ট্রেলিয়ার নৌবাহিনীতে পারমাণবিক সাবমেরিন যুক্ত হলে, সেটি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বাড়াবে এবং আমাদের তিন দেশের যৌথ মূল্যবোধ ও স্বার্থরক্ষায় সেটি ব্যবহার করা হবে।
এদিকে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন, আগামী দেড় বছরের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় পরমাণু শক্তিচালিত সাবমেরিন তৈরি করার একটি যৌথ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে এইউকেইউএস। এটি বাস্তবায়ন করা হলে বিশ্বের পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন থাকা সপ্তম দেশে পরিণত হবে অস্ট্রেলিয়া।
এদিকে চীনকে মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার সদ্য ঘোষণা করা নতুন বিশেষ নিরাপত্তা চুক্তি এইউকেইউএসকে খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা সমঝোতা হিসেবে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ সরকার।
কয়েক বছর ধরে দক্ষিণ চীন সাগরে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরির মাধ্যমে ওই অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়ে চলেছে বেইজিং। ঐতিহাসিকভাবে সাগরটির বেশিরভাগ অংশ নিজেদের বলে দাবি করে তারা। এ জন্য সেখানে কোস্টগার্ড ও নৌসেনাও মোতায়েন করেছে চীনারা। উত্তেজনা রয়েছে তাইওয়ান প্রণালীতে। দুই কোরিয়ার মধ্যে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র তৈরির প্রতিযোগিতাও দুশ্চিন্তার অন্যতম কারণ।
দক্ষিণ চীন সাগর ও তাইওয়ানের কাছে নিয়মিত ‘নৌ চলাচলের স্বাধীনতা’ কার্যক্রম চালিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের নৌবাহিনীও এ অঞ্চলে তৎপরতা বাড়িয়েছে। তবে মার্কিন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেছেন, এইউকেইউএস কোনো দেশকে লক্ষ্য করে তৈরি হয়নি।
এর আগে এ অঞ্চলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদারে ভারত ও জাপানকে সঙ্গে নিয়ে তথাকথিত কোয়াড জোট গঠন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া। আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটনে তাদের পরবর্তী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এতে অংশ নেবেন কোয়াডভুক্ত দেশগুলোর সরকারপ্রধানরা। তার আগেই নতুন জোটের ঘোষণা সামনে এলো।