দেবাদিদেব মহাদেবের মাথায় অর্ধচন্দ্র থাকে কেন!
শিব চন্দ্রশেখর। তার যে কোনো মূর্তিকল্পেই দেখা যায়, তার মাথায় শোভা পাচ্ছে অর্ধচন্দ্র। ঠিক কেন এই কল্পনা, এর ব্যাখ্যা পেতে হলে আপনাকে প্রবেশ করতেই হবে পুরাণ কাহিনীতে। কেবল ‘শিব পুরাণ’ নয়, মহাদেবের ‘চন্দ্রশেখর’ হওয়ার কাহিনী উল্লিখিত রয়েছে অন্যান্য অনেক পুরাণেই। জেনে নেওয়া যেতে পারে, সেই সব কাহিনী,,,
একথা অনেক প্রাচীন গ্রন্থেই উল্লিখিত রয়েছে যে, সমুদ্র মন্থনের কালে যখন তীব্রতম বিষ হলাহল উঠে আসে, তাকে মহাদেব নিজের কণ্ঠে ধারণ করেন। এই কাজের কারণে তার শরীরের তাপমাত্রা প্রবলভাবে বেড়ে যায়। এই তাপ কমাতেই শিব চন্দ্রদেবকে শিরে ধারণ করেন। চন্দ্রের প্রকৃতি শীতল। সেই কারণেই এই কল্পনা সম্ভব হয়েছিল পুরাণকারের পক্ষে।
আর একটি কাহিনী থেকে জানা যায়, ব্রহ্মাপুত্র দক্ষ প্রজাপতির ২৭টি কন্যা নক্ষত্র ছিলেন। এই ২৭ জন নক্ষত্রের সঙ্গে চন্দ্রের বিবাহ হয়। এই নক্ষত্রদের মধ্য রোহিনী ছিলেন চন্দ্রদেবের সব থেকে বেশি প্রিয়। ফলে, অন্য নক্ষত্ররা রোহিনীর প্রতি ঈর্ষাকাতর হয়ে পড়েন। তারা সমবেত ভাবে তাদের পিতা দক্ষ প্রজাপতির কাছে এই মর্মে নালিশ জানান যে, চন্দ্র তাদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করছেন না। দক্ষ রেগে গিয়ে চন্দ্রকে অভিশাপ দেন যে, দিনে দিনে তার ঔজ্জ্বল্য কমে যাবে। অচিরেই এই শাপ ফলতে শুরু করে।
চন্দ্র এতে খুবই ভেঙে পড়েন। অন্য দেবতারাও চিন্তিত হয়ে পড়েন। তারা সম্মিলিত ভাবে শিবের কাছে যান। ততদিনে চন্দ্রের শরীরের একফালি অংশই উজ্জ্বল রয়েছে। শিব চন্দ্রকে তার জটায় স্থান দেন। এবং চন্দ্রকে বর দেন যে, ১৫ দিন তার ঔজ্জ্বল্য হ্রাস পাবে। কিন্তু ১৫ দিনে তা আবার পুনর্স্থাপিত হবে। এই কারণেই পুরাণ মতে,প্রতিমাসে চন্দ্রকলার হ্রাসবৃদ্ধি ঘটে।