কমিউনিস্ট আন্দোলনের প্রবাদ পুরুষ, তাত্বিক ও লেখক জননেতা হায়দার আকবর খান রনো এর জম্মদিন আজ
রনজিত কুমার পাল (বাবু) স্টাফ রিপোর্টারঃ
কমিউনিস্ট আন্দোলনের প্রবাদ পুরুষ, তাত্বিক ও লেখক জননেতা হায়দার আকবর খান রনো এর জম্মদিন আজ
জন্ম ১৯৪২ সালে। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম প্রবাদপুরুষ। তিনি একাধারে জননেতা, তাত্ত্বিক ও লেখক। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম নেতা হায়দার আকবর খান রনো ১৯৪২ সালের ৩১ আগস্ট কলকাতায় নানা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।
নড়াইল জেলায় এক রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান রনো দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় জন্ম হয়েছিল বলে তাঁর ডাক নাম রাখা হয়েছিল রনো। এখন তিনি এই নামেই পরিচিত। পিতৃভূমি নড়াইল জেলার নড়াইল থানার অন্তর্গত চিত্রা নদীর পাড়ে বরশালা গ্রাম (বর্তমানে নড়াইল পৌরসভার অন্তর্গত)। নানাবাড়ি নড়াইল থানায় অন্তর্গত মির্জাপুর গ্রাম। নানা ছিলেন ছিলেন উপ-মহাদেশের বিখ্যাত রাজনীতিক সৈয়দ নওশের আলী।
পিতা হাতেম আলী খান ছিলেন একজন প্রকৌশলী। ১৯৬৮ সালে মরহুম হাতেম আলী খান তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তান সরকারের সড়ক ও জনপথ বিভাগের চীফ ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে অবসরগ্রহণ করেন। সৎ ও যোগ্য অফিসার হিসাবে তাঁর খ্যাতি ছিল। ১৯৯৯ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। রনোর মা কানিজ ফতেমা মোহসিনা ছিলেন সৈয়দ নওশের আলীর দ্বিতীয় কন্যা। বাম রাজনৈতিক কর্মীদের প্রতি রনোর মা’র অকৃত্রিম ভালবাসা ও সহযোগিতার জন্য বাম প্রগতিশীল মহলের তিনি বিশেষ পরিচিত ও শ্রদ্ধার স্থানে অবস্থান করেছিলেন। রনোর মানসিক গড়নের ক্ষেত্রে পিতা-মাতার যথেষ্ট ভূমিকা ছিল। রনোর ছোট ভাই হায়দার আনোয়ার খান জুনোও একজন বিশিষ্ট বামপন্থি রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।
হায়দার আকবর খান রনো’র একমাত্র কন্যা রানা সুলতানা। তার দুই নাতি আছে। অরিত্র ও অন্তিক। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা তের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র থাকাকালীন তিনি গোপনে কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হন। ১৯৬২ সালের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে তাঁর সক্রিয় রাজনীতি শুরু। তিনি ছিলেন পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক। ১৯৭৩ সালে কমরেড রনো ও অন্যান্য সহকর্মীরা মিলে গঠন করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (লেনিনবাদী)। পরে ১৯৭৯ সালে পার্টির নাম পরিবর্তন করা রাখা হয় বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টি। প্রথম থেকেই তিনি পলিটব্যুরোর সদস্য ছিলেন। ১৯৭৯-৮৪ সাল পর্যন্ত তিনি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধেরও তিনি অন্যতম সংগঠক ও নেতা। ১৯৮২-১৯৯০ এর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন ও ১৯৯০ এর গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক ও নেতা।
হায়দার আকবর খান রনো খুব সরল জীবনযাপন করেন। নিরহঙ্কার মানুষটি সহজ সরলভাবে মিশতে পারেন যে কোন সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে এবং সকলেই তাঁর আন্তরিকতার স্পর্শে মুগ্ধ হন। বিশেষ করে যে গরীব জনগোষ্ঠীর মধ্যে তিনি কাজ করেন, তারা তাঁকে আপন বলে গ্রহণ করতে পারে রনোর নিজস্ব চারিত্রিক ও আচরণগত বৈশিষ্টের কারণে।