প্রবাসে বাংলা

রিমান্ড শেষে পাপুলকে কুয়েতের কারাগারে প্রেরন।

অনলাইন ডেস্কঃ

কুয়েতে গ্রেফতার হওয়া লক্ষীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহীদ ইসলাম পাপুলকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কুয়েতের অপরাধ তদন্ত বিভাগ থেকে জানানো হয়, জিজ্ঞাসাবাদে আসামি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। সহযোগিদের আটক করার পর পাপুলকে দ্বিতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। কুয়েতের গণমাধ্যমে খবর বের হয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে মানবপাচার, অর্থ পাচার, ভিসা জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অপরাধ স্বীকার করেছেন পাপুল। সেই সঙ্গে তার এসব কর্মকান্ডে যারা জড়িত তাদের নামও বলেছেন।

পাপুলকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া চাঞ্চল্যকর তথ্য নিয়ে অভিযানে নেমেছে কুয়েতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পাপুলের মানবপাচার সিন্ডিকেটের পুরো দলটিকে তারা আটক করতে চায়। পাপুলের বিরুদ্ধে করা মামলা তখন ভিন্ন দিকে মোড় নিতে পারে। যে শহরে এমপি পাপুল অফিস খুলে এসব অপকর্ম করতেন সেই শহরের স্থানীয় এমপি ওয়াহাব আল বাবতেল বলেন, যে কুয়েতি কর্মকর্তা বাংলাদেশি মানবপাচারকারীকে সহযোগিতা করেছেন তাদেরকে দু্রত আইনের আওতায় আনা হবে।

এদিকে, পাপুলকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে বিস্তর লেখালেখি-মন্তব্য। মূলত একাদশ জাতীয় সংসদে দেশবাসীকে অবাক করে দু’জন এমপি তাদের স্ত্রীকে সংসদ সদস্য পদ উপহার দিয়েছেন। এদের একজন ঢাকা-৮ আসনের এমপি ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, অন্যজন ল²ীপুর-২ আসনের এমপি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল। মেননের স্ত্রী লুৎফুন নেছা খান আসন-৩৪৮ এবং কাজী সহিদ ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম আসন-৩৪৯ এর এমপি। দলের যোগ্য নেত্রীদের বঞ্চিত করে স্ত্রীকে এমপি পদ উপহার দেয়ায় মেননকে চরম মূল্য দিতে হয়েছে। আর অর্থ খরচ করে স্ত্রীকে এমপি পদ উপহার দিয়ে মানবপাচারের মাধ্যমে সে টাকা উঠাতে গিয়ে কুয়েতে ধরা পড়েছেন কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল। তাকে কুয়েতে দ্বিতীয় দফায় রিমান্ড শেষে কারাগারে রাখা হয়েছে বলে সে দেশের গণমাধ্যম খবর দিয়েছে।

কুয়েতে বন্দী শহিদ ইসলাম পাপুল টাকা খরচ করে নিজে এমপি হওয়ার পর একই পদ্ধতিতে স্ত্রীকে শুধু এমপি করেন নি। তিনি দেশের বাইরে কুয়েতের কর্মকর্তাদের মাথা টাকা দিয়ে কিনে অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে গেছেন বছরের পর বছর। কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল কুয়েতের অন্তত সাতজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে গাড়ি ও বিপুল পরিমাণ অর্থ ঘুষ দিয়েছেন। ঘুষ পেয়ে তারা পাপুলকে অবৈধভাবে মুদ্রা পাচারে সহায়তা করেছেন। কুয়েতের ওই সব নাগরিকের নাম প্রকাশের দাবি দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে জোরালো হচ্ছে।

এর আগে গত শনিবার কুয়েতের উপ-প্রধানমন্ত্রী আনাস আল সালেহ বলেছেন, দেশে সবচেয়ে বড় মানবপাচার চক্রের হোতা এশিয়ার একটি দেশের নাগরিককে আটক করা হয়েছে। মানবপাচারের অভিযোগের তদন্তে সরকারি কর্মকর্তা ও প্রভাবশালী ব্যক্তি যেই হোক না কেন, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। কুয়েতের সংসদ সদস্য ইউসুফ আল ফাদহালা, আবদেল ওয়াহাব আল বাবতেইন ও আবদুল করিম আল কান্ডারি তাদের টুইটে শহিদ এমপির মানবপাচার ও অবৈধ মুদ্রা পাচারের সঙ্গে জড়িত কুয়েতের এমপি ও কর্মকর্তাদের নাম প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন।

কুয়েতের ইংরেজি দৈনিক আরব টাইমস এর খবরে বলা হয়, অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যেতে কুয়েতের অন্তত সাতজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে ঘুষ দেন পাপুল। তাদের মধ্যে তিনজন কুয়েত সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বিভাগের প্রধান আর কয়েকজন অবসরে গেছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button