জেলার খবর

ভারতে পাচার ১০ নারী-পুরুষকে বেনাপোল দিয়ে দেশে ফেরত

এসএম স্বপন, জেলা প্রতিনিধি-(যশোর)

ভারতে পাচার ১০ নারী-পুরুষকে বেনাপোল দিয়ে দেশে ফেরত

ভাল কাজের আশায় অবৈধ পথে ভারতে পাচার হওয়া ১০ বাংলাদেশি নারী-পুরুষকে উদ্ধারের পর বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে ভারতীয় পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) বিকালে ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদেরকে ট্রাভেল পারমিটে বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ফেরত আসা বাংলাদেশিদের মধ্যে ৮ জনকে রাইটস যশোর ও ২ জনকে জাস্টিস এন্ড কেয়ার নামে দুটি এনজিও সংস্থা পৃথক ভাবে গ্রহন করেছে।

পাচার হওয়া নারী-পুরুষেরা হলেন, রাসেল ফকির, আয়েশা বেগম, রোকসনা বেগম, মাহমুদা আক্তার, নয়ন হাওলাদার, সাজু চন্দ্র নাথ, খোকন, সাগর হাওলাদার, গোলাপ মিয়া ও শাকিল। এদের বাড়ি যশোর,নড়াইল,খাগড়াছড়ি ও বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকায়।

৩ থেকে ৪ বছর পর এরা দেশে ফিরছে।

জানা যায়, পাচার হওয়া সবাই দরিদ্র পরিবারের। এদেরকে ভালো কাজের কথা বলে ভারতে পাচার করে দালাল চক্র। পরে সেখানে জোর পূর্বক বিভিন্ন ঝুকি মুলক কাজে তাদের ব্যবহার করতে থাকে। এক পর্যায়ে এদের কেউ পালিয়ে পুলিশের হাতে ধরা দেয় আবার কাউকে পুলিশ পাচারকারীদের আস্তানা থেকে উদ্ধার করে। পরে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে এদের আশ্রয় হয় ভারতের বেঙ্গলোর সেন্টাল জেলে। সেখানে সাজার মেয়াদ শেষে দুই দেশের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আইনী প্রক্রিয়ায় ট্রাভেল পারমিটে এরা দেশে ফেরার সুযোগ পায়।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি আহসান হাবিব বলেন, পাচারের শিকার যারা স্থলপথে ফেরত আসেন। তাদের ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শেষে পোর্টথানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পরে সেখান থেকে আইনি সহয়তা দিতে এনজিও সংস্থ্যা গ্রহন করেছে।

ফেরত আসা কিশোরী রোকসনা জানান, তাকে ভাল কাজ দেওয়ার কথা বলে দালালরা ভারতে নেয়। পরে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে সে আটক হয়।৪ বছর জেল খেটে বাড়ি ফিরছে।

এনজিও সংস্থ্যা যশোর রাইটসের তথ্য ও অনুসন্ধ্যান কর্মকর্তা তৌফিকজ্জামান জানান, করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারী নিয়ম মানতে ফেরত আসার পর এসব নারী-পুরুষদেরকে ১৪ দিনের জন্য শেল্টার হোমে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে। পরে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এসময় কেউ যদি পাচারকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে চাই আইনী সহয়তা করা হবেও জানান তিনি।

এদিকে বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবি সমিতির যশোর শাখার আইনজীবি নাসিমা খাতুন বলেন, প্রতিবছর যে পরিমানে পাচার হয় তার মাত্র ৫ শতাংস উদ্ধার করা সম্ভব হয়। পাচারকারীদের হাত অনেক বিস্তৃত। পাচারের জন্য তারা বিভিন্ন জাইগায় তাদের লোক নিয়োগ করে। পরে সুবিধা বুঝে কখনো সীমান্ত পখে আবার কখনে পাসপোর্ট যোগে ভারতে নেয়। পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা দূর্বল আর বিচারের দির্ঘ সুত্রিতার কারনে পাচার কার্যক্রম দিন দিন বেড়ে চলেছে।

মানবাধিকার সংগঠন জাস্টিস এন্ড কেয়ারের যশোর শাখার কর্মকর্তা মুহিত হোসেন জানান, পাচার কারীদের বিরুদ্ধে সামাজিক ভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এবং জন সচেতনতা বাড়াতে পারলে প্রতিরোধ কিছুটা সম্ভব হবে।সরকারী,বেসরকারী ভাবে কর্মসংস্থান তৈরীর বিষয়েও গুরুত্ব বাড়ানো দরকার বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button