জেলার খবর

নোয়াখালীতে কাউন্সিলরের মারধরের ২ দিন পর ব্যবসায়ীর মৃত্যুর অভিযোগ

মোঃ ফখর উদ্দিন, নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ

নোয়াখালীতে কাউন্সিলরের মারধরের ২ দিন পর ব্যবসায়ীর মৃত্যুর অভিযোগ

পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে নোয়াখালীর হাতিয়া পৌরসভার কাউন্সিলর মো. আলী ওরফে সাহাব উদ্দিন ও তার ছেলে,ভাতিজার মারধরে আহত হওয়ার ২দিন পর এক ব্যবসায়ীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত মো.আবুল কালাম ওরফে বলি কালাম (৫১) উপজেলার হাতিয়া পৌরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ডের গুল্যাখালী গ্রামের মৃত মো. নুর উল্যার ছেলে।

মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে বাড়ি থেকে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এর আগে,শনিবার (২৪ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে হাতিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চৌমুহনী বাজারে তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

নিহতের বড় ছেলে তানভীর হাসান অভিযোগ করেন, হাতিয়া পৌরসভার চৌমুহনী বাজার সংলগ্ন একটি জমি এয়াজ বদল নিয়ে কাউন্সিলর সাহাব উদ্দিনের সাথে তাদের বিরোধ চলে আসছিল। সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে গত ১৯ জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে কাউন্সিলর সাহাব উদ্দিন (৬০) ও তার ছেলে হেমায়েত উল্যাহ (২৬) এবং মো.এরশাদ নামে এক ভাড়াটে সন্ত্রাসী অস্ত্রে শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমাদের বাড়িতে গিয়ে বেজায় গালমন্দ করে।

আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করার হুমকি দেয় এবং স্থানীয় চৌমুহনী বাজারে গেলে মারধর করে খুন,গুম করার হুমকি দেয়।পরে এ ঘটনায় গত ২০ জুলাই হাতিয়া থানায় আমার বাবা একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। যাহার নং ৮৫২।

এরপর গত ২৪ জুলাই সকাল ১১টার দিকে চৌমুহনী বাজারে সাহাব উদ্দিন কাউন্সিলরের নেতৃত্বে আমাকে মাথা পাটিয়ে দেয় এবং আমার বাবাকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে কাউন্সিলর ও তার ছেলে,ভাতিজা এবং ভাড়াটে সন্ত্রাসী এরশাদ। তানভীর আরও অভিযোগ করেন, এ ঘটনায় হাতিয়া থানায় মামলা করতে গেলেও ওসি আমাদের মামলা নেয়নি।

ওসি জানায় আমাদের মামলা নিতে উপর মহল থেকে বারণ আছে। উল্টো প্রভাবশালী কাউন্সিলরের মামলা নেয় ওসি। হামলাকারীরা স্থানীয় ভাবে প্রভাবশারী হওয়ায় গত ২দিন তাদের হুমকি ধামকিতে বাবা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যেতে পারেননি। একপর্যায়ে মঙ্গলবাল (২৭ জুলাই) বেলা সাড়ে ৩ টার দিকে বাবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।এটি পরিকল্পিত হত্যার ঘটনা বলেও তিনি দাবি করেন।

হাতিয়া পৌরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো.আলী ওরফে সাহাব উদ্দিন জানান, গত ২৪ জুলাই বেলা ১১টার দিকে চৌমুহনী বাজারে বলি কালাম ও তার ছেলের নেতৃত্বে আমার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার একই দিন বিকেলে বলি কালাম ও তার ছেলেসহ ৯জনকে আসামি করে হাতিয়া থানায় আমি মামলা দায়ের করি। হামলা করতে এসে বলি কালামের ছেলে তার হাতে থাকা লোহার রডে মাথায় আঘাত পায়। তিনি আরও দাবি করেন, বলি কালাম আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন।

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আবুল খায়ের ডাক্তারের বরাত দিয়ে জানান ব্যবসায়ী বলি কালাম ব্রেইন স্ট্রোক করে গেছে। তবে অভিযোগ উঠায় মঙ্গলবার রাতে হাসপাতাল থেকে মরদেহ থানায় এনে রাখা হয়। বুধবার দুপুরের দিকে ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।

ওসি আবুল খায়ের আরও বলেন, কাউন্সিলরের ওপর হামলার ঘটনায় বলি কালাম ও তার ছেলেসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে বলি কালামের মামলা না নেওয়ার অভিযোগ তিনি নাকচ করেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button