আরো...

চট্টগ্রামে ভবনের নিচে কয়েকশ মাটির কলসি!

চট্টগ্রামের কোতয়ালী থানার পাথরঘাটায় বহু পুরনো একটা ভবন সংস্কারের কাজ শুরু করলে ভবনের মাটির নিচ থেকে কয়েকশ মাটির কলসি বের হয়ে আসে।

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম বলেন, প্রায় আড়াইশো বছরের পুরনো ঐ ভবন সংস্কারের কাজ শুরু করা হয় গত সপ্তাহে। খনন কাজ শুরু করার পরেই এক এক করে অনেক মটকা (কলসি) বের হয়ে আসে।

তিনি বলেন, “অনেক ধরণের কোথা শোনা যায় এই ভবন নিয়ে। হাজি শরীয়তুল্লাহ সওদাগর নামে এক ব্যক্তির বাড়ি এটা। তিনি মিয়ানমার থেকে এখানে এসেছিলেন। এলাকার লোক এটাও বলে তিনি বাড়ি করার জন্য জাহাজে করে এই মটকা (কলসি) নিয়ে এসেছিলেন কিন্তু কেন বাড়ির নিচে রেখেছেন সে সম্পর্কে কেউ কিছু বলতে পারে না।”

এদিকে কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নিজামউদ্দিন বলছেন, ভবনটির নিচে কয়েকশ কলসি থাকার খবর আশেপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পরলে প্রতিদিন সেখানে দর্শনার্থীরা ভীড় করছেন।

“এসব মানুষের ভীড়ে যাতে করে কোন ক্ষতি না হয় তার জন্য পুলিশ মোতায়েন করা আছে। তারা ঐ এলাকা পাহারা দিচ্ছে,” জানান তিনি।

ভবনের নিচে কেন কলসি

পাথরঘাটার নজুমিয়া লেনের বাসিন্দা চন্দ্রা আকতার। তিনি বলছেন, বাড়ির নিচে কলসি রাখার কারণ প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে ভবনকে বাঁচানোর জন্য হতে পারে।

“আমার পূর্বপুরুষদের বলতে শুনেছি এভাবে ঘর বানালে সেটা যেকোন দুর্যোগ থেকে রক্ষা পায়। তবে আসলেই সেটা সত্যি কিনা জানিনা,” বলেন তিনি।

এদিকে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক স্নিগ্ধা আফসানা বলছিলেন, এগুলো মূলত ‘কালচারাল প্রেজুডিস’ বা ‘কালচারাল বিলিভ’। এর সঙ্গে ভবন নির্মাণের কোন যোগসূত্র নেই।

তিনি বলেন “আমরা একটা ভবন বানানোর ক্ষেত্রে প্রথমেই গুরুত্ব দিয়ে থাকি এর ফাউন্ডেশনকে। একটা প্রপার ফাউন্ডেশন, আর্কিটেকচারাল সঠিক ডিজাইনসহ আরো অনেক বিষয় রয়েছে যেটা একটা ঘরকে বা ভবনকে শক্ত করে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করার জন্য অনেক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।”

“মাটির কলসির বিষয়টা অনেকটা এমন যে, আজ থেকে কয়েকশ বছর আগের মানুষের একটা বিশ্বাস ছিল গুরুত্বপূর্ণ নথি বা অর্থ তারা মাটির নিচে রেখে দিত। আবার অনেকে পরকালের কথা চিন্তা, নিজস্ব বিশ্বাস থেকে নানা কর্মকাণ্ড করতো। সেসবের সাথে ভবনের সুরক্ষার কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই”।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button