শিক্ষাঙ্গন

বিকল্প মূল্যায়নে এসএসসি-এইচএসসির ফল মূল্যায়ন

করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতায় এসএসসি ও এইচএসসি সমমানের পরীক্ষার পরিবর্তে বিকল্প পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করে ফল ঘোষণার দিকেই হাঁটছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। যদিও কিভাবে মূল্যায়ন হবে তা এখনো নিশ্চিত হয়নি। তবে মূল্যায়ন যাই হোক প্রতিবেশী দেশগুলোর অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো হবে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘কোনো না কোনো মূল্যায়ন তো হবেই। শিক্ষার্থীরা যেন লেখাপড়া করে। সংক্ষিপ্ত যে সিলেবাস দেওয়া হয়েছে তা বাড়িতে বসেই পড়ে ফেলা সম্ভব। পরিকল্পনা ছিল সংক্ষিপ্ত সিলেবাস পড়িয়েই শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া হবে। যদি পড়ানো না যায়, তা হলে অ্যাসাইনমেন্ট করা হচ্ছে, সেটা করেই মূল্যায়নে যাবো, নাকি এসএসসির ওপর ভিত্তি করে এইচএসসির মূল্যায়ন করবো? তাহলে এসএসসির কী হবে? এ ক্ষেত্রে অষ্টম শ্রেণির মূল্যায়ন শুধু পাবো। কীভাবে মূল্যায়নটা হবে সে বিষয়ে শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেবো।’

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, ‘পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। তবে যদি পরীক্ষা না নিতে পারি সেই চিন্তা করে বিকল্প মূল্যায়ন কীভাবে করা যায় তা নিয়ে আমরা কাজ করছি।’

অ্যাসাইনমেন্টের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে কিনা জানতে চাইলে ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, ‘সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের ভিত্তিতে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল। সে কারণে ২০২১ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট করানো হয়নি। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির জন্য অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছে। ২০২২ সালের এসএসসি এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছে।’

গত ৪ ফেব্রুয়ারি স্বাক্ষরিত অফিস আদেশসহ পরদিন ৫ ফেব্রুয়ারি এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রকাশ ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। এর আগে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি পুনর্বিন্যাস করে শিক্ষা বোর্ডগুলোতে পাঠায়।

সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রকাশের পর করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় পরীক্ষা না নেওয়া গেলে মূল্যায়নের দিকে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেছিলেন, ‘সংক্ষিপ্ত সিলেবাস পড়িয়েই পরীক্ষা নেওয়া হবে। যদি পরীক্ষা না নেওয়া যায় তখন বিকল্প মূল্যায়নের কথা চিন্তা করবো। এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি।’

সংক্ষিপ্ত এই সিলেবাস পড়িয়ে পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা থাকায় এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট করানো হয়নি। যদিও করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সময় ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সাপ্তাহিক অ্যাসাইনমেন্ট শুরু করা হয়। এ কারণে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমেও মূল্যায়নের কোনও সুযোগ নেই।

এই পরিস্থিতিতে কীভাবে মূল্যায়ন করা যেতে পারে তা নিয়ে আলোচনায় বসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তথ্য উপাত্তও সংগ্রহ করে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী কয়েকটি দেশের চিত্র বিশ্লেষণ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এসব তথ্যের মধ্যে রয়েছে গত ১ জুন ভারতের কেন্দ্রীয় শিক্ষা বোর্ড দ্বাদশ শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষা স্থগিত করেছে। এক্ষেত্রে বিকল্প উপায়ে মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভারতে অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন, প্রজেক্ট ও ব্যবহারিক পরীক্ষার ক্ষেত্রে বহিঃপরীক্ষক নিয়োগ করা হবে। বহিঃপরীক্ষক অনলাইনে মৌখিক পরীক্ষা নেবেন। যে সকল শিক্ষার্থীর বিকল্প মূল্যায়নে আপত্তি থাকবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগও থাকবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button