মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা করায় কপিলমুনি প্রেসক্লাবে শ্রীরামপুর গ্রামবাসীর সংবাদ সম্মেলন
এ কে আজাদ, পাইকগাছা উপজেলা প্রতিনিধি-(খুলনা)
মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা করায় কপিলমুনি প্রেসক্লাবে শ্রীরামপুর গ্রামবাসীর সংবাদ সম্মেলন
খুলনার পাইকগাছা উপজেলার নগর শ্রীরামপুর গ্রামে জমি জবর দখল ঘটনায় দখলদার রফিকুল কর্তৃক গ্রামবাসীকে মারপিট, নিরীহ ব্যাক্তিদের নামে মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা করে হয়রানীর ঘটনায় কপিলমুনি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী গ্রামবাসী। শনিবার দুপুরে উপজেলার নগর শ্রীরামপুর গ্রামবাসী সম্মিলিতভাবে কপিলমুনি প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনে করেন।
সংবাদ সম্মেলনে গ্রামবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তব্যে প্রবীণ আ’লীগ নেতা মোঃ মঈনুউদ্দিন হাজরা বলেন, সোনাতনকাঠী গ্রামের শেখ রফিকুল ইসলাম নাছিরপুর গ্রামের শেখ আবুল হেসেনের নিকট থেকে শ্রীরামপুর মৌজায় একটি একতলা ভবন ক্রয় করে।
সেই থেকে রফিকুল স্বপরিবারে এই বাড়িতে প্রায় ছয় বছর বসবাস করে আসছে। তার বাড়িটির সীমানা বরাবর অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী লাভলু হোসেনের মূল্যবান জায়গাটির প্রতি হঠাৎ লোলুপ দৃষ্টি পড়ে তার। লাভলু হোসেন ও তার পরিবার বিদেশ থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জমিটি দখলে নেয়ার পরিকল্পনা করে রফিকুল।
সে অনুযায়ী ২০২০ সালের ৩ ফ্রেরুয়ারী জমিটির বেশ কিছু অংশ ঘেরাবেড়া দিয়ে দখল করে নেয় রফিকুল। তবে প্রবাসী লাভলুর ভাতিজা মঈনুদ্দিন হাজরা ও কেয়ার টেকার শাহিন হাজরা সহ গ্রামবাসীরা তার অবৈধ ঘেরাবেড়া অপসারণ করতে গেলে ভুমিগ্রাসী রফিকুল তাদেরকে মারপিট সহ ফোলা জখম করে। ঘটনার পর ধুর্ত রফিকুল উল্টো হয়রানির জন্য গ্রামের কয়েকজন নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করে।
শুধু তাই নয়, এরপর মিথ্যা হুমকির অভিযোগ এনে একটি জিডিও করে। যার নাং ৪৪৯, তারিখ ১০/০৬/২১। এহেন মিথ্যা মামলার কারণে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। মামলাটির পুন তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির জন্য বিভাগীয় রেঞ্জ ডিআইজি সহ জেলা পুলিশ সুপারের হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন গ্রামবাসী।
ঘটনার বিবরণে লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, প্রায় ১৬ মাস পর বর্তমান লকডাউন ও চলমান মিথ্যা মামলার মোক্ষম সুযোগে রফিকুল গত-৩ জুলাই গভীর রাতে ১০/১২ জন বহিরাগত লোক দিয়ে কংক্রিটের পিলার ও লোহার তারের সাথে বাঁশের চটার বেড়াদিয়ে প্রায় ৩ শতক মূল্যবান জমি জবর দখল করে নেয়।
যার মূল্য প্রায় ১২ লক্ষ টাকা। এ ঘটনার পরদিন সকালে ঘেরাবেড়া দেখে আমি সহ গ্রামবাসী অবৈধ ঘেরাবেড়া অপসারণ করতে গেলে রফিকুল তার ভাই শাওন মুছা সোনাতনকাঠী গ্রামের শেখ আল আমিন সহ আরও ৩/৪ জন অজ্ঞাত ব্যাক্তি দা, শাবল, লোহার রড ও লাঠি নিয়ে আমাদের উপর হামলা করে। এতে আমি সহ আমার স্ত্রী এবং গ্রামের বিল্লাল হাজরা, শাহিন হাজরা ও শিউলী বেগম আহত হলে গ্রামবাসী ধাওয়া করলে তারা পালিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, একদিকে রফিকুল অবৈধ ভাবে জমি দখল করে গ্রামবাসীর কয়েকজনকে আহত করেছে আবার গ্রামের ৫ জন নিরীহ ব্যাক্তির বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা করে। ৩ জুলাই দিবাগত রাতের বেলায় হরিঢালী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই আইয়ুব ঘটনার তদন্তে ঘটনাস্থলে আসলে প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য শুনে রফিকুলের অভিযোগের কোন সত্যতা না পেলেও গত ৫ জুলাই আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাটি পাইকগাছা থানায় রেকর্ড হয় এবং ওই দিন রাতেই এস,আই আইয়ুব আলী আমাদের গ্রেফতারের জন্য বাড়িতে বাড়িতে হানা দেয়।
এদিকে মামলা হওয়ার পরদিন আমরা আদালতে শরনাপন্ন হলে বিজ্ঞ উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট আমাদের সবাইকে জামিন মঞ্জুর করেন। তিনি আরও বলেন, মামলার প্রধান আসামী ঘটনার দিন বাড়িতে না থাকলেও তাকে আসামী করা হয়। মিথ্যা মামলার কারণে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। মামলাটির পুন তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির জন্য বিভাগীয় রেঞ্জ ডিআইজি সহ জেলা পুলিশ সুপারের হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন গ্রামবাসী।