জেলার খবর

রূপগঞ্জে জুস কারখানাটি পরিদর্শন করতে আসেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নো জাহান সুফিয়ান ও মন্ত্রী গাজী

সাহাদাৎ হোসেন শাহীন, জেলা প্রতিনিধি-(নারায়ণগঞ্জ)

রূপগঞ্জে জুস কারখানাটি পরিদর্শন করতে আসেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নো জাহান সুফিয়ান ও মন্ত্রী গাজী

নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জে কর্ণগোপ এলাকা জুস কারখানার আগুন লাগার ঘটনার পরের দিন শুক্রবার সন্ধা ৬ টার দিকে কারখানা পরিদর্শন করতে আসেন।

মাননীয় শ্রম প্রতি মন্ত্রী মুন্নো জাহান সুফিয়ান। কাউছার আহমেদ পলাশ জাতীয় শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক,ও সভাপতি ইউনাইটেড গার্মেন্টস ফেডারেশন ওয়ার্কার ,শাহ মোবারক হোসেন খান শাহীন,ইউনাইটেড গার্মেন্টস ফেডারেশন ওয়ার্কার রূপগঞ্জ উপজেলা ,সরদার আমজাদ হোসেন ভুইঁয়া ইউনাইটেড গার্মেন্টস ফেডারেশন ওয়ার্কার কার্যকরি সভাপতি রূপগঞ্জ উপজেলা, শাহ নুছরাত জাহান (ইউএনও) নির্বাহি কর্মকর্তা উপজেলা, এসপি জাহেদুল হাসান নারায়ণগঞ্জ,
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতি মন্ত্রী সুফিয়ান বলেন।

এখানে শিশু শ্রমিক যদি কেউ থেকে থাকে প্রমাণ পেলে কঠোর অবস্থানে যাবে প্রশাসন অপরাধীদের দোষী সাব্যস্ত করে তাদের আইনের আওতাধীন আনা হবে সে যত বড়ই হোক কোনো ছাড় পাবেন না, শ্রমিক নিহত ৫৬ জন আহত শতাধিক।

তদন্ত পর্যবেক্ষণ চলছে বিস্তারিত আরো জানা যাবে তিনি আরো বলেন, আপনারা রানা প্লাজার ঘটনা অবশ্যই মনে রাখছেন তাকেই আইন দোষী সাব্যস্ত করে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দিচ্ছে, আমি তখনও প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনে কর্মরত ছিলাম তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে আদালত শাস্তি মেয়াদ দিয়ে তারা হাই কোর্টে থেকেও জামিন নেবার জন্য চেষ্টার কমতি রাখেনি আমরা কোনও সুযোগ দেইনি, জুস কারখানায় ভয়াবহ আগুনের বহু প্রাণহানীর ঘটনা ঘটছে, আমরা প্রত্যেকেই ৫০ হাজার করে দিয়ে যাবো।

তদন্তে পুলিশ, ডিবি, সিআইডি, র‌্যাব সহ প্রশাসন জোরালোভাবে কাজ করে যাচ্ছে অপরাধী প্রমাণিত হলে কোনো ছাড় পাবে না তিনি সাংবাদিকদের এইসব কথা জানান।

জুস কারখানাটিতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ভয়াবহ আগুন লাগা কারাখানা থেকে একের পর এক লাশ বের করা হচ্ছে। নিহতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৫৩ ছাড়িয়েছে।

এর আগে দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনে ৫সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম বেপারীকে আহবায়ক করে পাচঁ সদস্যবিশিষ্ট এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এদিকে নিহত ৫২ জনের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজে নেয়া হচ্ছে। নিখোঁজদের খোঁজে স্বজনরা ভির করছে কারখানা বাহিরে নিখোঁজদের ফটো হাতে নিয়ে। নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস প্রশাসন।

আজ শুক্রবার সকালেও কারখানার চারতলায় আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। এর আগে ৭০ থেকে ৮০ জন শ্রমিক এখনও ওই ভবনের ভেতরে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন অন্যান্য শ্রমিক ও নিখোঁজের স্বজনরা।শ্রমিকদের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ছয়তলা ভবনটির মধ্যে চতুর্থতলার শ্রমিকরা কেউ বের হতে পারেননি। সিকিউরিটি ইনচার্জ চারতলার কেচি গেটটি বন্ধ করে রাখায় কোনো শ্রমিকই বের হতে পারেননি। সেখানে ৭০ থেকে ৮০ জন শ্রমিক কাজ করতেন।

এদিকে আজ সকালে কারখানার আগুন নেভাতে দেরির অভিযোগ করে একটি ভবনে ভাঙচুর করেছেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। আগুনে পুড়ে যাওয়া ভবনের পাশের ভবনটিতে শুক্রবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে তারা ভাঙচুর চালান। ওই সময় ওই ভবনের কাছে সড়কে প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেলসহ ১০ থেকে ১২টি গাড়িও ভাঙচুর করেন তারা। লাঠি হাতে থাকা বিক্ষুব্ধ লোকজন ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবোরধ করতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেন। ওই সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে।

কারখানা সূত্রে জানা গেছে, ছয় তলার কারখানাটির প্রতিটি তলায় একটি করে সেকশন রয়েছে। প্রতিটি সেকশনে একটি করে প্রবেশ ও বের হওয়ার গেট রয়েছে। তিন শিফটে ২৪ ঘণ্টায় কারাখানটিতে বিস্কিট, চকোলেটসহ নানা রকম খাদ্যদ্রব্য তৈরি হয়। প্রতি শিফটে শ্রমিক ঢোকার পর সেকশনের কেচি গেট বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। শিফট শেষ হওয়ার পর গেট খোলে কর্তৃপক্ষ।

শ্রমিকরা অভিযোগ করে বলেন, কারখানার নিচে গোডাউনের কার্টুনে আগুন লাগার বিষয়টি ওপরে কর্মরত অনেক শ্রমিকই জানতেন না। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে আগুন গোটা বিল্ডিংয়ে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় শ্রমিকরা বাঁচার জন্য দৌড়াদৌড়ি শুরু করে। কিন্তু আগুন লাগার পরেও কর্তৃপক্ষ সেকশনে থাকা কেচি গেট খুলছিল না। ফলে অনেক শ্রমিক জীবন বাঁচানোর জন্য বিল্ডিং থেকে লাফ দিয়ে নিচে পড়েন। এ সময় দুই শ্রমিক মারা যান।

তারা আরও অভিযোগ করেন, কেচি গেট বন্ধ থাকায় প্রথমে শ্রমিকরা বের হতে পারেননি। পরে আগুনের ব্যাপকতা বেড়ে যাওয়ায় শ্রমিকদের চিৎকার চেচামেচিতে কেচি গেট খুলে দেয় কর্তৃপক্ষ। ফলে অনেক শ্রমিক বের হতে পেরেছিলেন আরও অনেকে ভেতরে আটকা পড়েন।

হৃদয় নামের এক শ্রমিক অভিযোগ করে বলেন, আমি চার তলার সেকশনে কাজ করছিলাম। আগুন লাগার পর আমরা ভেতরে থেকে বের হতে পারছিলাম না গেট বন্ধ থাকায়। পরে আগুন বেড়ে গেলে গেট খুলে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে আগুন সেকশনে চলে আসায় অনেক লাফ দিয়ে নিচে পড়েন জীবন বাঁচাতে। আবার আগুনের ধোঁয়ার কারণে অনেককে সেকশনে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকতেও দেখেছি।মো. রাব্বানী নামে আরেক শ্রমিক জানান, যদি সময় মতো কেচি গেট খুলে দেওয়া হতো তাহলে আমরা সবাই বেরিয়ে আসতে পারতাম। কিন্তু কেচি গেট বন্ধ থাকায় আমরা শুরুতে বের হতে পারিনি। পরে গেট খুলে দেওয়া হলেও আমার ধারণা ৩০-৪০ জন শ্রমিক বের হতে পারেননি।

আগুনে পুরে লাশ কঙ্কাল হয়ে গিয়েছে কারখানা লাশের চিতায় পরিনিত হয়ে গিয়েছে, ভিতরে শুধু লাশের পুরা গন্ধ আর কালো ধোঁয়ার গ্যাস। বিষাক্ত ক্যামিক্যাল প্লাস্টিক পুরে সব শেষ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button