জেলার খবর

বেনাপোলে কিডনি পাচারকারী চক্রের সদস্য আটক, উদ্ধার পাচারের শিকার যাত্রী

যশোর প্রতিনিধিঃ

বেনাপোলে কিডনি পাচারকারী চক্রের সদস্য আটক, উদ্ধার পাচারের শিকার যাত্রী

কিডনি ট্রান্সফারের জন্য বেনাপোল দিয়ে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্য আনা এক পাসপোর্ট যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে ও উক্ত কিডনি পাচারের সাথে জড়িত থাকায় পাচারকারী চক্রের এক সদস্যকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) সকাল ১১টার সময় বেনাপোল ইমিগ্রেশনে প্রবেশের সময় বিজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে। এসময় আর্মড পুলিশের সদস্যরা বিজিবিকে সহযোগিতা করেন।

কিডনি পাচারের শিকার ভুক্তভোগি পাসপোর্ট যাত্রী সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি থানার ঢুকুরিয়াবেড়া গ্রামের ইদ্রিস আলী মন্ডলের ছেলে মোহাম্মাদ ইউনুছ আলী। তার (পাসপোর্ট নং-ইএম-০৭৪৮৫৮৫)।

আর পাচারকারী গাজিপুর জেলার আনিছুর রহমান।

এসময় ইউনুছের ল্যাগেজ থেকে কুমিল্লা জেলার বল্লভপুর গ্রামের বাবুল মিয়ার মেয়ে রুনা বেগম (পাসপোর্ট নং-এ-০০৫৪৭৮৮৮) নামে এক নারীর পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়।
কাজের প্রলোভন দেখিয়ে ইউনুছ নামে ওই যাত্রীকে আনিছুর ভারতে পাচার করছিল কিডনি সংগ্রহের জন্য।
তবে ইউনুছের সাথে এক বছরের চুক্তি হয় ভারতে কাজ করলে তাকে ৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা দেওয়া হবে বলে।

ভুক্তভোগি ইউনুছ আলী বলেন, আমাকে এক বছরে ৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার কাজের চুক্তিতে ভারত পাঠাবে বলে আনিছুরের সাথে চুক্তি হয়। এরপর আমি জানতে পারি যে, আমার শরীর থেকে কিডনি পাচার করা হবে। আমি গত বুধবার রাতে ভারত যেতে রাজী না হলে, আমাকে ঢাকায় একটি আবাসিক ভবনে মাথায় পিস্তল ঠেকানো হয়। তারপর সেখান থেকে আজ ঢাকা থেকে বিমানে করে যশোর আনা হয় আমাকে। যশোর থেকে প্রাইভেট কারে করে বেনাপোল নিয়ে আসলে আমি বিজিবিকে দেখে এগিয়ে গিয়ে ঘটনা খুলে বলি।

ওই নারীর পাসপোর্ট আপনার কাছে কেন জানতে চাইলে, সে বলে আনিছুর এটা আমার কাছে দিয়েছে ভারতে যেখানে যাব তাদের কাছে দিতে। তবে ভারতে আমাকে যেখানে পাঠাবে সেখানে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভারতীয় লোকেরা বেনাপোলের ওপারে পেট্রাপোল চেকপোষ্টে অপেক্ষা করছে, আমাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য।

ইউনুসের পিতা ইদ্রিস আলীকে মোবাইল ফোনে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, তার ছেলে ঢাকায় একটি গার্মেন্টস শিল্প কারখানায় চাকরী করে। তাকে ভারতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবিষয়ে আমি কিছু জানি না।

পাচারকারী আনিছুর রহমান বলেন, তার সাথে তার কোম্পানির লোকের কিডনি দেওয়া বাবদ চুক্তি হয় উক্ত টাকায়। সে মোতাবেক তাকে আমি বেনাপোল এগিয়ে দেওয়ার জন্য নিয়ে এসেছি। তাদের ঢাকা মিরপুর ২ নং অফিস। তবে তিনি অফিসের নাম বলেননি।

এদিকে উদ্ধারকৃত পাসপোর্টধারী রুনা বেগমের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমি দরিদ্র মানুষ। আমি ফেসবুকে বাংলাদেশ কিডনি ডোনার সংস্থ্যা নামে একটি বিজ্ঞাপন দেখে তাদের সাথে যোগাযোগ করি। এই যোগাযোগের মধ্যে আমার নিকট থেকে আমার পাসপোর্টটি নেয় ইউনুছ আলী। এরপর থেকে সে আমার ফোন আর সে ধরে না। আমি আমার পাসপোর্টটি ফিরে পেতে চাই।

বেনাপোল চেকপোষ্ট বিজিবি সুবদোর আশরাফ আলী বলেন, এটা তদন্ত চলছে সিও সাহেবের নির্দেশে। সে কিডনি পাচারের সাথে সম্পৃক্ত থাকলে তাকে মামলা দিয়ে থানায় সোপর্দ করা হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button