জেলার খবর

ধামরাইয়ে গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপদাহে তালের শাঁসের চাহিদা ও বিক্রি বেড়েছে

রনজিত কুমার পাল (বাবু) স্টাফ রিপোর্টারঃ

ধামরাইয়ে গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপদাহে তালের শাঁসের চাহিদা ও বিক্রি বেড়েছে

ঢাকার ধামরাইয়ে গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে, প্রচন্ড গরমে মানুষ হাঁসফাঁস করছে।
গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপদাহ থেকে একটু স্বস্তি পেতে মানুষ নানা রকম ফলমূল খাচ্ছে। এসব ফলের তালিকায় সর্বাধিক গুরুত্ব পাচ্ছে তালের শাঁস। সুস্বাদু ফল তালের শাঁস দেহ ও মনকে সতেজ নির্মল রাখে।

গ্রীষ্মের প্রচন্ড গরমে একটু স্বস্তি পেতে তালের শাঁস কিনে নিচ্ছেন বিভিন্ন বয়সের মানুষ। শিশু -কিশোর থেকে শুরু করে আবাল-বৃদ্ধ সবার পছন্দের তালিকায় রয়েছে যে ফলটি তা হলো তালের শাঁসের। কচি তালের শাঁস প্রচন্ড গরমের তাপদাহে সকল বয়সের মানুষকে তৃপ্তি দেয়।
গ্রীষ্মের সময় ধামরাইয়ের এতদ্ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় মানুষের কাছে তাল একটি সুস্বাদু, রসাল ঠান্ডা প্রকৃতির জনপ্রিয় ফল।

এ-কারণে ধামরাই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভার হাট বাজার ও পৌররশহরের পাড়া মহল্লায় ভ্যানে তাল সারিবদ্ধ ভাবে সাজিয়ে বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে।

তালের শাঁস পছন্দ করে না এমন লোক খুঁজে পাওয়া দুস্কর। তাছাড়া পুষ্টি গুণে ভরা মানব দেহের জন্য উপকারী তালের শাঁস।গরমে মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয় ফল তাল।পাশাপাশি মৌসুমি ফল হিসেবে তালের শাঁস গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখছে। যদিও কালের বিবর্তনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামাঞ্চল এলাকায় কমে যাচ্ছে তালের গাছের সংখ্যা।

ধামরাই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন এর হাট বাজার সহ ধামরাই পৌরসভার বাজার,বড়বাজার,ইসলামপুর,চন্দ্রাইল,ঢুলিভিটা,ও হাটবাজারে সারি সারি সাজানো কচি তাল,তাছাড়া ভ্যানে সারিবদ্ধ ভাবে সাজিয়ে রেখে তাল বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে। তবে খুচরা বিক্রেতারা চড়া দামে তাল বিক্রি করছে।

তালের শাঁস বিক্রেতা মোঃ বাচ্চু মিয়াকে চড়া দামে তাল বিক্রি বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তালের শাঁস বিক্রেতা বাচ্চু বলেন এবার পাইকারি বিক্রেতাদের কাছ থেকে চড়া দামেই তাল কিনতে হচ্ছে যার কারণে আমাদেরও বেশি দামে তাল বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি বলেন ১৫ – ২০ টাকায় প্রতি তাল বিক্রি হচ্ছে, আকারে বড় হলে ২০-২৫ টাকার প্রতিটি তাল বিক্রি করছি, তা দিয়ে আমাদের সংসার মোটামুটি ভালো চলছে। যে প্রচন্ড গরম পড়ে তাতে তালের শাঁস লোকজন ভালোই খাচ্ছেন। প্রতিদিন ২০০০-২৩০০ টাকার তালের শাঁস বিক্রি করি এতে প্রায় ৭০০-৮০০ টাকা লাভ থাকে।

তালের শাঁস ক্রেতা শিশির বলেন অসহ্য গরমের স্বস্তির একমাত্র ফল হচ্ছে তালের শাঁস।মানুষ ফরমালিন মুক্ত যে ফলটি পায় সেটি হলো তালের শাঁস।তালের শাঁস মধু মাসের ঠান্ডা প্রকৃতির একটা ফল। বাড়ির ছোট থেকে বড় পর্যন্ত বায়না ধরেছে তালের শাঁসের জন্য তাই কিনতে এসেছি।

এ’বিষয়ে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাঃ নূর রিফফাত আরা বলেন তাল ফল যেমন সুস্বাদু অন্যদিকে কচি তালের শাঁসে জলীয় অংশও বেশি থাকে,যা দেহের পানিশূণ্যতা অনেকটা পূরণ করে।তালের শাঁসে থাকা উপকারী উপাদান লিভার সমস্যা ও রক্তশূণ্যতা দূরীকরণে ভূমিকা রাখে। এতে থাকা ভিটামিন-এ দৃষ্টি শক্তির উন্নতি করে।

ধামরাইয়ের ঐতিহ্যবাহী সামাজিক সংগঠন তরঙ্গ ক্লাব এর সভাপতি ডাঃ অজিত কুমার বসাক বলেন আমার জানামতে ধামরাই উপজেলায় বানিজ্যিক ভাবে তাল গাছের তেমন কোন বাগান নেই।সাধারণত বাড়িতে বা বাড়ির আশেপাশে মানুষ তাল গাছ রোপন করে থাকে।এবার তালের ফলন বেশি হয়েছে বলে লোকমুখে শোনা যাচ্ছে। নতুন নতুন গাছ থেকে তাল সংগ্রহ করা হচ্ছে। এখন বজ্রপাত থেকে বাঁচতে বা রোধ কল্পে বিভিন্ন রাস্তার ধারে ও খালের পাড়ে তাল গাছ রোপন করা খুবই জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তাই মিডিয়ার মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসনের নিকট তাল গাছ রোপনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আবেদন জানাচ্ছি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button