দেশের বিভিন্ন স্হানে হিন্দু নির্যাতন ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন উত্তর বাড়ী ঘর ভাংচুর নির্যাতনের প্রতিবাদে মানব বন্ধন ও বিক্ষোভ
রনজিত কুমার পাল (বাবু) স্টাফ রিপোর্টারঃ
দেশের বিভিন্ন স্হানে হিন্দু নির্যাতন ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন উত্তর বাড়ী ঘর ভাংচুর নির্যাতনের প্রতিবাদে মানব বন্ধন ও বিক্ষোভ
শুক্রবার ( ৭ মে-২০২১ খ্রীস্টাব্দ) সকাল ১১ টায় বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট ভোলায় দুই সহোদর ভাই তপন সরকার ও দুলাল সরকারকে নৃশংসভাবে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা, ঝিনাইদহের শৈলকুপায় রেখা রাণীকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা, বিভিন্ন স্থানে জমি দখল, মারধর, প্রতিমা ভাংচুর, ধর্মান্তর, ধর্ষন এবং ভারতের পশ্চিম বাংলায় নির্বাচন পরবর্তী হিন্দুদের বাড়ীঘরে ব্যাপক হামলা, ভাংচুর অগ্নি সংযোগ, লুঠপাট ধর্ষন ও খুনের প্রতিবাদে এবং কেন্দ্রীয় সরকারের হস্থক্ষেপ এর দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডঃ দীনবন্ধু রায় এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি প্রদীপ কুমার পাল, প্রধান সমন্বয়কারী বিজয়কৃষ্ণ ভট্টাচার্য, মহাসচিব অ্যাডঃ গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডঃ লাকি বাছাড়, আর্ন্তজাতিক সম্পাকদ নরেশ হালদার, প্রকাশনা সম্পাদক সাগরিকা মন্ডল, হিন্দু স্বেচ্ছাসেবক মহাজোটের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তাপস বৈরাগী, সাংগঠণিক সম্পাদক তুলন চন্দ্র পাল, দপ্তর সম্পাদক চয়ন বাড়ৈ, ঢাকা মহানগর হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী সভাপতি অখিল বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ, হিন্দু যুব মহাজোটের সভাপতি প্রদীপ শঙ্কর, সাধারণ সম্পাদক মৃণাল মধু, প্রধান সমন্বয়কারী প্রশান্ত হালদার, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক সুজন গাইন, হিন্দু ছাত্র মহাজোটের সভাপতি সাজেন কৃষ্ণ বল, সাধারণ সম্পাদক তপু কুন্ড,ু প্রচার সম্পাদক রনি রাজবংশী, অনিক পোদ্দার, সুমন কর্মকার, তাপস হালদার, দীলিপ মন্ডল, সাগর চন্দ্র বর্মন, বিধান সরকার অর্ঘ্য, নয়ন কুমার বিশ্বাস প্রমূখ।
বক্তাগণ বলেন করোনা দুর্যোগের মধ্যেও দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের স্বস্তি নেই। ভোলায় দুই সহোদর ভাই তপন সরকার ও দুলাল সরকার তাদের জমি বিক্রির টাকা চাইলে ভূমি দস্যুরা তাদেরকে আগুনে পুড়িয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। ঝিনাইদহের শৈলকুপায় রেখা রাণীকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
জমি দখলে বাধা দেওয়ায় লালমনিরহাটে হারাধন রায় ও তার স্ত্রী স্মৃতিরাণীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে। শরিয়তপুরে মিলন মন্ডল, নোয়াখালীর হাতিয়ায় কেশব বাবু, সুবর্ণচরে উৎপল মজুমদার, বগুড়ায় নিখিল চন্দ্র বর্মন, চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ৩ সন্তানের জননীকে ধর্ষন, নব করুনাপুর বন বিহার ভাংচুর ও ভান্তে সহ ৪ জনকে পিটিয়ে জখম, ঝালকাঠীতে পানের বরজ পুড়িয়ে ছাই করা হয়েছে।
শরিয়তপুরের অপু চন্দ চন্দ ও শিশির চন্দ্রের বাড়ীতে ও মন্দিরে চিঠি দিয়ে চাঁদা দাবী, অন্যথায় ভারত পাঠানোর হুমকী, কক্সবাজারে ঈদগাও এলাকায় হামলা ও ৩০ জনকে আহত, সিরাজগঞ্জে মন্দিরের জায়গা দখল করে টয়লেট স্থাপন, কুমিল্লায় ইভটিজিংয়ে বাধা দেওয়ায় পিতা আহত, ময়মনসিংহ ও দিনাজপুরে মন্দিরে হামলা ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ, হবিগঞ্জে ৯টি বাড়ী ভাংচুর, বোয়ালমারীতে শ্মশানের জায়গা দখল করে প্রাচীর নির্মান সহ শতাধিক ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার আসামীদের মানবতা বিরোধী অপরাধ ট্রাইবুনালে বিচার করে শাস্তি দাবী করেন।
সুনামগঞ্জের শাল্লায় মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত ঝুমন দাস আপন সহ মিথ্যা ধর্ম অবমাননার অযুহাতে গ্রেফতারকৃত সকলের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার দাবী করেন।
বক্তাগণ আরো বলেন সম্প্রতি ভারতের পশ্চিম বাংলায় নির্বাচন পরবর্তী হিন্দুদের শত শত বাড়ীঘরে ব্যাপক হামলা, মন্দির ভাংচুর, অগ্নি সংযোগ, লুঠপাট ধর্ষন ও ধর্ষনের পর হত্যা, এবং খুনের ঘটনা ঘটেছে। ঘরে অগ্নি সংযোগে একটি ৮/৯ বছরের বালক পুড়ে অঙ্গারে পরিনত হয়েছে। ব্যপক হামলায় হাজার হাজার মানুষ পার্শ্ববর্তী আসাম রাজ্যে গিয়ে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।
এতবড় মানবতাবিরোধী ন্যক্কারজনক ঘটনায় কোন বিবেকবান মানুষ বিচলিত না হয়ে পাড়ে না, প্রতিবাদ না করে পারে না। একসময় বাংলার এই হিন্দুরা একটু শান্তিতে বসবাস করার জন্য এদেশ ছেড়ে ভারতে গিয়েছিলো। কিন্তু ৭০% হিন্দুর দেশে গিয়েও হিন্দুরা সেখানে স্বস্তিতে নেই। আক্রান্ত হয়ে শত শত মানুষ ঘরে ফিরতে পারছে না। মানুষকে রাস্তায় নাজেহাল করা, অপমান করার ঘটনায় মানুষ আতঙ্কের মধ্যে দিন যাপন করছে।
নারী, শিশু ও অসহায় হিন্দুর কান্নায় পশ্চিম বাংলার আকাশ বাতাস আজ ভারী হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট পশ্চিম বাংলার এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় হস্তক্ষেপ, গুন্ডাদের শাস্তি এবং পশ্চিম বাংলার হিন্দুদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র দামোদর মোদীর হস্থক্ষেপ দাবী করেন।