জেলার খবর

যৌতুকের বলি হলেন গৃহবধূ শিল্পী

সাদ্দাম উদ্দীন রাজ, নরসিংদী প্রতিনিধিঃ

যৌতুকের বলি হলেন গৃহবধূ শিল্পী

মাত্র দেড়মাস আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছিল শিল্পী রানী দাসের(১৯)। চলতি বছরের ২১ ফেব্রুয়ারিতে বি-বাড়ীয়া জেলার নবীনগর উপজেলার প্রদীপ চন্দ্র দাসের মেয়ে শিল্পী রানী দাসের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় নরসিংদীর পলাশ উপজেলার জিনারদী ইউনিয়নের জিনারদী গ্রামের বিমল দাসের ছেলে শ্যামল দাসের।

বিয়ের সময় ছেলের পরিবারকে এক লাখ ১০ হাজার টাকা যৌতুক ও এক ভরি স্বর্ণালংকার দেয়ার কথা ছিল মেয়ের পরিবারের। কিন্তু মেয়ের পরিবার বিয়ের আগের দিন ছেলে পক্ষকে এক লাখ টাকা ও আধাভরি স্বর্ণালংকার দিতে সক্ষম হলেও বাকি আধাভরি স্বর্ণ ও ১০ হাজার টাকা দিতে অক্ষম হয় তারা।

ফলে বিয়ের সাপ্তাহখানেক পর থেকেই নববধূ শিল্পী রানীর ওপর শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন। স্বামীর পরিবার থেকে প্রতিনিয়ত এমন অমানবিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে নববধূ শিল্পী রানী তার পরিবারকে একাধিকবার ফোন করে জানিয়েছে যেনো খুব দ্রুত বর পক্ষকে তাদের দাবিকৃত যৌতুকের বাকি টাকা ও স্বর্ণালংকার যেন দিয়ে দেয়া হয়।
কিন্তু মেয়ের পরিবার কিছুতেই যৌতুকের বাকী টাকা ও স্বর্ণালংকার দিতে পারছিল না।

তাই তারা বিনয়ের সঙ্গে ছেলে পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়ে ৬ মাসের সময় চেয়েছিল যৌতুকের টাকা ও স্বর্ণ পরিশোধ করার জন্য। কিন্তু পাষণ্ড স্বামী শ্যামল ও তার পরিবারের সদস্যরা যৌতুকের টাকা ও স্বর্ণালংকার না পেয়ে অমানবিক নির্যাতন করে শ্বাসরোধে হত্যা করে নববধূ শিল্পী রানী দাসকে। এভাবেই অমানবিক ঘটনাটির বর্ণনা দিচ্ছিল নববধূ শিল্পী রানীর বড় ভাই শুভ চন্দ্র দাস।

সোমবার বিকালে পলাশ থানা পুলিশ নববধূ শিল্পী রানীর নিথর দেহটি স্বামীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। এই ঘটনায় সোমবার রাতে নববধূর ভাই শুভ চন্দ্র দাস বাদী হয়ে স্বামী শ্যামল ও শশুর বিমলকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলার পর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার সকালে অভিযুক্ত শ্যামল ও বিমলকে গ্রেপ্তার করে।

এ ব্যাপারে পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. নাসির উদ্দীন জানান, নিহত শিল্পী রানীর শরীরে বিভিন্ন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়েছে। মামলার পর অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত স্বামী শ্যামল ও শশুর বিমলকে গ্রেপ্তার করে বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবে নিহতের ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটন করা যাবে

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button