করোনায় শহীদ আট পুলিশ ও আনসার সদস্যের পরিবারকে ১৭ লক্ষ টাকা অনুদান দিলেন ডিএমপি কমিশনার।
স্টাফ রিপোর্ট-ঃ
করোনায় শহীদ আট পুলিশ ও আনসার সদস্যের পরিবারকে ১৭ লক্ষ টাকা অনুদান দিলেন ডিএমপি কমিশনার।
করোনা ভাইরাসে জীবন উৎসর্গ করা ঢাকা মেট্রোপলিটন পু্লিশের ৮ জন পুলিশ ও এক আনসার সদস্যের পরিবারপ্রতি দুই লক্ষ টাকা অনুদান দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম বিপিএম (বার)।
ডিএমপি কমিশনারের পক্ষে পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) রাজু আহম্মেদ ও আনসার সদস্য আব্দুল মজিদের পরিবারের হাতে আর্থিক অনুদান তুলে দেন ডিএমপির ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড ফোর্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঁঞা।
এছাড়াও অন্যান্য শহীদ পরিবারগুলোকে তাদের স্বস্ব জেলার পুলিশ সুপারগন ডিএমপি কমিশনারের অনুদান হস্তান্তর করেন। কুমিল্লা, লক্ষীপুর, জামালপুর, ময়মনসিংহ ও বরগুনা জেলার পুলিশ সুপারগন নিজ অফিসে ডিএমপি কমিশনারের পক্ষ থেকে আর্থিক অনুদান হস্তান্তর করেন।
ডিএমপির ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড ফোর্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঁঞা ডিএমপি নিউজকে বলেন, কোভিড-১৯ মহামারীর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে মাঠ পর্যায়ের অহর্নিশি পরিশ্রম করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ পুলিশের অকুতোভয় সদস্যরা। ফলে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে করোনায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন পুলিশ সদস্যরাই। দেশ ও জনগণের সুরক্ষা-সেবা নিশ্চিত করতে গিয়ে নিজের জীবনকে অকাতরে বিলিয়ে দিচ্ছেন পুলিশ বীর সদস্যরা। দেশ ও জাতীর জন্য তাঁদের এ ত্যাগ ইতোমধ্যে জনমনে স্থান করে নিয়েছে। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে পুলিশ সদস্যদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে ডিএমপি কমিশনার।
ডিএমপি নিউজের সাথে আলাপকালে ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (সদরদপ্তর ও প্রশাসন) মোঃ আনিসুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যদের মধ্যে একটা বৃহদাংশ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সদস্য। মঙ্গলবার (০২ জুন) পর্যন্ত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ১৭০৬ জন সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
তিনি জানান, জনগনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের আট জন সদস্য শাহাদাতবরণ করেছেন। তাঁরা হলেন কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) রাজু আহম্মেদ, পিওএম-পশ্চিম বিভাগের এসআই (সশস্ত্র) মোঃ সুলতানুল আরেফিন হিরা, পিওএম-দক্ষিণ বিভাগের এএসআই (সশস্ত্র) শ্রী রঘুনাথ রায়, পিওএম-দক্ষিণ বিভাগের এএসআই (সশস্ত্র) মোঃ আবদুল খালেক, পরিবহন বিভাগের নায়েক মোঃ আল মামুনুর রশীদ, ট্রাফিক উত্তর বিভাগের কনস্টবল মোঃ আশেক মাহমুদ, ট্রাফিক পূর্ব বিভাগের কনস্টবল মোঃ জালাল উদ্দিন খোকা, ওয়ারী বিভাগের কনস্টবল মোঃ জসিম উদ্দিন এবং গুলশান বিভাগের আনসার সদস্য আব্দুল মজিদ।
চলমান করোনা যুদ্ধে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশের ১৬ জন দেশপ্রেমিক ও অকুতোভয় সদস্য শাহাদাতবরণ করেছেন।
বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার) মহোদয়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও নির্দেশনায় করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের সুচিকিৎসা ও সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করায় করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন। করোনা থেকে সুস্থ হয়ে সম্মুখযোদ্ধা পুলিশ সদস্যগণ দেশের সেবায় পুনরায় আত্মনিয়োগ করছেন।
করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে একক পেশা হিসেবে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা। জনগণের সেবা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গিয়ে মঙ্গলবার (০২ জুন) পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ৫৩৩৩ জন গর্বিত সদস্য করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একটা বড় অংশ হচ্ছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সদস্য।