চুনা পাথর সংকটে ছাতক সিমেন্ট কারখানায় উৎপাদন বন্ধ
আব্দুছ ছালাম শাকিল, জেলা প্রতিনিধি-(সুনামগঞ্জ)
চুনা পাথর সংকটে ছাতক সিমেন্ট কারখানায় উৎপাদন বন্ধ
সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক সিমেন্ট কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে এক সপ্তাহ ধরে। বিসিআইসির এ কারখানায় উৎপাদন বন্ধ থাকার ফলে প্রতিদিন কয়েক লক্ষ টাকা গচ্চা দিতে হচ্ছে সরকারকে।
সিমেন্ট উৎপাদনের বিশেষ কাঁচামাল ভারত থেকে আমদানিকৃত স্বল্প মূল্যের চুনাপাথর দুই বছর ধরে অধিক মূল্যে খোলাবাজারে বিক্রি করার ফলে বর্তমানে চুনা পাথর সংকটেও রয়েছে কারখানাটি। এক সপ্তাহ ধরে কারখানায় উৎপাদন বন্ধ থাকার বিষয়ে কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার এফএম বারী জানান, চুনা পাথর সংকটের কারনেই বর্তমানে কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
এদিকে কারখানায় উৎপাদন বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের মধ্যেও অসন্তোষ বিরাজ করছে। বেকার হয়ে পড়েছেন কারখানার অস্থায়ী শতাধিক শ্রমিক। ১৯৩৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কারখানাটি বিসিআইসির একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান ছিলো। চরম দূর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে কারখানাটি ধীরে ধীরে একটি লোকসানি প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে। একাধিকবার ব্যালেন্সিং মর্ডানাইজেশন রেনোভেশন এন্ড এক্সপেনশনের (বিএমআরই) মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে কারখানাটি উৎপাদন সচল রাখা হয়েছিলো কিন্তু বিগত এক বছর ধরে কারখানায় একটি কিলনের মাধ্যমে উৎপাদন সচল রাখা হয়।
একটি কিলন কয়েক বছর আগে থেকেই বিকল হয়ে পড়ে। এ কিলনটি প্রায়ই বন্ধ হয়ে মাঝেমধ্যে উৎপাদন বন্ধ থাকে। কিলন সংস্কারের নামে কারখানার একটি অসাধু মহল একাধিক বার কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কারখানার একজন শ্রমিক জানান, প্রায় দেড় বছর পূর্বে সরকারি অনুদানের বিশ কোটি টাকা ব্যায়ে কিলনটি সংস্কার করা হয়। ক্যাথওয়েল কন্সট্রাকশন এ কাজটি করেছে। একটি সিন্ডিকেট এ কন্ট্রাকশনের নামে পুরনো কিলন ঘষামজা করেই বরাদ্দের টাকাগুলো হাতিয়ে নেয়।
তখন থেকেই কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম চলছে জোড়াতালি দিয়ে। এদিকে কারখানাটি ওয়েট প্রসেস থেকে ড্রাই প্রসেসে রুপান্তরের কাজ চলমান রয়েছে। কারখানার উৎপাদন প্রক্রিয়া চলমান রেখেই প্রায় ৯শত কোটি টাকা ব্যয়ের এ কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ার কথা থাকলেও ওয়েট প্রসেসের কারখানাটি প্রতিমাসে তিন চারবার কারখানার উৎপাদন বন্ধ থাকে। নতুন প্রজেক্টের কোটি কোটি টাকার চলমান কার্যক্রমেও রয়েছে ব্যাপক দূর্নীতির অভিযোগ।
মূল কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়নার নানজিং সি-হোপ নামে কোম্পানির কাছ থেকেও কারখানার কর্মকর্তা-সিবিএ সহ একটি সিন্ডিকেট কাজ বাগিয়ে নিয়ে কোটি কোটি টাকার দূর্নিতী করে যাচ্ছে। এনিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। ছাতক সিমেন্ট কারখানার মহাব্যবস্থাপক (উৎপাদন) অমল কৃষ্ণ বিশ্বাস জানান, চুনা পাথর স্বল্পতা ও পাম্পের কারিগরি সমস্যার কারণে কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এ সমস্যা জটিল নয় শীঘ্রই উৎপাদন শুরু হবে।