গাজীপুর সদর উপজেলায় তুরাগ নদীর পাড় ও কৃষি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়।
মোঃ আজাহার সরকার, জেলা প্রতিনিধি-(গাজীপুর)
গাজীপুর সদর উপজেলায় তুরাগ নদীর পাড় ও কৃষি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়।
গাজীপুর সদর উপজেলার মির্জাপুর তুরাগ নদীর পাড় ও কৃষি ভূমির মাটি কেটে নিচ্ছে অবৈধ মাটি ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় এলাকাবাসী জানান প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে নদীর পাড় ও ফসলী জমির মাটি সরবরাহ করে এখানকার ইটভাটা গুলোতে মাটি ব্যবসায়ীরা।
মির্জাপুর ভূমি অফিসের প্রায় এক কিলোমিটার পশ্চিমে তুরাগ নদীর পাড় হইতে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে নিচ্ছে স্থানীয় তুহিন নামে এক মাটি ব্যবসায়ী এছাড়া আলম ব্রিকস এর মালিক মোঃখোকন একই ভাবে নদীর পাড় কেটে মাটি নিচ্ছে ইটভাটায়। স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ বুলবুল শিকদার ও মোঃ সারোয়ার জানান নদীর সীমানা নির্দারিত না থাকায় জোত জমি দাবি করে নদীর পাড় কেটে মাটি বিক্রিয় করছে এখানকার মাটি ব্যবসায়ীরা।
এছাড়া কোনাবাড়ি বাঘিয়া হইতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স খান ট্রেডার্স নামে মালিক মোঃ আবুল হাসেম মাটি কেটে ইউনিক সিরামিকে সরবরাহ করছে। এছাড়াও কড্ডায় মেসার্স তাজ এন্ড সন্স নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মোঃ আব্বাস উদ্দিন খোকন নামে এক মাটি ব্যবসায়ী কৃষি জমিতে বিশাল আকৃতির গর্ত করে মাটি কেটে নিচ্ছে।
কড্ডা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মোঃআলমাছ ও খালেক জানান কড্ডা এলাকায় ইটভাটা বন্ধ হলেও বন্ধ হয়নি মাটি কাটা এখানকার বর্তমানে একমাত্র মাটি ব্যবসায়ী মোঃআব্বাাস উদ্দিন খোকন মাটির ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।এতেকরে এখানকার কৃষি জমি নষ্ট হচ্ছে।
একই ভাবে মির্জাপুর পিরোজ আলি হাটখোলা এলাকায় কৃষি ভূমি ও উচু ভূমির মাটি কেটে বিশাল আকৃতির দীঘি করে হাটখোলা ব্রিকস ফিল্ড গুলোতে মাটি সরবরাহ করা হচ্ছে।
তুরাগ নদী কালিয়াকৈর বংশী নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে সর্পিলাকার এই নদী ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। পাউবো এর তথ্য মতে উত্তর কেন্দ্রীয় অঞ্চল নদী নং ২৫ নদীটির দৈর্ঘ্য ৬২ কিঃমিঃ গড় প্রস্থ ৮২ মিটার এবং গড় গভীরতা ১৩.৫ মিটার। নদীটির অববাহিকার আয়তন ১ হাজার ২১ বর্গ কিঃমিঃ। সারা বছর নদীটি প্রবাহ থাকলেও জানুয়ারি-মার্চ মাসে পানি প্রবাহ কম থাক। এসময় অসাধু মাটি ব্যবসায়ীরা মেতে উঠে মাটি কাটার মহা উৎসবে।
গাজীপুর সদর উপজেলায় ৬৬ ইটভাটা রয়েছে আর এসব ইটভাটার মাটির জোগান পুরোটাই আসে নদীর তীরের মাটি ও কৃষি ভূমি থেকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে ফসল উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে মাটি প্রতিবছর নানা উন্নয়নমূলক কাজের ফলে ক্রমাগত ভাবে কমছে কৃষি জমি। দ্রুত বৃদ্ধির বিশাল জনগোষ্ঠীকে খাদ্য চাহিদা পূরণ করতে কৃষি ভূমি রক্ষার কোন বিকল্প নেই।এছাড়া পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় মাটির গুরুত্ব অপরিসীম।
এবিষয়ে মির্জাপুর ভূমি কর্মকর্তা মোঃআব্দল আলিম জানান কোথাও মাটি কাটছে খবর পেলে আমরা সেখানে যাচ্ছি। পর্যাপ্ত লোকবল না থাকার কারণে অনেক সময় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিলম্ব হয়। ইতিমধ্যে পিরোজালি বাঁধা দেয়া সত্বেও মাটি কাটা হচ্ছে এবিষয়ে সহকারী কমিশনার ভূমি বরাবর একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।