গাজীপুরের শ্রীপুরে কন্যা মাসুমা ইসলামের ব্যবসায়িক সফলতার গল্প।
মোঃ আজাহার সরকার, জেলা প্রতিনিধি-(গাজীপুর)
গাজীপুরের শ্রীপুরে কন্যা মাসুমা ইসলামের ব্যবসায়িক সফলতার গল্প।
গাজীপুরের শ্রীপুরে গোসিংগা ইউনিয়নের মাসুমা ইসলামের গল্পটা রূপকথার মতোই। সততা আর পরিশ্রম যে মানুষকে বিমুখ করে না, এর এক প্রমাণ তিনি। করোনাকালে আমার স্বামীর 4 Star হোটেলে চাকরিটা চলে যায়, হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ি আর এখন একজন সফল আচার ও ঘি ব্যবসায়ী আমদানিকারক।
মাসুমা ইসলাম এখন বগুড়া সদরের এক আলোচিত আচার ও ঘি ব্যবসায়ী খ্যাত প্রথম সারির ব্যবসায়ীদের একজন। তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম আরএম ফুড কর্নার। মাসুমা ইসলামের বাড়ি গাজীপুর জেলা শ্রীপুর উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের হায়াৎচারা গ্রামে। পিতার নাম আলতাফ মোড়ল মাতা বিলকিস মোড়ল। পরিবারের ২ ভাই ও ৩ বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। তাঁর জন্ম ১৯৯৪ সালে।
মাসুমা ইসলামের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল তাঁর সংগ্রাম আর সফলতার গল্প।
মাসুসা ইসলাম বলেন,আমার বিয়ে হয় বগুড়া সদরে আমার স্বামী রাজীব 4star নামে একটি হোটেলে চাকুরী করতেন। করোনাকালীন হঠাৎ করে আমার স্বামীর চাকরী চলে যায়।একদিকে পরিবারে আর্থিক টানাপোড়েনের নানা ছাপ,বিষণ্ন মন নিয়ে তখনই সিদ্ধান্ত নেই,নিজে কিছু করবো। তিন হাজার টাকা নিয়ে কাপড়ের ব্যবসা শুরু করি প্রথমেই লস হয়ে যায়।
পরিবারের একমাত্র উপার্জন কারী স্বামীর চাকুরী চলে যাওয়ায় ২ মেয়েকে নিয়ে হতাশায় পড়ে যায়। তারপর ছোট বোন মাহমুদা মুক্তার কাছে থেকে ১০ হাজার টাকা হাওলাত করে উই উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আচার এবং ঘি এর ব্যবসা শুরু করি এবং সফলতার মুখ দেখতে পাই। জলপাইয়ের আচার ৪০০ টাকা কেজি, রসুনের আচার ৬০০ টাকা কেজি, গরুর মাংসের আচার ১,০০০ টাকা কেজি এবং খাঁটি ঘি ১,২০০ টাকা কেজি করে বিক্রি শুরু করি। আল্লাহর রহমতে করোনাকালে যখন লকডাউন চলছিল সারা বাংলাদেশে তখন ৬ মাসে সেলস হয়েছে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, ৮ মাস পরে ২ লক্ষ ১৫ হাজার টাকার আচার এবং ঘি বিক্রি করি সুনামের সাথে।
মাসুমা ইসলাম জানান, কুরিয়ার সার্ভিস বা ডাকযোগে ঢাকা, গাজীপুর, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার,রাজশাহী, যশোর,খুলনা জেলা সহ ৪৫ টি জেলা এবং প্রতিটি উপজেলায় আমার দেশের বিভিন্ন জায়গার ক্রেতারা আচারের অর্ডার নিচ্ছেন এবং বিদেশে অর্ডার সাপ্লাই অর্ডার নিচ্ছে ইতিমধ্যেই আমেরিকা, সিঙ্গাপুর ও দুবাই আমার তৈরি করা আচার ও ঘি পার্সেল পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বললেন,আমার সহোযোগি কর্মচারীদের মূল্যায়ন করি বেশি। কারণ, তাঁদের হাত ধরেই আমার ব্যবসায়িক সফলতা।’ সব শেষে মাসুমা ইসলাম বললেন, ‘মেধা ও সততার পাশাপাশি কঠোর পরিশ্রম করলে কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারে না।’