রূপগঞ্জের উন্নয়ন চাই পাপ্পা গাজী।
গাজী গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরুণ শিল্প উদ্যোক্তা বিসিবি ও যমুনা ব্যাংকের পরিচালক গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা রূপগঞ্জবাসীর উদ্দেশে বলেছেন, আমি চাই আমার রূপগঞ্জ তথা নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন হোক। সেই লক্ষে আমার বাবা গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক কাজ করে যাচ্ছেন। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। আমাদের রূপগঞ্জ উপজেলায় ৯৮ ভাগ ঘরে গ্যাসের চুলা জ্বলে। এটা আমাদের মন্ত্রী মহোদয় নিজে উদ্যোগ নিয়ে করেছেন। উন্নয়ন আগ্রযাত্রাকে ঠিক রাখতে আমাদের যে কোনো মূল্যে করোনাভাইরাসকে দূর করতে হবে।
মঙ্গলবার (২৮ জুলাই ) রূপসী গাজী ভবনে দস্তগীর গাজী বীর প্রতীকের ঐচ্ছিক তহবিল থেকে রূপগঞ্জের দরিদ্র ৩২১ জনকে ৫০০০ টাকা করে অনুদানের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
রূপগঞ্জ নারী সমাজের উদ্দেশে পাপ্পা গাজী বলেন, ৯শ বছর আগে একজন দার্শনিককে একজন জিজ্ঞাস করেছিলো। আগামীতে সবচেয়ে উন্নয়নশীল জাতি কারা হবে। তখন উনি ভেবে উনি উত্তরটা দিয়েছিলেন যে জাতি যে সমাজ তার মহিলাদের সবচেয়ে বেশি সম্মান করে সে জাতি এগিয়ে যাবে। আমি ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি । আমাকে বাবা সব সময় বলেছে আমাকে সবসময় নারী শ্রমিক দিয়োও। আমি জিজ্ঞাস করেছিলাম কেনো। বলে দেখো একটা ছেলে যখন তার বেতনের টাকা পায় প্রথমে সে যায় পানের দোকানে সে পান খাবে সিগারেট খাবে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেবে তার পর বাসায় যাবে। আর একটা মেয়ে শ্রমিক যখন বেতনটা পাবে টাকাটা সে আস্তে করে তার পকেটের মধ্যে ডুকাবে বাসায় যাওয়ার সময় সন্তানের জন্য একটা ফল কিনে নিয়ে যাবে সে খাবে তার সন্তানকে খাওয়াবে । এই কারণে মাকে আগে জাগরণ করতে হবে। মা যদি জাগ্রত হয় সে জাতি জাগ্রত এমনিতেই হবে। আপনারা চেষ্টা করবেন আপনার ঘরে ঈদের দিন মজার মজার খাবার আছে রান্না করবেন আর সন্তান-স্বামী স্বজনদের মাঝে পরিবেশন করবেন। তাদেরকে ঘরের মধ্যে রাখার চেষ্টা করবেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়ন শুরু হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে । আমাদের প্রধানমন্ত্রী মহিলা। আমাদের স্পিকার মহিলা, আমাদের শিক্ষামন্ত্রী মহিলা, আমাদের ইউএনও মহোদয় উনিও মহিলা এবং উনার আগেও যিনি ইউএনও ছিলেন উনিও মহিলা ছিলেন।
রূপগঞ্জের নারী জাগরণের কথা উল্লেখ করে তরুণ এই শিল্প উদ্যোক্তা বলেন, আমি হলফ করে আমাদের নুসরাত আপাকে বলতে চাই। বাংলাদেশের যে কোনো জায়গার চেয়ে আমাদের রূপগঞ্জ উপজেলার মহিলা আওয়ামীলীগ বলেন যুবমহিলালীগ বলেন সবচেয়ে শক্তিশালী । এর পেছনে আমার মা তারাব পৌর মেয়র হাছিনা গাজীর অবদান রয়েছে। উনার নেতৃত্বে আজ প্রত্যেকটা ওয়াডে প্রতিটা গ্রামে আমাদের মহিলা কর্মী আছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্নেহে আমার বাবা সবকিছুই পেয়েছেন। স্বাধীনতা পদক পেয়েছেন । আল্লার কাছের উনার একটাই আফসোস আল্লাহ উনাকে ২ টা ছেলে দিয়েছেন উনার কোনো মেয়ে নাই। একারণেই উনি মেয়েদের নিজের সন্তানের মতো ভালোবাসেন। এমন কপাল আমারও কোনো মেয়ে নাই। আমার দুই ছেলে। তিনি কর্মীদের জানান আল্লাহ মনে হয় আপনাদের সাথে আমাদের ভাই বোনের সম্পক করার জন্যই এই কাজটা করেছে। নারী সমাজ যতবেশি এগিয়ে যাবে ততবেশি দেশ উন্নত হবে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মন্ত্রীপুত্র বলেন, অনেকে বলতে পারেন ভাই আপনে পিপিই এবং মাস্ক পরে শরীর এমন ডেকে এসেছেন কে? এর কারণ হচ্ছে দুইটা। প্রথম কারণ আমি একজন বাবা। আমি বাইরে যাব । করোনা ভাইরাস নিয়ে ঘরে ফিরব আমার সন্তান করোনায় আক্রান্ত হবে সেটা আমি চাই না। আমি যখন পিপিই এবং মাস্ক পরে এসেছি আপনারাও পরেন। আপনাদেরও শিশু সন্তান আছে স্বামী স্ত্রী আছে। করোনায় শিশুরাও মৃত্যুবরণ করছে । দুই নম্বর কারণ আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসি। তাই আমি মাস্ক এবং পিপিই পরেছি। প্রধানমন্ত্রী সবসময় চিন্তা করছেন করোনা থেকে কিভাবে দেশকে মুক্ত করা যায়। আমরা যদি মাস্ক না পরি দেশকে করোনা থেকে মুক্ত করতে পারব না।
প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে গোলাম মর্তুজা পাপ্পা বলেন, বাংলাদেশ ডিজিটাল হয়েছে। করোনায় দেশবাসী এর সুফল ভোগ করছে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সবার সাথে যোগাযোগ হচ্ছে। জানুয়ারি আমার এক বন্ধু এসেছিলো বিদেশ থেকে তিনি আমাকে বলেছিলেন এটা হলো কেমনে। আমি তাকে বলেছিলাম এটার নাম শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ। তার সুযোগ্য সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় এটা করেছেন। উন্নয়ন আগ্রযাত্রাকে ঠিক রাখতে আমাদের যে কোনো মূল্যে করোনাভাইরাসকে দূর করতে হবে। আর দূর করার একটাই ওষুধ মাস্ক পরুন এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। করোনার কোনো ওষুধ নাই।
রূপগঞ্জ উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা এবং পরিষদের চেয়ারম্যানের উদ্দেশে তিনি বলেন, সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা কিভাবে সবাইকে মাস্ক পরার ব্যবস্থ করতে পারি। সেই ব্যবস্থা করতে হবে। আমি আসার সময় দেখলাম গাড়িতে মানুষের মুখে মাস্ক নেই।
পাপ্পা গাজী বলেন, ঈদুল আযহা আসছে । এটা আমাদের সবার আনন্দের দিন। আমরা আনন্দ করব কিন্তু সচেতনভাবে। আমাদের সন্তানদের ঘরের মধ্যে রাখার চেষ্টা করব। আমি সত্যিই ভয়ে আছি। কারণ আমাদের রূপগঞ্জ বলেন আর সারা বাংলাদেশ বলেন করোনার ঘারটা নিচের দিকে। কিন্তু ঈদের দিনে যদি আমরা অসচেতন হই তাহলে করোনাভাইরাস বাড়বে। আমরা করোনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারব না। যতদিন টিকা আবিস্কার না হয় ততদিন আপনারা সচেতন থাকেন। মাস্ক পরেন, আপনাদের সন্তানদের নিরাপদ রাখেন। সন্তানরা আমাদের ভবিষ্যত মানে বাংলাদেশের ভবিষ্যত।
এসময় রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শাহজাহান ভুইয়া, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ নুসরাত জাহান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দা ফেরদৌসী আলম নীলা, রূপগঞ্জ উপজেলা মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শীলা রানী পাল, যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক সেলিনা আক্তার রিতা, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ফরিদ ভুইয়া মাছুম, তারাব পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি আওলাদ হোসেন বাদল, সাধারণ সম্পাদক মনির খান সুমেল অনেকে উপস্থিত ছিলেন।