বৃষ্টি, বন্যা আর লকডাউনে দোয়ারায় ঘরবন্দি মানুষ
মোঃ আলা উদ্দিন, দোয়ারা উপজেলা প্রতিনিধি-(সুনামগঞ্জ)
বৃষ্টি, বন্যা আর লকডাউনে দোয়ারায় ঘরবন্দি মানুষ
দোয়ারাবাজারে লকডাউনের সঙ্গে বৃষ্টি আর বন্যার কারণে সকাল থেকেই ঘরবন্দি মানুষ। তাছাড়া সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় বিধিনিষেধের দ্বিতীয় দিনে দোয়ারাবাজারের রাস্তাঘাট অনেকটাই ফাঁকা। বেশিরভাগ সড়কে অটো রিকশাসহ অল্প কিছু যানবাহন চলছে। তবে ব্যতিক্রমও রয়েছে কোথাও কোথাও দোয়ারাবাজারে বিকেলের চিত্র দেখে মনে হচ্ছে লোকজন লকডাউন মানছেই না।
শুক্রবার (২ জুলাই) দোয়ারাবাজারে সকাল থেকে বৃষ্টির থাকায় কিছু দোকান খোলা পাওয়া গেলেও লোকজনের উপস্থিতি তুলনামূলক কম দেখা গেছে। উপজেলার বাংলাবাজারে মেইন গলিগুলোতে দোকানপাট বন্ধ থাকলেও ভেতরের গলিগুলোতে বেশকিছু দোকানপাট খোলা দেখা গেছে। সাধারণ মানুষের উপস্থিতি তুলনামূলক কমেছে।
তবে উপজেলার সীমান্ত অঞ্চলের বাজারগুলোতে বিকাল ৫ টার পরে মানুষের ভিড় বেড়েছে। তবে খেটে-খাওয়া কয়েকজন তাদের অসুবিধার কথা তুলে ধরলেও অন্যদিকে কেউ কেউ অকারণে হাট-বাজারে ঘুরাঘুরি করতেও দেখা গেছে।সরেজমিন পরিদর্শনকালে ও খুঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকালের দিকে বৃষ্টিপাত হওয়া হাটবাজার, রাস্তাঘাটে জনসমাগম তেমন লক্ষ্য করা যায়নি।
উপজেলার বিভিন্ন বাজারের অধিকাংশ দোকানপাটও বন্ধ ছিল। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে যেন সবকিছু স্বাভাবিক হতে শুরু করে। রাস্তাঘাটে হাট বাজারে মানুষজনের উপস্থিতি অনেকটাই বেড়ে যায়। করোনাভাইরাস নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে যেন কোনো চিন্তা নেই। এমনকি কেউ কেউ লকডাউন কেমন হচ্ছে তা দেখতে হাট-বাজারে ঘুরাঘুরি করতে দেখা গেছে। সড়কসমূহে যানবাহন তেমন চলাচল করতে দেখা যায়নি। সকালবেলা তবে বিকেল বেলার চিত্র ছিল ভিন্ন।
ছাতক-দোয়ারাবাজার সড়কে সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল ছিল স্বাভাবিক। নিষেজ্ঞার বাহিরে থাকায় স্থানীয় সড়ক সমূহে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করতে দেখা গেছে। মাঝে-মধ্যে সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করেছে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাজারগুলোতে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা হাটবাজার থেকে চলে যাওয়ার পরই হাটবাজারে মানুষের সমাগম বেড়ে যায়। খুলতে শুরু করে বাজারের সব দোকানপাট।
এদিকে চলতি লকডাউন কার্যকর করতে স্থানীয় প্রশাসন তৎপর রয়েছে। সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্নস্থান ও সড়কে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাংশু কুমার সিংহের নেতৃত্বে পুলিশ ও সেনাবাহিনী টহলের পাশাপাশি তারা লোকজনদের সরকারের নির্দেশ মানার তাগিদ প্রদান করেছেন।
এসময় সাথে ছিলেন দোয়ারাবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ দেবদুলাল ধর, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. আতিয়ার রহমান প্রমুখ।
এদিকে- উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। উপজেলার বাংলাবাজার, কলাউড়া, চৌধুরীপাড়া, হকনগর, বোগলাবাজার, মহব্বতপুর বাজারসহ বিভিন্ন মোড়ের দোকানে অভিযান চালিয়ে দোকান বন্ধ করার পাশাপাশি আড্ডারত লোকজন ঘরে পাঠানো হয়। এছাড়া চলমান বিধিনিষেধ অমান্য করায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৩টি মামলায় ২ হাজার ৭শত টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
দোয়ারাবাজার থানা অফিসার ইনচার্জ দেবদুলাল ধর জানান, সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি মানুষকে সচেতন করতে। প্রয়োজনে আমরা আরও কঠোর হবো।
দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাংশু কুমার সিংহ জানান, করোনা মোকাবিলায় চলমান লকডাউনে সকলকে বিধিনিষেধ পালন করতে আমরা নির্দেশ প্রধান করে যাচ্ছি। অন্যথায়, অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।