বিল্ডার্স কোম্পানীর বালু ভরাট কাজের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে দুই গ্রুপের তুমুল সংঘর্ষে আহত অর্ধশত নিহত১
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
বিল্ডার্স কোম্পানীর বালু ভরাট কাজের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে দুই গ্রুপের তুমুল সংঘর্ষে আহত অর্ধশত নিহত১
ননারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে নয়াগাঁও গ্রামে অবস্থিত চিটাগাল বিল্ডার্স কোম্পানীর বালু ভরাট কাজের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে আলাউদ্দিন-বরকত মোল্লা দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে মো. সমর আলী(৪২) নামের একজন নিহত হয়েছে। এসময় আরো আহত হন মো.জহিরুল ইসলাম(৫০) মো. খোরশেদ (৪৫), সাইফুল ইসলাম(৩৫), বিপ্লব (২৬) ও মো. সুমন (৩৩)সহ কমপক্ষে ৩০ জন।
শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার সকালে ফের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের আহত হন কমপক্ষে অর্ধশত। নিহত মো. সমর আলী নয়াগাঁও গ্রামের মৃত ছয়ফল আলীর ছেলে এবং জহিরুল ইসলাম একই গ্রামের মৃত আলমাছ মিয়ার ছেলে। শুক্রবার সন্ধ্যার পর আলাউদ্দিন ও তার ছেলে ইয়ানবীসহ বরকত মোল্লার সমর্থক মুদি দোকানদার সাদেকুর রহমানের পেটে রড ঢুকিয়ে দেয়ার পর থেকে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয় বলে গ্রামবাসী জানিয়েছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন এবং এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে সাকিল (২২) ও হান্নান নামের দুইজন আটক করা হয় বলে সোনারগাঁ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) খন্দকার মো. তবিদুর রহমান গনমাধ্যম কর্মীদের জানান।
সরজমিনে ঘুরে জানাগেছে, উপজেলার পিরোজপুর ইউপির নয়াগাঁও গ্রামে অবস্থিত চিটাগাং বিল্ডার্স কোম্পানীর বালু ভরাট কাজ করেছিল আলাউদ্দিন ও বরকত মোল্লা। ওই বালু ভরাট কাজের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে আলাউদ্দিন ও বরকত মোল্লা’র মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এ দ্বন্দ্বের জের ধরে বুধবার দুপুরে বরকত মোল্লা’র সমর্থক মোশারফ হোসেন ও দোকানদার সাদেক গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে দ্রুত গতীতে মালবাহী ট্রাক চলাতে বাধা দেয় এবং চালককে গালামন্দ করে। পরবর্তীতে এঘটনায় নিজেদের মধ্যে মিমাংসা কথা থাকলেও শুক্রবার সন্ধ্যার পর আলাউদ্দিন ও তার ছেলে ইয়ানবীর নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জনের একটি দল লোহার রড, লাঠিসোটা নিয়ে মুদি দোকানদার সাদেকুর রহমান উপর প্রথমে হামলা চালায়।
এসময় সাদেকুরের পেটে রড ঢুকে দিলে নাড়ীভুড়ি বের হয়ে গেলে স্থানীয় লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। দোকানদার সাদেক আহতের ঘটনার খবর পেয়ে বরকত মোল্লা’র সমর্থকরা আলাউদ্দিন সমর্থকদের একটি বাড়িতে হামলা চালায়। ফের রাত ৮ টার দিকে বরকত মোল্লার সমর্থকদের কমপক্ষে ১৫-২০টি বাড়িতে ঢুকে আসবাবপত্র ভাংচর ও নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার লুটপাট করে আলাউদ্দিন সমর্থকের লোকজন।
শুক্রবার রাতে হামলা ও বাড়িঘর ভাংচুর লুটপাটে বাধা দিতে গিয়ে ৭ নারীসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হন। আহত দোকানদার সাদেক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধিন রয়েছে। এ ঘটনায় দুই গ্রুপের মধ্যে টানটান উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণ রাখতে রাতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। শনিবার সকালে পুলিশের উপস্থিতে বরকত মোল্লা’র সমর্থকদের বাড়িতে ফের হামলা চালায় আলাউদ্দিন তার ছেলে ইয়ানবী, দেলোয়ার, একই এলাকার মৃত আলাক্কু মিয়ার ছেলে বাদল, আব্দুল আলী, করিম, গিয়াসউদ্দিন, শাহজাহান, দ্বীন ইসলাম ও ফয়সাল মিয়াসহ তার বাহিনী।
এসময় হামলাকারিদের বাধা দিতে গিয়ে বরকত মোল্লা’র সমর্থক মো. জজ মিয়ার ভাই মৃত শের আলীর ছেলে খোরশেদ খোরশেদ(৪৫), মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে সাইফুল (৩৫), মৃত আলমাছ মিয়ার ছেলে জহির(৪৫), নজরুল ইসলামের ছেলে বিপ্লব(২৬) ও আলেক মিয়ার ছেলে সুমন(৩৩)সহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়। এসময় দুইগ্রুপের সংঘর্ষের মধ্যে আটকে মো. সমর আলী গুরুত্বর আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এসময় তাকে উদ্ধার করে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। আলাউদ্দিন বাহিনীর হামলার শিকার জহিরুল ইসলাম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।
নয়াগাঁও গ্রামের মো. জজ মিয়া জানান, আমি পরিবার নিয়ে চিটাংরোড এলাকায় বসবাস করি। সংঘর্ষে আমার ভাই মো. খোরশেদ (৪৫) আবস্থা আশঙ্কাজনক। গুরুত্বর আহত অবস্থায় ভর্তি হয়েছেন সাইফুল ইসলাম(৩৫), বিপ্লব (২৬) ও মো. সুমন (৩৩)ও সাবেকুর রহমান আইসিইউতে।
সোনারগাঁ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) খন্দকার মো. তবিদুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, ভাংচুর- লুটপাট ও আহত সংখ্যা বেশ কয়েকজন। সংঘর্ষে এ পর্যন্ত একজনের মৃত্যু হয়েছে।এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।