কপিলমুনিতে কোটি কোটি টাকার সরকারী জায়গা অবৈধ দখল
এ কে আজাদ, পাইকগাছা উপজেলা প্রতিনিধি-(খুলনা)
কপিলমুনিতে কোটি কোটি টাকার সরকারী জায়গা অবৈধ দখল
অবশেষে টনক নড়লো উপজেলা প্রশাসনের। মঙ্গলবার দুপুরে খুলনার কপিলমুনি শহরের বাইপাস সড়কের পাশে একটি অবৈধ স্থাপনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকীর নের্তৃত্বে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
দেশের প্রথম শ্রেনীর বাণিজ্যিক মোকাম কপিলমুনি উপশহরের বিভিন্ন স্পটে কোটি কোটি টাকা মুল্যের সরকারী জায়গা ভূমিগ্রাসীরা দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করেই চলেছে। প্রায় প্রতিদিনই শহরের কোথাও না কোথাও সরকারী জায়গা দখল হচ্ছে।
সরকারী এসব মুল্যবান জায়গা জবরদখলের মহোৎসব দীর্ঘদিন যাবৎ চললেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম উদাসিনতায় ভূমিগ্রাসীদের মধ্যে ভূমি দখলের প্রবণতা বেড়েই চলেছে। দখলবাজ ও অবৈধ স্থাপনার বিরুদ্ধে স্থানীয় পত্র পত্রিকায় বেশ কিছু দিন যাবৎ তথ্যবহুল সংবাদ ধারাবাহিক প্রকাশিত হলেও ভূমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তবে মঙ্গলবার জনৈকা মনজিলা খাতুনের একটা স্থাপনা ভেঙ্গে দেওয়ায় কিছুটা সন্তোষ প্রকাশ করেন এলাকাবাসী। যদিও ঐ স্থাপনা নিয়ে বৈধতার দাবিতে মনজিলার অভিযোগ রয়েছে। তবে শুধু ঐ একটি স্থাপনা নয়। শহরের এই বাইপাস সড়কের পূর্ব পাশ দিয়ে কালিবাড়ী থেকে শ্রীরামপুর মালোপাড়া পর্যন্ত প্রায় আধাকিলোমিটার জুড়ে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে।
সরকারী জায়গা দখল করে সংকুচিত করা হয়েছে কপিলমুনির ঐতিহ্যবাহী ধান্যচত্বর (বিনোদচত্বর), বালিরমাঠ (সাবেক নুন্দর পুকুর), সিনেমা হলের সম্মুখভাগের পুরা জায়গা। দখল হয়েছে কপিলমুনি পাবলিক স্টেডিয়ামের প্রায় দেড় একরের অধিক কোটি কোটি টাকা মূল্যের সরকারী জায়গা। সংশ্লিষ্ট বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে এসব জায়গা করায়াত্ব করে সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে নানা স্থাপনা।
শহরের প্রাণ কেন্দ্রের সরকারী সিংহভাগ এসব জায়গা দখল হওয়ার পর অবশিষ্ট কিছু জায়গা ইতোমধ্যে দখলের পথে রয়েছে। চলতি মাসের প্রথম দিকে সিনেমা হল রোডের পশ্চিমে বাইপাস সড়কের মোড়ে তালা উপজেলার গঙ্গারামপুর গ্রামের তালেব গাজী গভীর রাতে ১০ জন শ্রমিক নিয়ে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা মুল্যের সরকারী জায়গায় স্থাপনা নির্মাণ করে দখল করেছেন। গত সোমবার হরিঢালী ইউনিয়নের নোয়াকাটি গ্রামের মোস্তাম মোড়ল লঞ্চঘাট এলাকায় বাইপাস সড়ক থেকে বাজারে প্রবেশ পথের সিংহভাগ জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করছেন।
যদিও স্থানীয় তহশিলদারের হস্তক্ষেপে নির্মাণ কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে। তবে জানাগেছে, এসব অবৈধ দখলদারদের পেছনে রয়েছে একটি শক্তিশালী চক্র। মূলত এরাই সংশ্লিষ্ট অফিস সহ দখলদারদের নিয়ন্ত্রণ করছে। শুধু মনজিলা খাতুন নয়, সব দখলবাজদের অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়ে কপিলমুনি শহরের স্রষ্টা রায় সাহেবের ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা, বাজার সম্প্রসারণ সহ কপিলমুনি শহরের শ্রীবৃদ্ধির জন্য স্থানীয় এমপি, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।