‘নেশাখোর বাদল’ যবিপ্রবি,র কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী।
আবদুল্লাহ আল মামুন, ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধিঃ
‘নেশাখোর বাদল’ যবিপ্রবি,র কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আচরণবিধি লঙ্ঘণের দায়ে কয়েকবারের বহিষ্কৃত বহুল আলোচিত, সমালোচিত বিতর্কিত নিরাপত্তা প্রহরী বদিউজ্জামান বাদল এবার বিশ্ব বিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন।
আবার তিনি ‘স্বরূপে ফেরত আসছেন’ এমন প্রচার চালিয়ে ভোটারদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে জিম্মি করার চেষ্টা করছেন। ‘নেশাখোর বাদল’ তিনি নির্বাচিত হলে যবিপ্রবির বর্তমান শিক্ষা ও গবেষণাবান্ধব পরিবেশ বিনষ্ট হবে বলে আশঙ্কা সবার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘনিষ্ট কয়েকটি সূত্র জানায়, ২০১০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে কলগার্ল এনে অনৈতিক কাজ করায় তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।ওই সময় এ ঘটনা জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্র-পত্রিকায় ফলাও করে প্রচার হয়।
পরবর্তীতে প্রশাসনের কতিপয় ব্যক্তির যোগসাজশে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদেও সহায়তায় আবার সে চাকরি ফেরত পেয়ে অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন।
এরপর ২০১৪ সালের ১৭ জুন তিনি যশোর শহর থেকে ফেনসিডিলসহ হাতেনাতে পুলিশের হাতে আটক হন। অকাট্য প্রমাণ থাকায় পুলিশ তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
বহুল আলোচিত বদিউজ্জামান বাদল ধীরে ধীরে বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়ে উঠেন মূর্তিমান আতঙ্ক। তাঁর হাতে ২০১৪ সালের ২৪ ফেব্রয়ারি লাঞ্ছিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জামাল হোসেন এবং রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব।
তাঁর হাতে প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারি, নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুস সাকিব, সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) হায়াতুজ্জামান (মুকুল), সহকারী রেজিস্ট্রার রানা সিংহ প্রমুখ কর্মকর্তা বিভিন্ন সময়ে লাঞ্ছিতের শিকার হন। এ ছাড়া অগণিত শিক্ষক-কর্মচারী তার দ্বারা লাঞ্ছিত হয়েছে।
সময়ের পরিক্রমায় বর্তমান রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব কর্মচারী সমিতির নির্বাচন উপলক্ষ্যে সেই বদিউজ্জামান বাদলের পক্ষ নিয়ে ‘নোংরা’ প্রচারণায় নেমেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি-বিরোধী গোষ্ঠীকে প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে তিনি মদদ দিচ্ছেন। বর্তমানে তাঁর অবস্থান বিশ্ব বিদ্যালয়ে ‘টক অব দ্য ক্যাম্পাসে’ পরিণত হয়েছে।
বদিউজ্জামান বাদলের কর্মকান্ডে অতিষ্ট হয়ে শিক্ষার্থীরা ২০১৪ সালে তাঁর বিরুদ্ধে বিরাট আন্দোলন গড়ে তোলে। তাকে সাপের মতো পিটিয়ে মৃতভেবে ফেলে রেখে যায়। পরবর্তীতে তাকে উদ্ধার করে যশোরের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সুস্থ হয়ে তিনি আবার শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন। তিনি গায়ে মানব বিষ্টা লাগিয়ে শিক্ষার্থীদের সামনে হাজির হন। এরপর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ‘গু বাদল’ নামে পরিচিতি লাভ করেন।
২০১৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের একজন সদস্যের গাড়িতে লাথি ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে হামলা করায় তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়। পরবর্তীতে উচ্চ আদালতের নির্দেশে গত জুন মাসে তিনি চাকরি ফিরে পান। চাকরি ফিরেই পেয়েই গত ২০ জুলাই তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামরুল হাসানের অফিস কক্ষ ভাঙচুর চালান। পরবর্তীতে পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় তার নামে মামলাও দায়ের করা হয়। তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়।
বহুল আলোচিত বদিউজ্জামান বাদল সাময়িক বরখাস্ত থাকা অবস্থায়ই কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করছেন। তিনি নির্বাচিত হলে নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে
এদিকে ২০১০-১৭ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ বাণিজ্যের মূলহোতা ‘শিন শাহীন’ কর্মচারী সমিতির নির্বাচন উপলক্ষ্যে ষড়যন্ত্রের নতুন জাল বিছিয়েছেন। কোনো পদে প্রার্থী না হয়েই তিনি বাদলকে জেতাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এই ‘শিন শাহীন’ বিশ্ববিদ্যালয়ে জি¦নের বাদশা নামে পরিচিত। যিনি জাল টাকা মেশিন ক্রয়ের সময় ৪২ লাখ টাকা খোয়ান বলে লোকমুখে প্রচলিত আছে। এ ছাড়াও একজন বয়স্ক ব্যক্তিকে নিজের পিতা সাজিয়ে একজন কাজের মহিলাকে বিয়ে করেছেন বলেও অভিযোগ আছে।