কক্সবাজারে প্রতিদিন বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ জেলার ৮ উপজেলায় প্রতিদিন পাওয়া যাচ্ছে করোনা রোগী। সর্বশেষ গতকাল রোববার পর্যন্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একজন এনজিও কর্মকর্তা ও ৪ রোহিঙ্গার করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। তবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা সংক্রমণ নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার আহবান জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
এতদিন নিরাপদ ছিল রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ৩৪টি ক্যাম্প। এবার সেখানেও হানা দিয়েছে প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস। এতে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত উখিয়া-টেকনাফে উদ্বেগ ও আতঙ্ক বাড়ছেই। তবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ ও আক্রান্তদের চিকিৎসার ব্যপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রস্তুতির কমতি নেই বলেই মনে হয়। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কিভাবে প্রাণঘাতি করোনা সংক্রমণ ঘটেছে তা নিয়ে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে হৈচৈ। লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের ভিড়ে আক্রান্ত এক এনজিও কর্মী ও ৪ রোহিঙ্গার সংস্পর্শে কারা এসেছে তাদের শনাক্তকরণ নিয়েও সংশয় প্রকাশ করছেন অনেকেই। এ ব্যাপারে যথাযত প্রদেক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ আশেপাশে ব্যাপকহারে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় লোকজন।
এ বিষয়ে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন (আরআরআরসি) এর হেলথ কোঅর্ডিনেটর ডা. তোহা ভুঁইয়া জানান, আক্রান্ত রোহিঙ্গাদের সংস্পর্শ কারা বা কত সংখ্যক রোহিঙ্গা এসেছে তাদের সনাক্তকরণ কাজ করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। তিনি জানান, এ পর্যন্ত ৫০জনের অধিক রোহিঙ্গার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে যাদের রিপোর্ট পজেটিভ আসে তাদেরকে রোহিঙ্গাদের জন্য প্রস্তুতকৃত পৃথক আইসোলেশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা সংক্রমনে ক্যাম্পের রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের মাঝে উদ্বেগ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও আতঙ্কিত না হওয়ার আহবান জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা মাহবুবুর রহমান জানান, ইতোমধ্যে জাতিসংঘের অধীনে উখিয়ায় নির্মিত ২ শত বেডের করোনা আইসোলেশন হাসপাতালটির প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এটি আগামী ২১ মে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। এছাড়াও ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের করোনা চিকিৎসার জন্য ১ হাজার ৯ শত বেডের ১১ টি পৃথক আইসোলেশন হাসপাতাল নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পথে। ইতোমধ্যে ৮ শত বেডের হাসপাতাল নির্মান কাজ সমাপ্ত হয়েছে বলে তিনি জানান। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গত চার দিনে একজন এনজিও কর্মী এবং ৪জন রোহিঙ্গা নাগরিক রোগীর করোনা শনাক্ত হয়। আক্রান্তদের আইসোলেশন সেন্টারে নেয়া হয়েছে এবং আক্রান্ত এলাকার ১০ সহস্রাধিক রোহিঙ্গাকে লকডাউনে নেয়া হয়েছে।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, করোনো সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রশাসন সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্যও পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আক্রান্ত এলাকা লকডাউন করে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ সংক্রমন প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ নিয়ে তিনি আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানান।