জাতীয়

হিন্দুদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা ধর্মীয় ও জাতিগত বিদ্বেষপূর্ণ বিভিন্ন উষ্কানীমূলক বক্তব্য প্রচারকারীদের বিচার দাবীতে মানব বন্ধন।

রনজিত কুমার পাল (বাবু) স্টাফ রিপোর্টার-ঃ

হিন্দুদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা ধর্মীয় ও জাতিগত বিদ্বেষপূর্ণ বিভিন্ন উষ্কানীমূলক বক্তব্য প্রচারকারীদের বিচার দাবীতে মানব বন্ধন।

হিন্দুদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা ধর্মীয় ও জাতিগত বিদ্বেষপূর্ণ বিভিন্ন উষ্কানীমূলক বক্তব্য প্রচারকারীদের বিচার দাবীতে ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাব এর সামনে মানব বন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নেতৃবৃন্দ।
কক্সবাজারের বাহারছড়া পুলিশের ইনচার্জ এসআই লিয়াকত কর্তৃক মেজর সিনহা হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ওসি প্রদীপ সহ দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পুলিশ কর্মকর্তা সহ উর্দ্ধতন সরকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ইউটিউব সহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে দেশদ্রোহী, ভারতের চর, র’ এর এজেন্ট ইত্যাদী মিথ্যা ধর্মীয় ও জাতিগত বিদ্বেষপূর্ণ বিভিন্ন উষ্কানীমূলক বক্তব্য লাগামহীনভাবে প্রচার করে সংখ্যালঘুু সম্প্রদায়ের জনজীবন অতিষ্ট করে তোলার প্রতিবাদে ও অপপ্রচারকারীদের শাস্তির দাবীতে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট অদ্য ২৮ আগষ্ট শুক্রবার সকাল ১১ টায় ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাব সহ সারা দেশের সকল জেলা ও উপজেলায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচীর পালন করে।

বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের কেন্দ্রীয় কমিটির অ্যাডভোকেট বিধান বিহারী গোস্বামীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নির্বাহী সভাপতি অ্যাডঃ দ্বীনবন্ধু রায়, সহ সভাপতি প্রদীপ পাল, মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, যুগ্ম মহাসচিব সাংবাদিক সুজন দে, হিন্দু মহিলা মহাজোটের সভাপতি প্রীতিলতা বিশ্বাস, সহ সভাপতি কাকলী নাগ, সাধারণ সম্পাদক মুক্তা বিশ্বাস, সাংগঠণিক সম্পাদক সাগরিকা মন্ডল, প্রচার সম্পাদক স্বপ্না রাণী দাস, লক্ষী রাণী, অঞ্জনা চক্রবর্তী, হিন্দু স্বেচ্ছা সেবক মহাজোটের সভাপতি সঞ্জয় শীল, সহ সভাপতি বিষ্ণ চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল ঘোষ, ঢাকা জেলা হিন্দু মহাজোটের সভাপতি অ্যাডঃ উজ্জ্বল কুমার মন্ডল, সাধারণ সম্পাদক গোপাল পাল, হিন্দু মহাজোটের ঢাকা মহানগর দক্ষিন এর সভাপতি ডি.কে সমির, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল ঘোষ, হিন্দু যুব মহাজোটের সভাপতি কিশোর কুমার বর্মন, নির্বাহী সভাপতি প্রদীপ শঙ্কর, প্রধান সমন্বয়কারী প্রশান্ত হালদার, সহ সভাপতি গৌতম সরকার, সাংগঠণিক সম্পাদক প্রবীর সরদার, মহানগরের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় দেবনাথ, ছাত্র মহাজোটের সভাপতি সাজেন কৃষ্ণ বল, সাধারণ সম্পাদক সজিব কুন্ডু তপু, সিঃ সহ সভাপতি প্রণব হালদার প্রমূখ।

মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ প্রামাণিক বলেন কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানার বাহারছড়া পুলিশের ইনচার্জ এসআই লিয়াকত কর্তৃক মেজর সিনহা হত্যার ঘটনায় এক শ্রেনীর দুষ্ট চক্র ওসি প্রদীপ কুমার দাসকে দায়ী করে লাগামহীনভাবে দেশদ্রোহী, ভারতের চর, র’এর এজেন্ট ইত্যাদী মিথ্যা ধর্মীয় ও জাতিগত বিদ্বেষপূর্ণ ও বিভিন্ন উষ্কানীমূলক বক্তব্য ইউটিউব সহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করে চলেছে।

শুধু তাই নয় এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সকল পুলিশ কর্মকর্তা সহ উর্দ্ধতন সরকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা বিদ্বেষমুলক বক্তব্য প্রচার করে সমগ্র সংখ্যলঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সাধারন জনগণকে ক্ষেপিয়ে তুলেছে। ফলে সারা দেশে মারাত্মক জাতিগত বিদ্বেষ সৃষ্টি হয়েছে।

ওসি প্রদীপ অপরাধী হলে তিনি অবশ্যই শাস্তি পাবেন। দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পুলিশ কর্মকর্তা সহ সকল কর্মকর্তা দেশপ্রেমিক। তারা নিজ যোগ্যতা ও মেধার বলে বিভিন্ন পদে আসীন হয়ে দেশ সেবায় আপোষহীনভাবে ভূমিকা রাখছেন। তবে একটি কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই মুসলিম সম্প্রদায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে আমরা যেমনটা সহযোগীতা পাই, হিন্দু পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তেমন কোন বিশেষ সহযোগীতা পাই না।

সেকারনে আমরা কোন হিন্দু পুলিশ কর্মকর্তার পক্ষে এই মানববন্ধন করছি না। আমরা মানববন্ধন করছি এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যারা সামাজিক ও জাতিগত বিদ্বেষ তৈরী করছে তাদের বিরুদ্ধে। অসাম্প্রদায়িক শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশকে যারা অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। মধ্যযুগের মুসলিম শাসন আমলেও এদেশের হিন্দু সম্প্রদায় বিভিন্ন উচ্চপদে আসীন থেকে বিশ্বস্ততার সাথে দেশের সেবা করেছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধেও হিন্দু সম্প্রদায়ের কর্মকর্তাগণ অধিক নির্যানের স্বীকার হয়েছেন।

হিন্দু সমাজ শান্তি প্রিয়। অথচ একটি চক্র ফেসবুকে ও ইউটিউবে উষ্কানীমূলক বক্তব্য দিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি ও মুসলিম সমাজের মুখোমুখী দাঁড় করাচ্ছে। সামাজিক অস্থিরতা এই পর্যায়ে যে কোন মুহুর্তে দেশে একটি অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। ইতোমধ্যে এর কুফল সমগ্র সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর পড়তে শুরু করেছে। ফলে কারণে অকারণে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর বিদ্বেষমূলক আচরনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। একই সঙ্গে মেজর সিনহার সহযোগী শিপ্রা দেবনাথ নানা উস্কানীমূলক বক্তব্য দিয়ে সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করছে।

তিনি মিথ্যা ও ধর্মীয় জাতিগত বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচারকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তি বিধানের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্থক্ষেপ কামনা করেন। যুগ্ম মহাসচিব সুজন দে বলেন বাংলাদেশে হিন্দু মুসলিমের শান্তিপূর্ণ সহ অবস্থানের ঐতিহ্য হাজার বছরের। অথচ একটি চক্র এই শান্তিপূর্ণ সহঅবস্থান নষ্ট করার চেষ্টা চলছে। বরিষ্ঠ সহ সভাপতি প্রদীপ পাল বলেন বাংলাদেশে সরকারী হিন্দু চাকুরীজীবী মাত্র ৩%। ৬৪ জেলায় মাত্র ৩ জন জেলা প্রশাসক, ৮২ জন সচিবের মধ্যে মাত্র ৬ জন হিন্দু।

সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পদে কোন হিন্দু নেই। সরকারী ব্যাংকের সর্বোচ্চ পদে কোন হিন্দু নেই। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে মাত্র ১ জন হিন্দু। তবুও তার নিয়োগকালে একটি চক্র তার বিরুদ্ধে নানা কটুক্তি ও সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করে তার নিয়োগে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। একটি অপপ্রচার চালাচ্ছে দেশের ৫১২টি থানার ওসি

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button