দেশে চলমান বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশও নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাচ্ছে। এরই মধ্যে ৩১ জেলার নিমাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে, সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ। এমন অবস্থায় দেশের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে। করোনার পাশাপাশি আম্পান ও বন্যার সম্মিলিত আক্রমণে দিশেহারা হচ্ছে দেশের প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষক। পরিস্থিতি মোকাবেলায় এই বন্যা পরিস্থিতিকে ‘জাতীয় দুর্যোগ’ ঘোষণা ও বন্যা দুর্গতদের জন্য বিনামূল্যে ৬ মাস খাদ্য সহায়তা প্রদানের দাবি করা হয়েছে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি) আজ বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই দাবি জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনাভাইরাসের প্রকোপ আর আম্ফানের পর কৃষক যখন ধাতস্ত হওয়ার সুযোগই পাননি, তার মধ্যেই শুরু হয় আগাম বন্যা। এরই মধ্যে কমপক্ষে ২০ জেলার সবজি ও ধান জলাবদ্ধতার শিকার হয়েছে। সবমিলিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৮ লাখ হেক্টর জমির ফসল। সঙ্কটে আমন ধানের বীজতলা। বলা হচ্ছে, বন্যায় আমন ধানের চাষ ব্যাহত হলে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা সঙ্কটের মুখে পড়বে। এই বন্যায় গ্রামীণ জনপদে দারিদ্রতার হার বাড়বে, দেখা দেবে চরম খাদ্য সঙ্কট।
এরই মধ্যে ত্রাণের সঠিক বণ্টন না হওয়ায় এরই মধ্যে প্লাবিত এলাকাগুলোতে খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় জরুরী ভিত্তিতে বন্যা দুর্গতদের মাঝে আগামী ৬ মাস বিনামূল্যে খাদ্য সহায়তা প্রদান সরকারিভাবে বন্যা পরিস্থিতিকে ‘জাতীয় দুর্যোগ’ হিসেবে ঘোষণা করা প্রয়োজন।
এছাড়াও খানি’র পক্ষ থেকে বন্যাকবলিত এলাকায় কৃষকদের সব ধরনের কৃষিঋণ, এনজিও ঋণ মওকুফ করা অথবা সুবিধাজনক সময়ে পরিশোধ করার সুযোগ দেওয়া, জরুরী ভিত্তিতে বন্যাকবলিত কৃষকদের জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করে নগদ অর্থ প্রদান, বিনামূল্যে বীজ সবরাহ ও বীজতলা তৈরিতে ট্রে সববরাহ, সরকারিভাবে খামারিদের গবাদি পশুর জন্য আলাদা আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন ও গো-খাদ্যের সঙ্কট নিরসন, বন্যা পরিস্থিতি বিবেচনায় এলাভিত্তিক ত্রাণ সামগ্রী বন্টনের ব্যবস্থা, বন্যার আগাম প্রস্তুতির জন্য মনিটরিং কমিটি গঠনের করার দাবি জানানো হয়।