যশোরে সরকারি রাস্তায় বাঁশের বেড়া, দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর।
আবদুল্লাহ আল মামুন, বিভাগীয় প্রতিনিধি-(খুলনা)
যশোরে সরকারি রাস্তায় বাঁশের বেড়া, দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর।
সদর উপজেলায় সরকারি রাস্তার বাঁশের বেড়া
স্থানীয় এলাকাবাসীর চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
দুই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারসহ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে শতাধিক পরিবার।
এছাড়া চিত্রা নদীর পাড়ে গ্রামের সরকারি কবরস্থানে যাওয়ার পথটি বন্ধ হয়ে গেছে।
উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়নের খাজুরা গ্রামে প্রবেশের একমাত্র প্রায় ৬ ফিটের রাস্তায় এই বেড়া দেওয়া হয়েছে।
গ্রামবাসী জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তাসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করলেও রাস্তা দখলমুক্ত হয়নি।
এতে গ্রামবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।গ্রামবাসী জানায়, তৎকালীন ১৯৪৬ সালে ভারতে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার সময় তারা এদেশে আসে।
যশোর শহরের বিভিন্নস্থানে সরকারি সম্পত্তিতে থাকতে শুরু করে। পরবর্তীতে পূর্ব পাকিস্থান সরকার জরুরী ভিত্তিতে জমি অধিগ্রহণ করে বাড়ীঘর নির্মাণ করে তাদের পূর্ণবাসন করেন।
তখন থেকেই তারা বরাদ্দকৃত জমিতে খাজুরা গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছে।
গ্রামটিতে প্রবেশের একমাত্র প্রায় ৬ ফিটের একটি কাঁচা রাস্তা রয়েছে। চিত্রা নদীর পাড়ে সরকারি কবরস্থান যেতে ওই রাস্তাটি ব্যবহার করা হয়।
শতবর্ষী রাস্তাটিতে হঠাৎ করেই গত তিন সপ্তাহ ধরে বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
গ্রামের আব্দুল খালেক মোল্যা সরকারি রাস্তাটি নিজের দাবি করে জোরপূর্বক এ কাজটি করেছেন। এতে গ্রামবাসী বাধা দেওয়ায় বেড়া প্রদানকারী ও তার ছেলে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি দিচ্ছেন।
স্থানীয় একটি স্বার্থন্বেষী রাজনৈতিক মহল এ কাজে ইন্ধন জোগাচ্ছেন বলে জানান ভূক্তভোগীরা
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, খাজুরা গ্রামে তিনটি কলোনী রয়েছে। এখানে প্রায় এক সহস্রাধিক লোকের বসবাস। তাদের চলাচলের একমাত্র রাস্তায় বাঁশের শক্ত বেড়া দিয়ে বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
ফলে ওই গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মোশার্রেফ ও সোহরাব হোসেন একেবারেই গৃহবন্ধি হয়ে পড়েছেন।
এছাড়া কলোনীপাড়ার শতাধিক পরিবার রাস্তাটি ব্যবহার করতে না পারায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে।
তারা পাশর্বর্তী তেঁতুলতলা বাজার, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়াসহ দৈনন্দিন কাজে পর্যন্ত যেতে পারছেন না। রাস্তাটি বন্ধ করায় কেউ মারা গেলে গ্রামের সরকারি কবরস্থানে লাশ নিয়ে যাওয়ারও কোন উপায় নেই
রাস্তায় বেড়া প্রদানকারী আব্দুল খালেক মোল্যা জানান, ‘জমিটি আমার নামে রেকর্ড রয়েছে। আমি কারও চলাচলেও পথ বন্ধ করিনি।
আমার কাছে রেকর্ডের কাগজপত্র আছে’।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি ও আমার ছেলে কাউকে কোন হুমকি-ধামকি দিইনি। কিছু লোকজন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে।
’সদরের লেবুতলা ইউপি চেয়ারম্যান আলিমুজ্জামান মিলন জানান, ‘ওই রাস্তায় গ্রামের সিংহভাগ লোকের চলাচল। এছাড়া নদীর পাড়ে একটি সরকারি কবরস্থান রয়েছে।
সেখানে যেতে ওই রাস্তার বিকল্প নেই। এ কারণে রাস্তাটির প্রয়োজন রয়েছে।
এ ব্যাপারে গ্রামবাসী আমার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে। উভয় পক্ষকে নিয়ে মিমাংসার জন্য চেষ্টা করছি।’
শনিবার জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ‘আমি যশোরে সদ্য যোগদান করেছি। বিষয়টি আমার জানা ছিল না। সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তাকে এখনি বিষয়টি জানানো হচ্ছে।
তিনি এটি গুরুত্বের সাথে দেখবেন।’সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাকির হোসেন জানান, ডিসি স্যার কিছুক্ষন আগে বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। দ্রুত এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।